অবতক খবর,২৮শে নভেম্বর: আজ সকাল থেকেই নতুন পৌরসভা ভবনের সামনে দলে দলে পৌর সাফাই কর্মচারীরা হাজির হয়ে গিয়েছে। প্রায় সাড়ে চারশ পৌর সাফাই কর্মচারী যাদের মধ্যে মহিলা রয়েছেন প্রায় ১৩০ জন। সমবেতভাবে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। তাদের দাবি কি? তারা কেউ ২০ বছর,কেউ ২২ বছর,কেউ ১৬ বছর আবার কেউ ১২ বছর ধরে নগর পরিষেবার কাজে চালিয়ে যাচ্ছেন। সোজা কথায় তারা নগরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কাজে হাত লাগিয়েছেন, নিষ্কাশন পদ্ধতিতে কাজ করেছেন। অথচ দীর্ঘকাল ধরে তাদের উপর পৌর বঞ্চনা চলছে বলে তারা মনে করেন।

এর আগে যে পৌর সাফাই কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে তাতে এদের কোন আমল দেওয়া হয়নি। স্থানীয়দের কোন চাকরির ব্যবস্থা করা হয়নি। বিষয়টি তা নয়, তাদের মূল উদ্দেশ্য যে এজেন্সির নামে এই নিয়োগ পদ্ধতি হয়েছে, এটা পৌর কর্তৃপক্ষ দাবি করলেও দেখা গেছে যে পৌর কাউন্সিলরদের আত্মীয়স্বজনেরা সেই তালিকায় স্থান পেয়েছে। দীর্ঘ বছর ধরে যারা কাজ করছেন তাদের কারোরই নাম সেই তালিকায় ওঠেনি। অর্থাৎ একটা দুর্নীতি,একটা স্বজনপোষণ চলেছে বলে তারা মনে করেন।

এ নিয়ে আগেও অবতক সংবাদ করেছে এবং স্থানীয় কাগজগুলিতেও সেই সংবাদ উঠে এসেছে। তাতে অভিযোগ উঠেছে কাউন্সিলের বউ পর্যন্ত চাকরি পেয়ে গেছেন, পৌর প্রধানের গাড়ির চালক পর্যন্ত চাকরি পেয়ে গেছেন। প্রচুর টাকার লেনদেন হয়েছে,এমন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

এবারও আরেকটি নিয়োগ পদ্ধতি চলছে। আজ বোর্ড মিটিং হওয়ার কথা, সেখানে প্যানেল পাশ হবে বলে জানা গেছে। ‌এখন প্রশ্ন, যদি পরীক্ষা নিয়ে থাকে এজেন্সি তাহলে কাদের কাদের নেওয়া হবে সেটাতো এজেন্সিই ঠিক করে দিয়েছে, তাহলে পাল্টা পৌর বোর্ডের অধীনে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে? এই নিয়ে এই অস্থায়ী পৌর কর্মচারীদের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

আজকে তাদের অভিযোগ তারা দীর্ঘদিন ধরে এই কাজে যুক্ত, এবারের প্যানেলে তাদের যদি নাম না থাকে তাহলে তারা সেই নিয়ম মানবেন না এবং লাগাতার ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন। দরকার হলে তারা রাত্রি পর্যন্ত অবস্থান করবেন। সেখানে শুয়ে থাকবেন ধর্না দেবেন, এমনই পরিকল্পনা তারা নিয়েছেন।

আমরা সকালে গিয়ে দেখি সেখানে একটা উত্তেজক অবস্থা,কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ। তাদের একটি মূল অভিযোগ তারা তৃণমূলের সৈনিক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। তারা চাইছেন এ ব্যাপারে তাঁর হস্তক্ষেপ হোক।

এভাবে স্থানীয় মানুষরা কেন বঞ্চিত হবেন? এ প্রসঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআই সি অশোক মন্ডল,তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন আগের কিছু নিয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি জানেন। তবে কি জানেন সেটা তিনি খোলাখুলি বলেননি। তবে তিনি বলেন যে, আজকের সাফাই কাজ যে বন্ধ আছে সেটা তিনি জানতেন না। তিনি বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে পৌর কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। তিনি বলছেন, এই আন্দোলনকারী যারা আছেন তাদের নেতারা যদি বোর্ডের সঙ্গে অর্থাৎ পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তবে এর সমাধান সম্ভব। এদিকে আন্দোলনরত পৌর কর্মচারীরা তারা পাশ থেকে চিৎকার করে বলত থাকেন যে অশোকবাবু মিথ্যা কথা বলছেন। এসব আলোচনা আমরা অনেক আগেই করেছি।

এখনো পর্যন্ত এই অবস্থা চলছে, ধর্মঘট চলছে। এই ধর্মঘট কতদূর যায় আমরা তার অপেক্ষায় আছি। প্রতিমুহূর্তে আমরা এই ধর্মঘটের আপডেট আপনাদের দেব। এই আন্দোলনে নেতৃত্বতে ছিলেন রামু বাসফোর ও লালবাবু বাসফোর ।