অবতক খবর,৫ মার্চঃ কাঁচরাপাড়ার সেইসব ডাকসাইতে তৃণমূল নেতারা যারা বামফ্রন্ট শাসনের বিরোধিতা করে লড়াইয়ে নেমেছিল, কাউন্সিলর হয়েছিল, এলাকায় এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেছিল তাদের টর্চের আলো জ্বালিয়েও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রাক্তন পৌর প্রধান সুদামা রায়ের এখন তৃণমূল দলে কোন গুরুত্বই নেই মনে হয়।

তিনি সকালে উঠে এই ডাঙ্গাপাড়ায় বাড়ির বাইরে বসে কাগজ পড়েন কিন্তু পার্টির কোন কর্মকাণ্ডে তাকে আর দেখা যায় না। প্রাক্তন উপ পৌরপ্রধান হয়েছিলেন, কোনদিন তৃণমূলের আঞ্চলিক মন্ত্রণাদাতা বলে পরিচিত কূটনীতিবি সুভাষ চক্রবর্তী, তিনি এখন শুধু তার ফার্মেসিতে যাতায়াত করেন, দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে যান, পার্টির কথা ভাবেন না।

বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে ঘুরে দেখা যায় এক নম্বরের ওয়ার্ডের গুলু-রমেশ বাবুদের সেই দাপট নেই। দুই নম্বর ওয়ার্ডে রঞ্জিত চৌধুরীর বলে কেউ ছিলেন কিনা তৃণমূল নেতা তা বোঝাই যায় না। তিন নম্বর ওয়ার্ডের যে নেতা একদিন কাউন্সিলর হয়েছিলেন সেই রমেন মল্লিকের কোন খোঁজই নেই। চার নম্বর ওয়ার্ডে কখনো নির্দল,কখনো তৃণমূল সেই নেতার কোন পাত্তাই নেই খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের সান্ত্বনা বিশ্বাস যিনি কাউন্সিলর হয়েছিলেন, তিনি এখন শহীদ নগরের বাড়িতেই বসে থাকছেন।

৬ নম্বর ওয়ার্ডের একসময়ের কংগ্রেসের দাপুটে নেতা বিমল দত্ত যিনি বিধায়ক পদে লড়াই করেছিলেন , পরে তৃণমূল বনে যান তার কোন কার্যকারিতা দেখা যাচ্ছে না।

৭ নম্বর ওয়ার্ডের সঞ্জীব সাহা, নামাজাদা কালিবাবু কি করছেন কেউ বুঝতে পারছেন না।

৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাণীব্রত মণ্ডল, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের রাজা রায়, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রভা বিশ্বাস তাদের নাম তো এলাকা থেকে উঠেই গেছে। ১৫ নম্বর ওয়ার্ড যারা দাপট দেখাতেন তাদের সেই রমরমা নেই।

দুই বরিষ্ঠ কাউন্সিলর এবং তৃণমূল নেতা বাক্যালাপে বলছেন, আরে আমি তো প্রয়োজন হলে বিহারে চলে যাব। আপনি অসুবিধা হলে কাঁচরাপাড়া ছেড়ে যাবেন কোথায়? আপনার তো আর বিহারে বাসা নেই!

২২ নম্বর ওয়ার্ডের এক নেতা ববন সিং বলছেন, আগে এলাকায় মান সম্মান ছিল, এখন রাজনীতি করতে গেলে অপমানের সম্ভাবনা আছে। তাই বাড়িতে বসে গেছি।

দীর্ঘ পোড়খাওয়া এক নেতা অনেক আফসোসে বলছেন, এখনকার দলীয় মাতব্বরেরা কি জানে আমরা কিভাবে রাজনীতি করেছি, কিভাবে সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়েছি, কিভাবে দল তৈরি করেছি? দলেই আর আমাদের গুরুত্ব নেই।

সেই বিখ্যাত খোকন বণিকের

নাম আর শোনাই যাচ্ছে না। তিনি তিনবার দলীয় কর্মীদের হাতে যেভাবে নাস্তানাবুদ হয়েছেন, তার স্ত্রী কাউন্সিলর হওয়া সত্ত্বেও বোধ করি তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে দলীয় কর্মকাণ্ডে যোগই দিচ্ছেন না।

দশ নম্বর ওয়ার্ডের এক নেতা অশোক পাল সরাসরি সাক্ষাৎকারে বলেই দিয়েছেন, এখন নেতারা যা শুরু করেছেন দিদির হাওয়াই চটি পর্যন্ত বিক্রি করে দিচ্ছেন, দিদি কি আর খালি পায়ে হাঁটতে পারবেন?

কাঁচরাপাড়া মা মাটি মানুষের দলে এখন এখন সুজিত দাস আলোরানি সরকার এরা কোন ভূমিকায় আছেন কেউ বুঝতেই পারছে না। এইভাবে কাঁচরাপাড়ার তৃণমূল দল চলছে।