অবতক খবর,6 মে :: আজ কাঁচরাপাড়া পৌরসভার বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় যে,সময়কালীন মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার কারণে তিন পৌর কর্মীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। কাঞ্চন নাথ, পার্থপ্রতিম মন্ডল এবং অভীক দাসের চুক্তিভিত্তিক সময়সীমা উত্তীর্ণ হবার কারণে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

সূত্রের খবর,গত সিআইসি মিটিংয়ে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল তাতে চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান উভয়ই উপস্থিত ছিলেন। আজ বোর্ড মিটিংয়ে তা পাশ করিয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে সূত্রের খবর,এই যে এর সঙ্গে পৌরসভার আর্থিক দুর্নীতি জড়িত। কোটি কোটি টাকার ঘাপলা হয়েছে পৌরসভার কোষাগারে। এই ঘাপলার সঙ্গে জড়িত আগেকার পৌরসভার পরিচালকেরা। বিশেষ করে বিদায়ী চেয়ারম্যান সুদামা রায়ের নাম উঠে আসছে এ বিষয়ে। সূত্রের খবর,যা আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে ওই সময়ে এদের মধ্যে কাঞ্চন নাথের গাড়ি পৌরসভায় ভাড়া খাটত। তাতে যে পেট্রোলের খরচ যা দেখানো হয়েছে,অন্ততপক্ষে তার চারগুণ বেশি খরচ দেখিয়ে আর্থিক নয়ছয় করা হয়েছে। প্রতিমাসে ৩-৪ লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছে এই দুর্নীতি চক্র। এই নিয়ে পৌর কর্মচারী কর্মী মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্রের খবর,কাঞ্চন নাথের কোন নিয়োগপত্রই ছিল না। কম্পিউটারের কার্যে তাকে ডেকে এনে পরবর্তীতে ক্রমে ক্রমে তাকে অ্যাকাউন্ট্যান্ট বিভাগ বসিয়ে দেওয়া হয়। তার শাসনাধীনে চলে যায় ঐ বিভাগটি। সূত্রে জানা গেছে এর পেছনে বড় কোন হাত না থাকলে এই ধরনের নিয়োগ সম্ভব নয়। আরো জানা গেছে,যদি বিশেষ তদন্ত করা হয় তাহলে এমন অনেক আর্থিক দুর্নীতি বেরিয়ে আসবে। আজ বোর্ড মিটিংয়ে বোর্ড সদস্যরা জানতে চান যে,তারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত অথচ এদের সেই সময়ে বাদ দেওয়া হল না কেন? এ বিষয়ে জানতে চান অন্যতম কাউন্সিলর খোকন তালুকদার। তখন তাঁকে জানানো হয় যে,এদের মেয়াদ তো উত্তীর্ণ হয়েছেই ১৫ সালে। শুধু তাই নয় এরা আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত। ‌ সুতরাং এদের ব্যাপারে কোন ফৌজদারি ব্যবস্থা নিতে হবে আর নচেৎ এদের কর্মচ্যুত করতে হবে। পরে তাদের কর্মী পদ থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সূত্রের আরো খবর,অভীক দাস,পার্থপ্রতিম মন্ডল এই দুজনের চাকরির সীমাকাল ২০১৫ সালেই শেষ হয়ে যায়। তা সত্ত্বেও তারা এই দীর্ঘ ৭ বছর ধরে কিভাবে চাকরিতে বহাল রয়েছেন এবং অদ্ভুতভাবে তাদের যে মাসিক বেতন ৮ হাজার টাকা থেকে প্রায় ২৫ হাজার টাকায় উত্তীর্ণ রহয়েছে। ফলত,এই ৭ বছরে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা পৌর কোষাগার থেকে ব্যয়িত হয়ে গেছে। এই টাকার যে অবৈধভাবে ব্যয় হল,তার জন্য দায়ী কে? পৌর কোষাগারকে যে দুর্বল করে দেওয়া হল তার কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্রে আরো জানা গেছে,কাঞ্চন নাথের দুইয়ের বেশি গাড়ি ভাড়া খাটত এবং সে বর্তমানে যে মাসিক ব্যয় দেখাচ্ছে তার প্রায় ৪ গুণ টাকা অর্থাৎ সাড়ে তিন লাখ থেকে ৪ লাখ টাকা মাসিক বছরের পর বছর তুলে নিয়েছে। আরো জানা যাচ্ছে যে, এখনো এমন কর্মচারী রয়েছে যাদের অবসরকালীন সময় তো চলে গিয়েছেই,এক্সটেনশনাল পিরিয়ডও চলে গিয়েছে। তবুও তারা চাকরিতে বহাল রয়েছেন। আরো খবর দশ বছর ধরে অ্যাকাউন্ট্যান্ট পদটি শূন্য পড়ে রয়েছে সে পদটি কোনো কোনো কর্মচারী ঠেকা দিয়ে চালিয়ে গেছেন এতদিন।

ফলত দেখা যাচ্ছে যে,কাঁচরাপাড়া পৌরসভা দীর্ঘকাল একটা আর্থিক দুর্নীতির মধ্যে চলেছে। বর্তমান চেয়ারম্যান কমল অধিকারী এ বিষয়ে ব্যাপক নজরদারি আরম্ভ করেছেন। পৌর কর্মচারীদের ধারণা তিনি যদি এভাবে তার কর্মপদ্ধতি চালিয়ে যেতে পারেন,তবে পশ্চিমবঙ্গে কাঁচরাপাড়া পৌরসভা একটি ব্যতিক্রমী পৌরসভা হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে এবং এই রাজ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করবে।