অবতক খবর,২৬ ডিসেম্বর: চুরির রেশ যেন আতঙ্কের ছায়া হয়ে দাঁড়িয়েছে কাঁচরাপাড়া তথা বীজপুরে। গতকাল রাতে কাঁচরাপাড়া ৭ নং ওয়ার্ড কালিনগর রোড যোগাযোগ সংঘ সংলগ্ন একটি বাড়িতে ঘটে গেল দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা।

সর্বপ্রথম বাড়ির লোহার দরজার তালা ভেঙে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে চোর। এরপর চোর কাঠের দরজা ভেঙে ফেলে। দরজা ভেঙে আলমারির তালা ভেঙে সোনা গয়না লুট করে। শুধু তাই নয়, বক্স খাট পর্যন্ত খুলে সর্বস্ব লুট করে নিয়ে চম্পট দেয় চোর। কিন্তু এখন প্রশ্ন, একেই তো শীতের রাত, চারিদিক নিস্তব্ধ থাকে, তা সত্ত্বেও এতকিছু ভাঙার একটুও শব্দ পেলেন না তিনতলায় বাসরত বাড়ির মালিক এবং পাড়াপড়শিরা? প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।

যে দুটি ঘর থেকে চুরি হয়েছে সেই ঘরে ভাড়া থাকেন মনীষা মন্ডল নামে ভাড়াটিয়া। তিনি ওই বাড়ির নীচতলায় একাই থাকেন। স্বামী,ছেলে কর্মসূত্রে বাইরে এবং তার একমাত্র কন্যার বিবাহ হয়েছে চাকদায়। বাড়ির তিন তলায় থাকেন বাড়ির মালিক তনুশ্রী সাহা।

ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা গেছে, গতকাল দুপুরেই আত্মীয়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন মনীষা দেবী। আর বড়দিনের রাতে ঘটে গেল এই দুঃসাহসিক চুরি। অথচ টের পেল না কাকপক্ষীও! শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এটাই সত্যি।

এরপর আজ সকাল বেলা দশটা নাগাদ নিচে নেমে বাড়ির মালিকের ছোট মেয়ে দেখতে পায় গোটা দরজা ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে এবং এলোমেলো হয়ে আছে গোটা ঘর।

বাড়ির মালিক তনুশ্রী শাহা দাবি করছেন, আমার ভাড়াটিয়া তালা মেরে গতকাল আর বাড়িতে আসেননি। সেই বিষয়টাও আমরা জানতাম না। সকালবেলা উঠে জানতে পারি এত কিছু কান্ড ঘটে গেছে। আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি আমরাও।

তবে পড়শীদের কথা না হয় ছেড়েই দিলাম, কিন্তু তিনতলায় বাড়ির মালিক থাকা সত্ত্বেও নিচের তলায় এত তান্ডব হয়ে গেল তারা কি ঘুণাক্ষরেও টের পাননি? মানতে নারাজ ভাড়াটিয়া এবং প্রতিবেশীরা।

তাদের বক্তব্য ভাড়াটিয়ার উপর রীতিমত নজর রাখা হয়েছিল, খুব ভালোভাবে হোমওয়ার্ক করার পরেই চোর এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। এটা কোনো আকস্মিক ঘটনা হতে পারে না।

অন্যদিকে ঘটনাস্থলে খবর পেয়ে পৌঁছায় বীজপুর থানার পুলিশ। এখন তারা বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছেন।

পুলিশ তদন্ত তো করছে। শোনা যাচ্ছে বেশ কয়েকজন চোর-ডাকাত ধরাও পড়েছে। কিন্তু চুরির সংখ্যা তো কমছে না বীজপুরে!

এদিকে বীজপুরে এই চুরির ঘটনা মুখ্যমন্ত্রী শুনেই প্রশাসনিক রদবদলের কথা বলেছেন ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মাকে। আর তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই রদবদল হয়েও গেছে।

তাতে মনে হয় চোরেদের সাহস আরো একটু বেড়ে গেছে।

সুতরাং বীজপুরবাসী এইসব ঘটনা দেখে আতঙ্কগ্রস্থ না হয়ে, সতর্ক হোন। নিজেদের ঘরবাড়ি,দোকানের সুরক্ষা নিজেরাই করুন। অর্থাৎ প্রশাসনের ভরসায় না থেকে রাতের ঘুম ছুটিয়ে নিজেদের বাড়ি,দোকান এবার থেকে নিজেরাই পাহারা দিন।