অবতক খবর,২৯ মার্চ: রাজনীতি শব্দটিকে ভাঙলে হয় রাজ এবং নীতি। নীতি আদর্শ তো এই রাজনীতি থেকে উঠেই গেছে, রয়ে গেছে শুধু রাজ। কর্মীরা এদিক ওদিক করলে তাদের মার খেতে হয়, অপদস্ত হতে হয় অথবা নেতারা বিভিন্ন‌ কেস দিয়ে দেয়। আর সাংবাদিকরা প্রকৃত সত্য তুলে ধরলে তাদেরকে বলা হয় দালাল। কিন্তু এই সবকিছুর মূলেই থাকে নেতারা। অথচ তারাই দিনের শেষে হয়ে যায় দুধে ধোয়া। বর্তমানে এই তো রাজনীতির অবস্থা। কিছুদিন আগেও আমরা দেখলাম একই সঙ্গে সব নেতারা বসেছিলেন। যেখানে একসাথে দেখা যায় পার্থ ভৌমিক,অর্জুন সিংকে। হাসি ঠাট্টা, নতুন প্রকল্প উদ্বোধন ইত্যাদি সবই হয়। আর আজ দেখা যাচ্ছে দুজনেই দুজনের প্রতিদ্বন্দ্বী। দুজনে একে অপরের প্রতি বলছেন যে, তারা হারবেন। এমন কি দুজন দুজনকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতেও ছাড়ছেন না। এতে মুশকিলে পড়েছেন কর্মীরা। এক সময়ে যে সকল কর্মীরা অর্জুনের পক্ষে ছিলেন তারা হয়তো এখন দল পরিবর্তন করতে চাইছেন না, তৃণমূলকেই ভালোবাসেন, কিন্তু তারা এখন ধন্দে পড়ে গেছেন। কিছুদিন আগেও আমরা দেখেছিলাম কাঁচরাপাড়ায় সুবোধ অধিকারী হোক কিংবা সোমনাথ শ্যাম,তারা দুজনেই কাঁচরাপাড়ার এক অনুষ্ঠানে এসে একের পর এক অভিযোগ তুলেছিলেন বীজপুরের প্রাক্তন বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় এবং তাঁর পিতা মুকুল রায় সহ অর্জুন সিংকে নিয়ে। শুভ্রাংশু রায়কে নিয়ে অনেক কথাই তারা বলে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে শুভ্রাংশু রায়ও দেখিয়ে দিয়েছিলেন যে ২০১৯-এ যখন তাণ্ডব হয়েছিল তখন বীজপুরের বর্তমান বিধায়ক তিনিও বিজেপিতেই ছিলেন। ফের সুবোধ অধিকারীও পাল্টা দিলেন,পাল্টা শুভ্রাংশু রায়ও দিলেন। এই হল লড়াই তাদের মধ্যে। পরবর্তীতে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে পার্থ ভৌমিকের নাম যখন প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হলো তখন পার্থ ভৌমিক বলতে শুরু করলেন অর্জুনের বিরুদ্ধে।

পরবর্তীতে অর্জুন সিং বিজেপিতে গিয়ে বিজেপির প্রার্থী হলেন ব্যারাকপুর লোকসভা থেকে। এখন প্রশ্ন, তবে এই অর্জুন পন্থীদের ভবিষ্যত কি? মানুষ এমনই প্রশ্ন করেছেন আমাদের কাছে।

জানা যাচ্ছে অর্জুনপন্থী কিছু কর্মীরা খুব শিগগিরই বিজেপিতে যোগদান করবেন। অন্যদিকে কিছু নেতা কর্মীদের ব্যারাকপুরের নেতারা ললিপপ দিচ্ছেন। যেমন প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যা নমিতা দাসগুপ্ত, তাঁকে ললিপপ দেওয়া হয়েছিল যে তাঁকে চাকরি দেওয়া হবে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তিনি সেই চাকরির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। পরবর্তীতে দেখা গেল শুভ্রাংশু রায়কে। যে শুভ্রাংশু রায়কে নিয়ে সুবোধ অধিকারী কটাক্ষ করতে ছাড়েন নি, পাল্টা শুভ্রাংশু রায়ও কটাক্ষ করেছেন সুবোধ অধিকারীকে। শেষমেষ দেখা গেল পার্থ ভৌমিক এবং সুবোধ অধিকারী চলে গেলেন শুভ্রাংশু রায়ের বাড়িতে। সেখানে তাঁরা শুভ্রাংশু রায়ের সাথে দেখা করলেন। এইতো অবস্থা! কর্মীরা করলে দোষ আর নেতারা করলে নির্দোষ।

এদিকে শুভ্রাংশু রায়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেঠিয়া পঞ্চায়েত,পলাশী-মাঝিপাড়া এবং শিবদাসপুরের অবজারভার হিসেবে। এমনই ঘোষণা করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে শুভ্রাংশু রায় এত বছর ধরে কোন দায়িত্ব পেলেন না, তিনি নিজের বীজপুরেই বেরোতে পারেন না, পার্থ ভৌমিক এতদিনে একাধিক অনুষ্ঠানে এসেছেন কিন্তু সেই অনুষ্ঠানে শুভ্রাংশু রায়কে দেখা যায়না, অথচ অদ্ভুত ভাবে নির্বাচনের আগেই তিনি দায়িত্ব পেয়ে গেলেন। আগামী দিনে শুভ্রাংশু রায় কোন পথে হাঁটবেন সেটাও অবতক তুলে ধরবে আপনাদের সামনে।

অন্যদিকে এইসব দেখে বিরোধীরা বলছেন যে, শুভ্রাংশু রায় তো বর্তমানে কাঁচরাপাড়া পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি তো নিজের এলাকাতেই কাজ করতে পারছেন না, ঘর থেকে বেরোতে পারছেন না, তাহলে এই পঞ্চায়েত গুলিতে অবজারভার হয়ে সেখানে কিভাবে কাজ করবেন? এই খেলা পরিষ্কার হবে ভোটের দিনেই।

এবার কর্মীরা বলছেন যে, নেতারা তলে তলে সবাই সেটিংয়েই চলছে। আর আমরা করলেই আমরা খারাপ হয়ে যাচ্ছি।

আমরা অবতক খবরের পক্ষ থেকে এখনো কর্মী এবং সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে বলছি অর্থাৎ একটা বিশেষ বার্তা দিতে চাইছি যে, একজন নেতা অপর এক নেতার বিরুদ্ধে আজ কথা বলছে পরবর্তীকালে তারাই গলায় হাত দিয়ে বসে থাকবেন। কিন্তু এর ওর গোষ্ঠীতে ক্ষতি কর্মী এবং সাধারণ মানুষেরই হবে। বাড়ি ভাঙচুর হবে আপনাদের, নেতাদের বাড়ি ভাঙচুর হবে না। ঘর ছাড়া থাকবে না আপনারা, অন্যদিকে নেতারা ফোন বন্ধ করে ঠান্ডা ঘরে বসে থাকবেন, আপনারা তাদের ফোনে পাবেন না। কোন ঘটনা যদি ঘটে তাহলে তার দায় নেবে কে? আপনার পরিবারের দায় নেবে কে? সেই কারণেই অবতক-এর এর পক্ষ থেকে আপনাদের কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে যে, সামনে ভোট এমন কোন কাজ করবেন না যাতে আপনাদের নিজেদের ক্ষতি হয়। কারণ নেতাদের কোন ক্ষতি হয় না, তারা তাদের আখের গুছিয়ে বেরিয়ে যায় ক্ষতি হয় সাধারণ মানুষ এবং কর্মীদের। আর যার মাশুল গুনতে হয় গোটা জীবন ধরে।