করোনা-কার্ফু জারি;বীজপুর অঞ্চলে এক ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করেছে

অবতক খবর,২১ মার্চ: আজ সকাল থেকেই ঘুরে দেখা গেল করোনা ভীতি মানুষকে কিভাবে গ্রাস করেছে। অন্যদিকে আগামীকাল বাজার বন্ধ থাকবে, রাস্তাঘাটে লোক বেরোবে না। এমনই মনে করছেন সাধারণ মানুষ। এই যে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মতো একটা শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে সান্ধ্য আইন বা জনতা কার্ফু,এতে মানুষ অনেকটাই ভীতসন্ত্রস্ত নিশ্চিতভাবে। কারণ যেভাবে বাজারে জিনিসপত্র কেনায় এবং শুধু কেনা নয় মজুত করার জন্য মানুষ তৎপর হয়ে উঠেছে তাতে এই আশঙ্কাই প্রমাণিত হচ্ছে।

এই অঞ্চলে দেখা যাচ্ছে সকাল থেকেই মুদির দোকানে ব্যাপক ভিড়। এ একটা অন্য ধরনের আতঙ্ক। সবাই চালডাল তো বটেই অনেকে আলু পেঁয়াজও ঘরে মজুত করে রাখতে চাইছে। কারণ তারা মনে করছে যে, যেভাবে করোনার প্রসার ঘটছে তাতে আগামী দিনে আরও বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে নিয়েছে।

অর্থাৎ করোনাকে সামনে রেখে, বাণিজ্যিক ভাষায় বলতে গেলে করোনাকে পণ্য করে বাজার তেতে উঠেছে। জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বগামী, আগের চেয়ে বেশি দামে জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে।

করোনা রোখার জন্য যে মাস্ক, স্যানিটাইজার, হাত ধোয়ার সাবান সমস্ত কিছুরই দাম বেড়ে গেছে। যে যতটুকু পারছে কিনে রাখছে। ফলত বাজারে মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রায় উধাও হয়ে যাচ্ছে।

মূল কথাটি হচ্ছে সরকার প্রচার করছে, দায়িত্ব নিয়েছে একথা সঠিক। কিন্তু তার পাল্টা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মতো পরিকাঠামো গড়ে তোলার মতো, সাধারণ মানুষকে সাহস দেওয়ার মতো সেই কর্মীরা এখনও মাঠে নেমে পড়েনি। সরকার যদি সঙ্গে সঙ্গে এই পরিকাঠামো তৈরি করার দিকে অর্থাৎ দলের ঊর্ধ্বে উঠে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিটি করে যদি তৎপর হত তাহলে বাজারে এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি বা মানুষের এই হা-হুতাশ দেখা দিত না।

শুধুমাত্র টিভিতে, মুখে সরকারকে বললেই হবে না যে, বাজার বন্ধ থাকছে না, জিনিসপত্রের দাম বাড়বে না। এসব কথা মুখে বলে লাভ নেই, কর্মীদের মাঠে নামিয়ে সেই ব্যবস্থার যথাযথ তদারকি করতে হবে। এটাই মানুষ চাইছে।

যারা নিত্ সামগ্রী কিনে ঘরে রাখছেন তারা হয়তো কিছুদিনের সুবিধা পাবেন। কিন্তু দিনমজুর, রোজ মজুর, দিন আনে দিন খায় তারা কি করে ৪-৫ দিনের জন্য মজুত করবে?

ব্যারাকপুর অঞ্চল শ্রমিক অধ্যুষিত অঞ্চল। দিন গেলে চটকল মজুররা ১৫০-২০০ টাকা পায়। তার অতবড় পরিবারের জন্য সে কি করে জিনিসপত্র মজুত করবে? তাদের কথা কে ভাবছে? তাদের স্বাস্থ্যের কথাই বা কে ভাবছে? কোথাও তো সেই ব্যাপকভাবে এই মজদুর, অশিক্ষিত বলব না, নিরক্ষর এই এলাকায় মানুষকে সচেতন করার জন্য যে মাস্ক এবং সাবান বিলি বন্টনের দরকার যা নাকি এই করোনা রোগের মূল প্রতিরোধক তা বিলি বণ্টনের ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না।

শেষ পর্যন্ত এখন ১০টা নাগাদ দেখা গেল বাজারে তৃণমূল দলের কর্মীরা নেমে পড়েছেন। তারা প্রচার করেছেন এবং বলছেন, অযথা আতঙ্কিত হবেন না। অযথা গুজব রটাবেন না। কর্মীরা প্রচারে নেমেছেন সত্য, কিন্তু আলুর দাম যে ১৬ টাকা থেকে ২০ টাকা হয়ে গেল, এই উদাহরণ দিয়ে আমরা বলছি, এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধের ব্যাপারে তারা কিন্তু কিছু বলছেন না। মাস্ক, স্যানিটাইজার,হ্যান্ডওয়াশ পাওয়া যাচ্ছে না। তারা এইসব ব্যাপারে কিছু বলছেন না। শুধু গুজবে কান দেবেন না,আতঙ্কিত হবেন না এটা একটা মুখের বুলি হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু কি এই কথা বললে হবে? এর সাথে সাথে তো সক্রিয় ব্যবস্থাও নিতে হবে। তারজন্য প্রতিমুহূর্তে পর্যবেক্ষণ, তদারকি রাখতে হবে, নজরদারি করতে হবে। এইসব কি করছেন? তারা তো শুধু প্রচার করে চলে যাচ্ছেন। অবতক-এর পক্ষ থেকে জনসাধারণকে বলা হচ্ছে যে আতঙ্কগ্রস্ত হবেন না এবং গুজবে কান দেবেন না। অবতক এই অঞ্চলের পরিস্থিতি আপডেট করে আপনাদের জানাবে।