অবতক খবর,৬ এপ্রিল: বিশ্ব বিপর্যয় করোনা। ভারতীয় রাষ্ট্রে এনে দিয়েছে এক বিশাল সুযোগ।কিসের সুযোগ?

‌আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। ‌জনসংযোগের নামে সেখানেও উঠছে লুটের অভিযোগ। স্থানীয় নেতাই অভিযোগ তুললেন। ‌শাসন ক্ষমতা তাদের হাতে থাকলেও রেশন ডিলারের তারা বাগে আনতে পারছেন না। বিভিন্ন রেশন দোকান কারচুপি করছে। মাল পাচার হয়ে যাচ্ছে। তিনি নিজেই বললেন, রেশন দোকানের জন্মলগ্ন থেকেই এই হতচ্ছাড়ারা পাঁজি। ঝোঁক এদের একটাই— কামাইবাজি। করোনার এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়েও এদের হৃদয় বিগলিত হয়নি। এরা বিভিন্নভাবে সুযোগ নিচ্ছে। ‌অনেক ডিলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশি ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। পুলিশকেও এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে। এবার আমাদের নিজেদের টহল দেওয়ার সময় হয়েছে। আমরা ডিলারদের সোজাসুজি সতর্ক করার একটা পরিকল্পনা নিয়েছি।

অভিযোগ তারা রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মাফিক মালপত্র দিচ্ছেন না। এমন অভিযোগ রয়েছে। রেশন গ্রাহকরা সোজাসুজি জানিয়েছেন, বিভিন্ন ছলা কৌশলে তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে, এই মাল এই পর্যন্ত,তারপর এই মাল এই পর্যন্ত। অর্থাৎ একটা কৌশল নিচ্ছে।

অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে, যে খাদ্য সামগ্রী বন্টন হচ্ছে তার মধ্যে মূল রয়েছে চাল এবং আলু। ডাল সাধারণত কেউ বিলি করছেন না। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিলি হচ্ছে ঠিকই। দেখা যাচ্ছে যাদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা আছে তারাও পেয়ে যাচ্ছে এই ত্রাণ। কোন কোন পরিবার তিনবার চারবার পেয়ে যাচ্ছে। আবার কোন পরিবার পাচ্ছেই না। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের পক্ষ থেকে একই ওয়ার্ডে বিভিন্নবার মালপত্র দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কোনো কোনো ওয়ার্ডে একবারও হয়তো দেওয়াই হচ্ছে না।

একটা মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে যে,ত্রাণ বিলির নামেও দলবাজি চলছে। বলা হচ্ছে, একে দাও, ওকে দাও, একে দাও। অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে যে,সেই রাজনৈতিক দলের সাথে তার কোনোরকম সংযোগ রয়েছে। অর্থাৎ ত্রাণ বিতরণেও দলীয় বিভাজন করা হচ্ছে। এমন অভিযোগও এসেছে। এইভাবে বিলি বন্টন ব্যবস্থা কত দিন চলতে পারে? এটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নামে অভিযোগ উঠেছে।

আরো দেখা যাচ্ছে,কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মীরা বাইরে থেকে হয়তো কোনো রাজনৈতিক প্রচার দিচ্ছেন না, বলছেন, রাজনৈতিক দলের ঊর্ধ্বে অথচ তাদের চালের প্যাকেটে দলের সুপ্রিমোর ছবি দেখা যাচ্ছে। এই কৌশলে তারা রাজনৈতিক দলের প্রচারটি সেরে নিচ্ছেন। এদের আসল উদ্দেশ্য ভোট, ভোটের সুবিধা পাওয়ার জন্য।

এটাই সব চিত্র নয়। কিছু কিছু চিত্র আছে অন্যরকম। ব্যক্তিগত উদ্যোগে যারা ত্রাণ বিলি করছেন তাদের মধ্যে সেই সংকীর্ণ স্বার্থ নেই। এমনও বহু সংস্থা বীজপুর অঞ্চলে নেমে পড়েছেন মানুষের পাশে দাঁড়াবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন।

এই অঞ্চলে ত্রাণ বণ্টনের কোন নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। প্রশাসনিক উদ্যোগও দেখা যাচ্ছে না। কিভাবে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সমবন্টন করা যায়, তার জন্য পৌর প্রশাসনিকভাবে অথবা থানা প্রশাসনিকভাবে একটা সর্বদলীয়, সর্ব সাংগঠনিক আলোচনা ডেকে কিভাবে বন্টন করা হবে তার যে সুষ্ঠু বৈজ্ঞানিক বাস্তব পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত ছিল তা করা হয়নি। ফলত,ত্রাণ বন্টন হচ্ছে কিন্তু যথাযথ হচ্ছে না। সমগ্র মানুষের স্বার্থে হচ্ছে না।আর একটি বিষয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, যেখানে যেখানে ত্রাণ বন্টন চলছে পুলিশ পেট্রলিং হঠাৎ এসে সেখানে পৌঁছচ্ছে। তারা বলছেন যে, ঠিকমত করোনা সংক্রান্ত নির্দেশিকা মানা হচ্ছে না। ‌অর্থাৎ বিষয়টি হচ্ছে এই যে, বিতরণের সময় ওই যে এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। ত্রাণের লোক এতো বেড়ে যাচ্ছে,যার ফলে এটা মান্যতা দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ছে। ‌

পুলিশ এসে এই নিয়ে হুমকি,শাসানি দিচ্ছে। সে তার কাজ করছে সেই ধারাবাহিক গতানুগতিক উপায়ে। কিন্তু তারা দাঁড়িয়ে প্রাণ বণ্টনকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য দুই এক জন পুলিশকে রেখে সেই নির্দেশিকা মানার কোন সহযোগিতা করছে না। তারা ঐ টহল দিয়ে এই হুমকি দিয়েই চলে যাচ্ছে। ‌

এক্ষেত্রে দেখা গেছে এই অঞ্চলের আই সি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলছেন, এটা ডেঙ্গু নয়,এটা বন্যা নয়,এটাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।তবে অঞ্চলের অবস্থা যা তাতে লকডাউন যাতে যথাযথ হয় সেইভাবে পুলিশের আরো যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে আমাদের মনে হয়েছে।