আজ এই কবির জন্মদিন

অমিতাভ দাশগুপ্ত ছিলেন কমিউনিস্ট কর্মী ও কবি। তার লেখার ধার, শব্দপ্রয়োগ তীক্ষ্ণ ফলার মতো আমাদের হৃদয়কে কাঁপিয়ে দিয়েছে। শক্তি চট্টোপাধ্যায় ও অমিতাভ দাশগুপ্ত দু’জনেই যে জন্মেছিলেন ২৫ নভেম্বর। অদ্ভুত সাযুজ্য। দুজনেই ছিলেন সহচর।

কবি দ্রোণাচার্য ঘোষ যিনি নকশাল আন্দোলনের সক্রিয় যোদ্ধা ছিলেন এবং জেলখানায় নিহত হয়েছিলেন তার সঙ্গে আন্তরিক সখ্য ছিল কবি অমিতাভ দাশগুপ্তের।

আমার নিজের একটু অহংবোধ আছে। এই কবির সঙ্গে আমার প্রথম পরিচিতি ঘটে সত্তর দশকের মধ্য ভাগে গুরুদাস দাশগুপ্তর নেতৃত্বে আয়োজিত ইডেন গার্ডেনে অনুষ্ঠিত যুব উৎসবে কবিতা পাঠের আসরে। সেখানে আমি তেভাগা আন্দোলনের কবি গোলাম কুদ্দুস, রাম বসু, পূর্ণেন্দু পত্রী, মণীন্দ্র রায়, তরুণ সান্যাল, আশিস সান্যাল, সত্য গুহ প্রমুখের মুখোমুখি সান্নিধ্যে আসি।

কবি অমিতাভ দাশগুপ্তকে নিয়ে একটি লেখা আজ তাহলে লিখিঃ

শুনুন কমরেডস্

তমাল সাহা

শুনুন কমরেডস!

আমার নাম ভারতবর্ষ।

আমার নীরবতা আমার ভাষা

এই স্পার্টাকাস রাত

এসো স্পর্শ করো, বুকের বাংলা ভাষা

এবং গঙ্গা আমার মা।

উনিশ মে আর একুশ ফেব্রুয়ারি

আমার ভূমিষ্ঠ কাল

একদিন ঘুম ভেঙে আমি বলেছিলাম

আহা! চাল

ছুঁয়োনা ছুঁয়োনা ছিঃ

চতুর্দিকে আমি কী ভারতবর্ষ দেখি!

কাল সারারাত ছেলেটির মুখ

না দেখতে পেলেও

আমি ব্লাস্টিংয়ের শব্দ শুনেছিলাম

আমি দেখেছিলাম বারুদ বালিকা আর

খোখো খেলা মেয়েটির ছুটোছুটি।

কিভাবে কেটে যায়

সমগ্র ভারতবর্ষের দুর্দান্ত প্রহরটি।

আমি বলেছিলাম নারীমেধ কবিতায়

দিশি মদে ভিজিয়ে নারী মাংসের স্বাদই আলাদা।

শেষ ঘোড়া-য় সর্বস্ব বাজি রেখেছিলে তুমি

তোমার দুচোখ জুড়ে এখনও

লাল স্বপ্নের ওয়াদা।

লক্ষ্মণ দোসাদ তুমি

ধর্মকে তুড়ি মেরে গুনে গুনে

প্রতিটি চাল ফেরত চাও।

ছিন্নপত্র নয়, ছেঁড়া পাতার তফাৎ

বুঝিয়ে দিয়ে যখন বলো

কবিতার মতো ইস্তেহার আর

ইস্তেহারের মতো কবিতা লেখার কথা, তখন

আমি দিনে হিরন্ময় রোদ এবং

রাতের জ্যোৎস্না ছড়ানো

পৃথিবীর বুকের দিকে চেয়ে থাকি।

এইসব অনাগত দিন

এখনো স্বপ্নের ভিতর চলে আঁকিবুকি।