এপার ওপার বাংলার প্রণম্য কবি শামসুন রহমানের আজ প্রয়াণ দিবসঃ অবতকের শ্রদ্ধা নিবেদন

ওই যে শামসুর
তমাল সাহা

ওপার বাংলায় যখন ছিলুম তখন থেকেই শামসুর আমার বন্ধু
বিয়ের পর যখন কবিতাকে এ কথা বলি
তখন সে বলে, তুমি খুব মিথ্যুক!
বানিয়ে বানিয়ে খুব মিথ্যে কথা বলতে পারো!

আমি বলি, ওই যে আমাদের গোয়াল ঘর উঠোনের আলপনা ধানের ক্ষেত কোকিলের গান
চাষাভুষো মানুষ কীর্তনখোলা নদী মন্দিরের ঘন্টা মসজিদে আজান শ্মশানের চিতা গোরস্থানের চিরাগ
ওখানেই দাঁড়িয়ে আছে শামসুর

একাত্তরে যখন কাঁটাতার উঠে গেল ওপারে গিয়ে দেখলাম শামসুর একই রকম আছে। তবে এখন একটু বেতরিবদ হয়েছে।

কবিতা জানতে চায়, তা কেমন?

আমি বলি,ও এখন আস্তিনের নিচে বেয়াদবের মতন অস্ত্র লুকিয়ে রাখে
বল্লমের মাথার মতো তার কলম তা দিয়ে শব্দ সাজায় আর স্বাধীনতার কথা বলে।
খুব বেশি হিংস্র হলে তর্জনী তুলে দেখায়
এর বেশি আর ওর দৌড় নেই

ও তেমন কঠিন করে বলে না।
বলে, দামাল দিন ফিরে আয় বলে, ফিরিয়ে দাও রক্তস্নাত শার্ট
ওর বিরুদ্ধ স্বর আর কত দূর উচ্চ স্বরগ্রামে উঠতে পারে!
বলতে পারে, পদত্যাগ চাই।
কার পদত্যাগ চাই সে কথাও শামসুর খুলে বলতে পারেনা

ওর শুধু প্রশ্ন
বলে দেশের পথে প্রান্তরে রাজপথে এত রক্ত কেন, রক্ত কারা খায়?
বাঘ নেকড়ে চিতাবাঘ সাপ
আমি এদের পদত্যাগ চাই

কবিতা বলে, এই তোমার বন্ধু? দেখো কত কৌশল করে কথা বলে! একটুও সাহস নেই বলো!

আমি বলি, শামসুর তো এখন বড়ো কবি
তুমি বুঝবে না, ভালো কবিরা এভাবেই কথা বলে!