অবতক খবর,৩১ ডিসেম্বরঃ এই পশ্চিমবঙ্গ শেষ পর্যন্ত কি চৌর্যবৃত্তির দেশ হয়ে যাবে? এমন নামেই পরিচিত হয়ে যাবে কিনা কে জানে! রাজ্যের বিভিন্ন শহরে গাঁয়ে গঞ্জে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনায় ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সার্বজনীন অর্থাৎ জনসাধারণের জন্য শৌচাগার নির্মিত হয়েছে। এটি কেন্দ্রীয় সরকারের যোজনা। এই যেমন কেন্দ্রীয় আবাস যোজনায় দুর্নীতি লক্ষ্য করা গেছে,এখন দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় এই শৌচাগার যোজনা, এটিও বেদখল অর্থাৎ চুরি হয়ে যাচ্ছে। কাঁচরাপাড়া সার্কাস ময়দান অঞ্চলে যে জনশৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই এটি কেন্দ্রীয় শৌচাগার যোজনার অর্থেই নির্মিত হয়েছে।সার্কাস ময়দানে অবস্থিত একটি ক্লাবের উপর এই শৌচাগারটির নিয়ন্ত্রণ ভার অর্থাৎ দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষের থেকে। জানা গিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ তাদের এই শৌচাগার খোলা বন্ধ সাফসুতরোর দায়িত্ব দিয়েছে। কিন্তু এর জন্য অর্থ ব্যয় কিভাবে হবে সেই সব জানা যায়নি।

এখানে যে শৌচালয়টি হয়েছে তাতে রয়েছে মহিলা ও পুরুষ উভয়ের জন্যই প্রক্ষালনের ব্যবস্থা। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায় এই শৌচাগারটি স্বর্ণ শিল্পীদের দখলে চলে গিয়েছে। স্বর্ণশিল্পী নেতা ও ব্যবসায়ী নেতারা সম্মিলিতভাবে এই শৌচাগারটি ঢাক ঢোল পিটিয়ে উদ্বোধন করেন এবং তারা প্রকাশ্যে দাবি জানান যে, পৌরসভার কাছে তাদের অনেক দিনের দাবি ছিল স্বর্ণ শিল্পীদের জন্য একটি শৌচালয় নির্মাণ করে দেওয়া, সেটি আজ পূরণ হলো। এটি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিয়েছেন পৌর কর্তৃপক্ষ।

এদিকে তারা এই এই শৌচালয় যে স্বর্ণশিল্পীদের অধিকারভুক্ত তেমনি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন ্ বর্তমানে সেই সাইনবোর্ড খোলা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে।

এই প্রক্ষালন গৃহটির দুটি অংশ মহিলা এবং পুরুষ। পুরুষ অংশটির চাবি রয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে। কারণ তারা বলছেন এটি আমাদের কাছে থাকবে এবং তারা মহিলা প্রক্ষালন গৃহটির দায়িত্ব স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিয়েছেন।

এখন প্রশ্ন, মহিলা প্রক্ষালন গৃহটি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যাওয়ায় সাধারণ মহিলারা, পথচারী মহিলারা তারা প্রক্ষালন করবেন কোথায়? বা তারা শৌচালয় কিভাবে ব্যবহার করবেন? তারা তো আর ওই পুরুষ শৌচালয়ের অংশটিতে প্রক্ষালনে যেতে পারবেন না! আরো প্রশ্ন,একটি সার্বজনীন অর্থাৎ সকলের সুবিধার জন্য অর্থাৎ নারী পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেকেরই সুবিধার জন্য যে শৌচাগারটি করা,তা কিভাবে একটি ব্যবসায়ী সমিতির হাতে চলে যাবে বা তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে কেন? পৌর কর্তৃপক্ষই বা কিভাবে সেটি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিলেন?

অর্থাৎ এই কেন্দ্রীয় প্রকল্প জনসাধারণের সুবিধার জন্য যে শৌচালয় নির্মাণ হয়েছে তাও বেদখল হয়ে যাচ্ছে।

পরবর্তীতে এলাকাবাসীদের হস্তক্ষেপে ওই শৌচাগার নিজেদের অধীনে আনেন। খুলে ফেলা হয়েছে আগের সাইনবোর্ড। এই শৌচাগার এখন সর্বসাধারণের জন্য।

স্থানীয়রা জানান,’স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা চেয়ারম্যানের নাম করে মিথ্যা রটনা করেছেন। পরবর্তীতে তারা চেয়ারম্যানের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে চেয়ারম্যান নাকি জানান যে, এরকম কিছু তিনি জানেন না এবং এই শৌচাগার সর্বসাধারণের।