চন্দ্রগ্রহণের এই রাতে, আমি নটবর শ্মশান ঘাটে।

এখন আমি ভাগীরথী তীরে
তমাল সাহা

যে মেয়েটি জানে মেঘ বৃষ্টি জ্যোৎস্না নিয়ে কবিতা হয়
সে হয়তো এসব ভাবেনা
যে তরুণটি উত্তর আধুনিক কবিতা লেখা মকসো করছে বা মহাপুরুষ মহামনীষীদের নিয়ে লিখছে
সে হয়তো ঠিক বুঝতে পারছে না
যে তরুণ-তরুণীটি নদীর পাড়ে বা গাছতলায় গিয়ে পরস্পর চুম্বন করল তারা হয়তো ভাবছেনা
এখনো যে কবিরা লেখকরা পুরস্কার পেয়ে গিয়েছে
বড় বড় আর্টিকেল লিখছে তারাও হয়তো ভাবছেনা—
ঠিক এইভাবেই হিটলার এসেছিল।
নিজেকে সমাজতন্ত্রী বলে পরিচয় দিয়েছিল। তার সভায় কাতারে কাতারে লোক জমা হচ্ছিল তখনও কেউ ঠিক বুঝতে পারেনি।

গ্যাস চেম্বার কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প তো প্রথমেই আসেনি। ধীরে ধীরে এসেছে, তারা এসব হয়তো বা পড়েছে মনে রাখেনি।
এখন ইতিমধ্যেই নীল সাদা গেরুয়া বাহিনী এসে পড়েছে, সময়ের পরিবর্তনে অন্যভাবে মার্চ করছে
হিটলারের আমলের চেয়েও বেশি গোয়েবেলস তৈরি হয়ে গিয়েছে।
অন্য ধরনের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস নেমে এসেছে
মধ্যরাত্রে প্রিজন ভ্যান কালো গাড়ি এসে গেছে,
কেউ গুরুত্ব দিচ্ছে না, সবাই নীরবে দেখে যাচ্ছে
সেই বিকৃত অত্যাচার যৌনদৃশ্যের কথা কেউ মনে রাখছে না!

সব তো আর একবারই আসে না, ধীরে ধীরে আসে।
তখনও এক ধরনের বুদ্ধিজীবীরা চুপ ছিল
এক ধরনের বড় বড় লেখকরা হিটলারের পাশে ছিল।

এসব কথা কেউ ভাবছে না
সবাই কবিতা লিখে যাচ্ছে
সবাই মানব জমিনের কথা লিখছে
সবাই দূরবীন দিয়ে দেখছে
সবাই অন্ধকার গুচ্ছ লিখছে
সবাই বজ্র বিদ্যুৎ ভর্তি খাতা লিখছে।
অনেকে তো সোজাসুজি লিখছে পাগলী তোর সঙ্গে আছি।
হিটলার কোন এক লিঙ্গের প্রাণী নয়, সে উভয় লিঙ্গ হতে পারে, যা হিটলার দেখে যেতে পারেনি।

আমি এখন ভাগীরথী তীরে দাঁড়িয়ে
ওপারে ডানলপের ভাঙা চিমনি দেখছি আর একটু দৃষ্টি উপরে তুলে দেখছি চন্দ্রভুক গ্রহণ!