আজ বিশ্বভাষা দিবস। উদ্বেলিত বাংলার আকাশ বাতাস। আমরা বিশ্বকে দিয়েছিলাম বার্তা। ভাষা দিবস হিসেবে একটি দিন পেতে পারে বিশেষ মাত্রা। ভাষা দেশ যেখানে একাকার,সে একমাত্র বাংলাদেশ, বাংলাভাষা। হৃদয়ে যেখানে প্রোথিত ভালোবাসা

একুশে
তমাল সাহা

ওই যে ছেলেটি মেয়েটি
নদীতীরে সূর্যাস্ত বেলায়
পরস্পরের ওষ্ঠ স্পর্শ করলো
ওটা একুশে।

ওই যে তরুণ তরুণীটি
সমুদ্রতটে দাঁড়িয়ে
সূর্যোদয় দেখে পরস্পরকে
আলিঙ্গন করলো
ওটা একুশে।

ওই যে পাহাড়িয়া মেয়েটি
শিশুটিকে পিঠে বেঁধে
রাস্তা তৈরি করবে বলে
পাথর ভাঙছে
ওটা একুশে।

ওই যে অরণ্যের ভেতর
আকাশের মাথা ছুঁতে চাইছে
কৃষ্ণচূড়া, শিমুল, পলাশ
ওটা একুশে।

ওই দক্ষিণ মহাসাগর তীরে
রক্ত আর আগুনের উৎসব
দামামা বাজাচ্ছে আশ্রয় যুদ্ধে
ওটা একুশে।

ওই যে যমুনা নদী তীরে শাহিনবাগে
ভাগীরথী তীরে পার্ক সার্কাসে
হাজার হাজার মা বলিরেখাময় মুখ
তাকিয়ে আছে প্রজন্মের ভাবনায়
ওটা একুশে।

ওই যে ইছামতী নদী তীরে
কারখানাগুলোর শেডে জং ধরেছে
চিমনিটি ভেঙে কাৎ হয়ে আছে
লাল পতাকাটা উড়ছে
তবে অনেক ফিকে হয়ে গিয়েছে
ওটা একুশে।

ওই যে ঋণগ্রস্ত শষ্যজীবী
দীর্ঘ কাঁঠাল গাছে
ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে আছে
ওটা একুশে।

ওই যে কীর্তনখোলা মাঠে
আকাশে সূর্য উঠেছে
আর মসজিদের মাথায়
উঠেছে চাঁদ
ওটা একুশে।

ওই যে ফ্ল্যাগে, ফেস্টুনে, পতাকায়
তুমি আর আমি যাচ্ছি মিছিলে
প্রেমের পতাকা হাতে
প্রতিবাদের নিশান তোমার হাতে
ওটা একুশে।

একুশে কোনো সংখ্যা নয়
প্রতিদিন একুশে
আমাদের পাশে এসে বসে।
প্রতিদিন একুশে বর্ণমালায় উজ্জ্বল হয়ে আমাদের জীবনে উঠে আসে।

যা দেখি, যা শুনি, যা মুখে বলি
তা ভাষাময় হয়ে ওঠে একুশে।
জীবন ভর জ্বালাতন করিস
সর্বনেশে একুশে
কী যে সুখ তোকে ভালোবেসে!