অবতক খবর,২৫ সেপ্টেম্বর: নবগ্রাম থানার পাশলা গ্রামের জমিদার রায়চৌধুরী বাড়ির দুর্গাপুজোয় একই মণ্ডপের ছাদের তলায় তিনটি বেদিতে ত্রয়ী দুর্গার আরাধনা করা হয়। উমা এখানে দশভূজা নন। ব্যাঘ্ররূপী সিংহের উপর অধিষ্ঠিতা, চতুর্ভূজা। এই পুজো রায়চৌধুরী পরিবারের কোনও পূর্বপুরুষ শুরু করেননি। জানা গিয়েছে, এখনকার মণ্ডপের জায়গায় আগে জঙ্গলে ঘেরা উঁচু ঢিবি ছিল। প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে এক সন্ন্যাসিনী গ্রামে এসে দশভূজার আরাধনা শুরু করেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত দুর্গা বুড়িমা নামে পরিচিত। সন্ন্যাসিনীর মৃত্যুর পর জমিদার মথুরানাথ রায়চৌধুরী পুজো চালিয়ে যান। তবে সেইসময় মূর্তিপুজো হতো না। পরে মূর্তিপুজো শুরু হয়। পরে পুজোর স্বত্বাধিকার নিয়ে জমিদার পরিবারের দুই শরিক গিরীশ রায়চৌধুরী ও শ্রীশচন্দ্র রায়চৌধুরীর মধ্যে দ্বন্দ্ব হওয়ায় দুই শরিক একই মণ্ডপের ছাদের নীচে মূল বেদির ডান দিকে আরও দু’টি বেদি নির্মাণ করে দুর্গাপুজো শুরু করেন। তিনটি দুর্গাই চতুর্ভূজা। প্রতিটি বেদিতে একচালায় মা তাঁর চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে অবস্থান করছেন। মণ্ডপের ছাদের তলায় প্রতিমা গড়ার কাজ চলে। ষষ্ঠীর দিন সকালে তিনটি প্রতিমাকে আলাদা বেদিতে স্থাপন করা হয়। লুচি, ফল ও মিষ্টি সহযোগে তিন দেবীকে ভোগ নিবেদন করা হয়। ষষ্ঠী, সপ্তমী, সন্ধিপুজো এবং নবমীতে ছাগ বলি দেওয়া হয়। গ্রামবাসীরা উৎসবে মেতে ওঠেন। বাইরে থেকেও বহু মানুষ পুজোর গ্রামে ভিড় জমান। সব ধর্মের মানুষ পুজোয় শামিল হন এবং প্রসাদ গ্রহণ করেন। দশমীর সকালে সিঁদুরখেলা হয়। জমিদার বাড়ির মহিলাদের সঙ্গে গ্রামের মহিলারা সিঁদুরখেলায় যোগ দেন। ওইদিন বিকেলে গ্রামে জমিদার পরিবারের দিঘিতে মা-কে ঢাকঢোল সহযোগে বিদায় জানানো হয়। প্রতিবছর জেলাগুলি থেকে বহু মানুষ মানতের পুজো দিতে আসেন।