অবতক খবর,২৬ মার্চ,দেবব্রত মন্ডল,বাঁকুড়া:- বাংলার নিজস্ব ঘরানার বিষ্ণুপুরী ধ্রুপদ ধামারকে তুলে ধরতে সরকারি উদ্যোগে মিউজিক ফেস্টিভ্যাল, উইক এন্ডে পোড়ামাটির হাটে প্রাচীন সুর মুর্ছনায় ভাসছেন পর্যটকরাও ।

শীত শেষ। একটু একটু করে গরম পড়তে শুরু করেছে বাঁকুড়ায়। আর সেই গরমে উইক এন্ডের সন্ধ্যায় উন্মুক্ত প্রান্তরে বসে প্রাচীন টেরাকোটার মন্দিরকে সাক্ষী রেখে বাংলার নিজস্ব ঘরানার সঙ্গীতের সুর মুর্ছনায় ভেসে যেতে চান? তাহলে এই উইক এন্ডে ঢুঁ দিতেই পারেন প্রাচীন মল্ল রাজধানী বিষ্ণুপুরের পোড়া মাটির হাট প্রাঙ্গনে।

গান বাজনা মতিচুর, এই তিন নিয়ে বিষ্ণুপুর। প্রাচীন মল্ল রাজধানী বিষ্ণুপুরের ইটে কাঠে পিচে পাথরে জড়িয়ে রয়েছে ধ্রুপদ ধামারের রাগ রাগীনির সুর। বাংলার একমাত্র নিজস্ব সঙ্গীত ঘরানা হিসাবে পরিচিতিও রয়েছে বিষ্ণুপুর ঘরানার সঙ্গীতের । কথিত আছে মল্ল রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বিশ্ব সেরা তানসেনের বংশধর বাহাদুর খাঁ ও বিখ্যাত পাখোয়াজবাদক পীর বক্সের হাত ধরেই এক সময় জন্ম নিয়েছিল এই সঙ্গীত ঘরানা। তারপর দীর্ঘ কয়েক শতাব্দী কেটে গেছে। সেই মল্ল রাজারাও নেই। নেই তাদের রাজত্বও। কিন্তু অতীতের বৈভবের স্মৃতি হয়ে আজো বিষ্ণুপুরের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে মল্ল রাজ আমলে নির্মীত টেরাকোটার রাসমঞ্চ, জোড় বাংলো, মদনমোহন সহ অসংখ্য মন্দির। আর টিকে রয়েছে বিষ্ণুপুর ঘরানার সঙ্গীত। সেই সঙ্গীতকেই দেশ বিদেশের পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে বিষ্ণুপুরের জোড় শ্রেনীর মন্দির প্রাঙ্গনে পোড়ামাটির হাটে সরকারি উদ্যোগে শুরু হয়েছে মিউজিক ফেস্টিভ্যাল। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই উৎসব চলবে রবিবার পর্যন্ত। উৎসব উপলক্ষে মায়াবী আলো আর চোখ ধাঁধানো সাজে সেজে উঠেছে পোড়ামাটির হাট। বিষ্ণুপুরের টেরাকোটার মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে ক্লান্ত পর্যটকরা সন্ধ্যে হলেই এখন ভিড় জমাচ্ছেন মিউজিক ফেস্টিভ্যালে। খোলা আকাশের নীচে সুপ্রাচীন টেরাকোটার মন্দির গুলিকে সাক্ষী রেখে আপামর মানুষ ভেসে যাচ্ছেন প্রায় চারশো বছরের পুরানো সঙ্গীত ঘরানার সুর, তাল, লয়, ছন্দে।