অবতক খবর , সংবাদদাতা ::  একরত্তি শিশু যে বিষ্ময় বালক নামেই পরিচিত সে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস এর শিরোপা পেল। এক্সট্রা অর্ডিনারী হিসেবে শংসাপত্র ও মেডেল এসে পৌঁছায় ময়ূখের বাড়িতে।গত মঙ্গলবার এই শংসাপত্র ও মেডেল পেয়ে খুশি ময়ূখের বাবা রাজু বর্মন ও মা মিনা বর্মন। ময়ূখের বর্তমান বয়স তিন বছর।

মাত্র ২১ মাস বয়সে এমন অবাক শিশুকে আর কখনও দেখা যায়নি এই জেলায়। ঠিকঠাক কথাও বলতে শেখেনি। কিন্তু এমন প্রতিভা যে চোখে না দেখলে বিশ্বাস করাটাই কঠিন। চোপড়ার ব্লকের দাস পাড়ায় রাজু বর্মনের ছেলে ময়ূখ বর্মন। এই বয়সেই ভারতের সব কটি রাজ্যের নাম, রাজধানীর নাম ঠিক ঠাক বলে দিচ্ছে।শুধুই কি তাই এছাড়াও জাতীয় ফুল ,ফল , পাখি, জাতীয় সংগীত সহ দেশের প্রধান মন্ত্রীর নাম, মুখ্য মন্ত্রীর নাম , রাষ্ট্রপতির নাম সব মুখস্ত ।

শুধু নিজের রাষ্ট্র নয় অন্য দেশের নাম ও তার রাজধানীর নাম জানতে চাইলে ঝটপট বলে দিচ্ছে উত্তর। সেই ছোট্ট শিশুটির এহেন বিরল তথা ব্যতিক্রমী প্রতিভার খবর চাউর হতেই কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় করে ওই বাড়িতে।ওই খুদেকে কেউ বলছে বিষ্ময় বালক আবার কেউবা বলছে আশ্চর্য বালক।দুধের শিশুটির মুখ দিয়ে আধো আধো উচ্চারণ বের হলেও ওকে প্রশ্ন করা প্রতিটি উত্তর বুঝে নেওয়া যায়।

কিন্তু এই এক রত্তি শিশু কিভাবে এসব বলতে পারে।কিংবা এই বয়সে যে শিশুর বর্ণমালাই জানার কথা নয়,সেই শিশু কিভাবে এতো জেনারেল নলেজ মুখস্থ রাখতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর না পেয়ে চরম ভাবে কৌতূহলী এলাকার মানুষজন।উত্তর দিনাজপুর জেলার দাসপাড়া বাজারের বাসিন্দা রাজু বর্মণ পেশায় আর্টিস্ট। বাজারে তার একটি আর্টের দোকান রয়েছে এবং ওই শিশুর মা মিনা বর্মন অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্রের সহায়িকা।

ঠিকমতো মুখের কথাও ফোটেনি যে শিশুর কিন্তু এরমধ্যেই যেন  প্রশ্ন মঞ্চে বসলে তরুনদেরও টেক্কা দেবার ক্ষমতা রাখে সে।ওকে যেন শুধু প্রশ্ন করার অপেক্ষা। উত্তর টা ঠোঁটের উপরেই রয়েছে। সেই ২১ মাস বয়সেই উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ার দাসপাড়ার ময়ুখ বর্মনের যেন জেনারেল নলেজের খই ফুটছে মুখে।

ওই  প্রশ্নের তালিকায় কি নেই?প্রধানমন্ত্রী,  রাষ্ট্রপতি থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নাম শুধু জিজ্ঞেস করার অপেক্ষা।  ময়ুখ চোখের পলক ফেলার আগেই উত্তর দিয়ে দিচ্ছে খেলতে খেলতেই।  অনায়াসে বলে দেয় রাজ্যের ২৩ জেলার নাম বা ২৯ রাজ্য ও তাদের রাজধানীর নাম। ময়ুখের এই  অসাধারন কীর্তি ও প্রতিভায় মুগ্ধ এলাকার বাসিন্দারা।তারাও কৌতূহলী হয়ে প্রশ্ন করা শুরু করেছেন।

স্বাভাবিক ভাবেই ওই বয়সের একটি শিশুর লিখতে বা পড়তে জানার কথাই নয়।মায়ের কোলে পিঠে করে মানুষ হবার কথা।  তার মা, বাবা বা যার কাছেই যেটা শুনে সেটাই মনে রাখে ওই বিষ্ময় বালক। ভেতরে গেঁথে যায় ময়ুখের।  ছেলের এই প্রতিভা দেখে মা  মীনা বর্মন তাঁর কোলের ছোট্ট শিশুকে নিয়ে পড়াতে বসায়।শেখায় বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর।একবার বললেই মুখস্থ হয়ে যায়। তিনি নিজে যেটা মনে রাখতে পারেননা ওই একরত্তি শিশুর তা মনে থাকে।

শিশুটির বাবা রাজু বর্মন জানিয়েছেন, মাত্র ১৫ মাস বয়স থেকেই  ময়ুখ যা শুনত তাই মনে রেখে বলতে পারত। তাঁরা চান যেন ময়ুখের এই প্রতিভার সঠিক বিকাশ ঘটে।যেন এই বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে ও অনেক বড় হতে পারে। ময়ূখের দিদি ডালিয়া বর্মন জানায়, সব কিছুর পাশাপাশি এখন হনুমান চল্লিশা সম্পূর্ণভাবে মুখস্ত বলে দিতে পারে তার ভাই।ওই পরিবারের আরও অনেকেই যা পারে না।

তবে এমন বিষ্ময়ের ঘটনা এই প্রথম নয়।২০১১ সালে ময়ুখের মতোই কৌটিল্য পন্ডিত নামে হরিয়ানার কার্নালের  এক শিশু তার অসাধারণ স্মৃতিশক্তির জন্য খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম  বিস্মিত হয়েছিলেন এই ঘটনায়।  উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ার দাসপাড়া গ্রামের ময়ুখ বর্মনও  এখনই এমন পরিচিতি পেয়েছে যে ভবিষ্যতে ওকে এই গুনেই চিনবে দেশবাসী।এমনই  আশা ওর পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি এলাকাবাসীর।