আম থাকা অবস্থায় প্রকাশ্যে কেটে সাফ আম বাগান, প্রশ্নের মুখে প্রশাসন ও বন দপ্তরের ভূমিকা

অবতক খবর,১ এপ্রিল,চাঁচল,সানু ইসলামঃ মালদা মানেই মহানন্দা, মালদা মানেই নানান স্বাদের আম। কিন্তু আমের মরশুমের প্রাক্কালে আমের জেলাতেই মুকুল ও আম চলে আসা অবস্থায় নির্বিচারে আম গাছ কাটার অভিযোগ।প্রশ্নের মুখে বনদপ্তরের ভূমিকা।গাছ কাটায় ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরা।ঘটনা কে ঘিরে চাঞ্চল্য মালদহের চাঁচলের মকদম পুরে।

মালদা জেলার আম বিখ্যাত সারা দেশে। জেলার ব্যবসা, জেলার অর্থনীতি অনেকাংশে নির্ভর আমের উপর। আসন্ন আমের মরশুম। ইতিমধ্যে প্রতিটি আমগাছেই ব্যাপক পরিমাণে মুকুল চলে এসেছে গাছে, আবার কোনো গাছে মুকুলের পাশপাশি ধরেছে আম। আর এরকম আবহতেই এক সাথে টানা প্রায় ১৪ টি আম গাছ কাটার অভিযোগ উঠল মালদহের চাঁচল থানার মকদমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শেরপুরে। দিনের আলো হোক বা রাতের আঁধার প্রতিনিয়ত চলছে বৃক্ষ নিধন যোগ্য।একের পর মুকুল থাকা অবস্থায় কাটা হচ্ছে আম গাছ। মাফিয়াদের বাড়বাড়ন্তে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও পরিবেশপ্রেমীরা।

মালদা জেলার আম বিশেষজ্ঞ ড. কমল কৃষ্ণ দাস বলেন, যে কোনো গাছ কেটে ফেলা সামাজিকভাবে অপরাধ। মালদা জেলা আমের জেলা, আর সেই আমের জেলায় অবাধে কেটে ফেলা হচ্ছে আমগাছ। এই ঘটনা সত্যি নিন্দাজনক। মালদা জেলা বনদপ্তর কিভাবে এই গাছ কাটার অনুমতি দেয়।

পরিবেশ প্রেমী তথা চাঁচল সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক নীহার রঞ্জন দাস বলেন, রাতের অন্ধকার হোক বা প্রকাশ্য দিবালোক অবলীলায় চলছে বৃক্ষ নিধনযোগ্য। প্রশাসন দেখেও নিশ্চুপ হয়ে আছে। আমের মরশুমে এই মুহূর্তে আম গাছ কাটা আইনত দণ্ডনীয়। আমরা মালদা বিজ্ঞান মঞ্চের পক্ষ থেকে এই ঘটনার তীব্র ধিক্কার জানাই। আগামীতে গাছ কাটার আমরা ঘোর বিরোধী। আগামীতে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে চলেছি।

যদিও গোটা ঘটনা নিয়ে চাঁচল রেঞ্জের বনদপ্তরের আধিকারিক মনীন্দ্রনাথ কর্মকার কে ধরা হলে তিনি জানান,গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।নিয়ম মেনেই কাটা হচ্ছে।যদি মালদা রেঞ্জের বনদপ্তর বিভাগকে ফোনে ধরা হলে তারা স্পষ্ট জানিয়েদেন, মুকুল থাকা অবস্থায় কোন আম গাছ কাটার এক্তিয়ার নেই।

আর এই সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির চাঁচল ব্লকের কো-কনভেনার প্রসেনজিৎ শর্মা বলেন, শাসকদলের মদত ছাড়া আম গাছ কাটা সম্ভব না। তৃণমূল নেতাদের মদতে বনদপ্তর এই আম গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছে।

যদিও বিজেপির এই অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল। চাঁচল ১ নং ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শেখ আফসার আলী বলেন, গাছ কাটা সামাজিক অপরাধ। তবে বিজেপি যে অভিযোগ করছে তা একেবারে মিথ্যে এবং ভিত্তিহীন। প্রশাসনের ভূমিকায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ আমরা।

সমগ্র ঘটনায় দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবী জানাচ্ছে এলাকার পরিবেশপ্রেমী মানুষজন। কেন এতগুলো গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হলো?কি স্বার্থ রয়েছে এর পেছনে?উঠছে বিভিন্ন প্রশ্ন।ক্ষোভ বাড়ছে এলাকার মানুষদের মধ্যে।