শততম বর্ষে শ্রদ্ধাঃ
বিশ্বজনীন চলচ্চিত্র স্রষ্টা
সত্যজিৎ রায়

আমার সত্যজিৎ
তমাল সাহা

অপু,দুর্গা,হরিহর,সর্বজয়াকে নিয়ে
গেরস্থালি জীবন তুমি তুলে ধরেছিলে।
গাঙ্গেয় বাংলার গ্রাম্যতায় ছিল প্রাণের সুর।
পুকুরের ধার, মাটির নিকোনো উঠোন,
ইন্দিরা ঠাকরুণ, কচুরিপানা, গঙ্গাফড়িং,
প্রকৃতির নিজস্ব ঝড়বৃষ্টি- আলোকপাত,
দইওয়ালার ডাক, রেললাইন, রাঙি গাই—
আহা, নিশ্চিন্দিপুর!
বাঙালির যাপিত জীবন, তার
দুঃখ হতাশা বিষাদ নিয়ে ঘরকন্না।
কী সব দৃশ্য হৃদয়ে গেঁথে দিয়েছিলে তুমি!
আজ তোমার জন্মদিন।

একশ বছরে কি আসে যায়!
সময় তো সময়ের মতো যায়।
ছবিগুলি ফিরে ফিরে আসে।
জীবন স্পন্দিত উন্মুখ হয়
মানবতাকে ভালোবেসে।

সীমাবদ্ধ জীবনের প্রতিদ্বন্দ্বী হতে হয়। ‌
অশনি সংকেত প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও
তোমার চোখ কি এড়ায়?
দলিত জীবনের সদগতি অন্যমাত্রা পায়।
মধ্যবিত্ত জীবনের বৈচিত্র্য বাস্তবময় হয়ে ওঠে শাখা-প্রশাখায়।
ঘরে-বাইরে বিপ্লবীর সংকট‌
তুলে আনো তুমি ক্যামেরায়।
গণশত্রুকে চিহ্নিত করার স্পর্ধা দেখাও
চলচ্চিত্রের পর্দায়।
নাগরিক জীবন সংগ্রামের দিকে
তোমার দৃষ্টি ঘুরে যায়
মহানগর প্যান করো তুমি ক্যামেরায়।

কুরোসাওয়ার কথা মনে পড়ে,
তোমার চলমান চিত্র না দেখা,আর
পৃথিবীতে বাস করে
চন্দ্র-সূর্য না দেখা একই কথা।
এ তো সঠিক, তুমি দেখিয়েছিলে
কি করে হতে হয় সঠিক নির্মাতা।

দারিদ্রও রপ্তানি করা যায়!
অভিযোগ উঠেছিল তোমার নামে।
রাষ্ট্রের দাপট তো উদয়ন পণ্ডিত জানে,
কতদূর যেতে পারে,যায়!

তুমি তো সত্যজিৎ!
থোড়াই তা কেয়ার করো।
রাষ্ট্রের চেহারা তির্যকে তুলে ধরো।
দড়ি ধরে মারো টান
রাজা হবে খান খান।
তুমিই সোচ্চারে বলতে পারো।

তোমার প্রায়োগিক গান—
আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে…
করোনা-র ভাইরাস ভাসে পরিবেশে
তোমার শততম জন্মদিন আসে!