অবতক খবর,৩০ ডিসেম্বরঃ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় অনিয়ম নিয়ে রাজ্যের জেলায় জেলায় ছড়িয়েছে অসন্তোষ। এবার আবাস যোজনার টাকায় তৃণমূলের পার্টি অফিস তৈরির অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে। জামালপুর ২ পঞ্চায়েত অফিসের সামনে রয়েছে কাঠুরিয়াপাড়া গ্রাম। শংকর মাঝি ও তাঁর পরিবার এই গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে শংকর মাঝির নামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর অনুমোদন হয়। ঘর তৈরির জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা উপভোক্তা শংকরবাবুর নামে বরাদ্দ হয়। সেই টাকায় পাকা বাড়ি তৈরি হওয়ার পরও সেখানে ওই ব্যক্তির ঠাঁই হয়নি বলে অভিযোগ।

সরকারি খাতায় কলমে আবাস যোজনার ওই বাড়ির মালিক শংকর মাঝি হলেও সেটি এখন শাসকদল তৃণমূলের পার্টি অফিস। তার আবার নাম দেওয়া হয়েছে ‘উন্নয়ন ভবন’। জেলা ও ব্লক তৃণমূলের এক ঝাঁক নেতারা ওই পার্টি অফিসের উদ্বোধন করেছিলেন।

এই বিষয়ে বিজেপি যুব মোর্চার জামালপুর বিধানসভার কনভেনার অজয় ডকাল জানান, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর নিয়ে এমন ছলচাতুরী করেও শাসকদলের নেতারা বেশিদিন তা গোপন রাখতে পারেননি। বিষয়টি জানতে পেরে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে তিনি সহ বিজেপি কর্মীরা মিলে আন্দোলনে নামেন। তখন চাপে পড়ে তৃণমূল নেতারা এবং জামালপুর ২ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ভোল বদলান। পার্টি অফিসটি ছেড়ে দেওয়া হয় উপভোক্তা শংকর মাঝিকে। কিন্তু এতকিছুর পরেও বাড়িতে থাকতে পারেন না শংকর মাঝি। তাঁকে সেখান থেকে বের করে দেন এলাকার তৃণমূল নেতা রামরঞ্জন সাঁতরা ওরফে বুটে। তিনি ওই বাড়ির দেওয়ালে লেখা আবাস যোজনা সংক্রান্ত তথ্যও মুছে দেন।

গোটা বিষয়টি জানা সত্ত্বেও প্রশাসনের কর্তারা নিশ্চুপ রয়েছেন। অজয় ডকাল স্পষ্ট জানান, এতবড় দুর্নীতি হওয়ার পর বিজেপি চুপ করে বসে থাকবে না। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাঁরা জোরদার আন্দোলনে নামবে। অপরদিকে সিপিআইএম জামালপুর ১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুকুমার মিত্র জানান, এটা তৃণমূলের একটা নজিরবিহীন দুর্নীতি কাণ্ড। সিপিএমও পথে নামবে এবং বিডিওকেও ডেপুটেশন দেবে। তারপরও প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে আন্দোলন আরও জোরদার হবে। গোটা ঘটনার জন্য তৃণমূল নেতা রামরঞ্জন সাঁতরা জামালপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন। জামালপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান উদয় দাস জানান, রামরঞ্জন সাঁতরা অসত্য কথা বলে পঞ্চায়েতকে দায়ী করছেন।

বিডিও (জামলপুর) শুভঙ্কর মজুমদার জানান, সেচ দপ্তরের বাঁধের জায়গায় সরকারি আবাস যোজনার বাড়ি তৈরির অনুমোদন প্রশাসন দেয় না। এইসব যাঁরা করেছেন তার দায় তাঁদেরকেই নিতে হবে। প্রশাসন এর কোনও দায় নেবে না। জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভূতনাথ মালিকও একই কথা জানিয়েছেন।