অবতক খবর,৮ ফেব্রুয়ারি,নদীয়া:- শান্তিপুরনাথ শ্রীঅদ্বৈতচার্যের আজ ৫৮৮ তম জন্মদিন। আনুমানিক ১৪৬৫ সালে শ্রীহট্ট থেকে তিনি শান্তিপুরে আসেন,তখন তাঁর নাম ছিলো কমলাক্ষ মিত্র।তিনি মাধবেন্দ্র পুরীর কাছ থেকে দীক্ষা গ্রহন করেন।বৈষ্ণব ধর্ম প্রচারের সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে অদ্বৈতাচার্য নামে পরিচিত হন।

অদ্বৈতচার্য্য অসাধারণ পান্ডিত্যের অধিকারী ছিলেন।বিভিন্ন ভাষার ওপর তার দখল ছিলো।তিনি ছিলেন একজন প্রকৃত সমাজসংস্কারক।তিনি অস্পৃশ্যতা মানতেন না।হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায় ছিলো তাঁর কাছে সমান। ভক্তিনাম প্রেমিক মুসলমান যবন হরিদাসকে তিনি নিজগৃহে আশ্রয় দিয়েছিলেন।হরিদাস তাঁর এক প্রিয় শিষ্য হয়ে ওঠেন।অদ্বৈতাচার্যের কাছে দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই শিক্ষালাভ করতে আসতেন।শ্রীচৈতন্যের শিক্ষাগুরু ছিলেন অদ্বৈতচার্য্য।দুজনের মিলন ঘটেছিলো এই শান্তিপুরে।সেই থেকে বারবার শান্তিপুরে মানবধর্ম প্রচারে এসেছিলেন শ্রীচৈতন্যদেব।

অদ্বৈতচার্য্যের জন্য চৈতন্যদেব শান্তিপুরে আসতেন বলে অদ্বৈতচার্য্যকে শান্তিপুরে গৌরআনা ঠাকুর বলা হয়।
শ্রী অদ্বৈতচার্য্যের বংশধরেরা শান্তিপুরের বিভিন্ন গোস্বামীবাড়ীতে রয়েছেন।বাবলায় রয়েছে তাঁর সাধনপীঠ।তাঁর ছয়টি পুত্র ছিলেন। তাঁদের নাম হলো অচ্যুতানন্দ,কৃষ্ণমিশ্র,গোপাল,বলরাম,স্বরূপ ও জগদীশ।এঁদের সন্তানসন্ততীরা বর্তমানে শাখা প্রশাখায় বিস্তার লাভ করেছেন।

আজ মাঘী সপ্তমী তিথিতে অদ্বৈতচার্য্যের বংশধরেরা শান্তিপুরে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সেবামূলক কাজের মধ্যে দিয়ে তাঁর আবির্ভাবোৎসব পালন হচ্ছে। সেই উপলক্ষে সারাদেশ তো বটেই এমনকি দেশের বাইরেও ভক্তবৃন্দ পালন করছেন এই বিশেষ দিনটি। নদীয়ার শান্তিপুর তৎকালীন সুরধ্বনি নদীর পাশে বর্তমান বাবলা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শ্রী শ্রী অদ্বৈত আচার্য প্রতিষ্ঠিত বাবলা অদ্বৈতপাঠে বিভিন্ন রাজ্য এবং দেশ থেকে এসে পৌঁছান।

বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী বাড়ির 14তম প্রজন্ম সেবাইত প্রশান্ত গোস্বামী জনান, করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দু’বছর ধরে ভক্তবৃন্দদের জমায়েত কম রাখার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়েছে। 15 তম প্রজন্ম বর্তমান বিধায়ক ব্রজো কিশোর গোস্বামী অবশ্য পৌর নির্বাচনের নমিনেশন জমা দেওয়ার কাজে ব্যস্ত থাকলেও সকালে একবার মন্দির কমিটির সদস্যদের সাথে দেখা করে সমস্ত ব্যবস্থা করে দিয়ে এসেছেন, দুপুরের পর থেকে আবারো মন্দিরে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।