অবতক খবর,১৯ ডিসেম্বর: কথায় আছে, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। আর তা প্রমাণ করলেন মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির প্রত্যন্ত গ্রাম কীর্তনীয়াপাড়ার নাজমুল মণ্ডল নামে এক যুবক। পেশায় তিনি রাজমিস্ত্রি। দিন আনি দিন খাই-এর মতোই তাঁর অবস্থা। রোজগার করতে কখনও কখনও ভিন রাজ্যেও পাড়ি দেন। তবে ওই যুবকের একটি মাত্রই ইচ্ছা। তাঁর নিজের একটি ছোট্ট বাড়ি হবে। আর সেটিকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা। আর সেই ইচ্ছাপূরণের লক্ষ্যে দিন-রাত এক করে খেটে যেতেন তিনি।

সবই ঠিকঠাকই ছিল। ইচ্ছাপূরণের অনেকটা কাছে পৌঁছেও গিয়েছিলেন তিনি। বাড়ির জন্য ভিত কাটা থেকে ইট গাঁথা, ছাদ থেকে প্লাস্টার সবটাই করে ফেলেছিলেন। ছোট্ট বাড়ির স্বপ্নপূরণ করেই ফেললেন। এবার মনের মতো করে সেই ঘর সাজানোই তাঁর শেষ ইচ্ছা। ঘর সাজানোর কাজ মোটামুটি সবই হয়েছে। এবার শুধু দরকার একটি বক্স খাট।

দেরি না করে চলে যান ফার্নিচারের দোকানে। দাম শুনে রীতিমতো তাঁর চক্ষু চড়কগাছ। একটি বক্স খাটের দাম সর্বনিম্ন ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। ফার্নিচারের দোকানে দাঁড়িয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন, নিজের হাতেই বক্স খাট তৈরি করবেন। কিন্তু তিনি তো কাঠের কাজ জানেন না। কী করে সম্ভব হবে?

একটু সময় লাগল বটে। তবে ঠিকই তৈরি করে ফেললেন বক্স খাট। তবে হ্যাঁ, এই বক্স খাট সেগুন বা অন্য কোনও দামি কাঠের বক্স খাট নয়। এটা সম্পূর্ণ ইট, বালি, সিমেন্ট, পাথরের তৈরি বক্স খাট। যা দেখলে যে কেউ চমকে যাবে। অসাধারণ কারুকার্য করা এই বক্স খাট বানাতে তাঁর খরচ হয়েছে মাত্র ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা। তিনি এই বক্স খাট করার পর প্রতিটি মানুষকেও এমনই খাট করার কথা বলেন।

এই বিষয়ে প্রতিবেশী সাজ্জাদ মণ্ডল বলেন, এত সুন্দর খাট তিনি জীবনে প্রথমবার দেখলেন। তাও আবার ইট, বালি, পাথর, সিমেন্টের। তাও এত কম খরচে। এরকম ভাবনা খুবই নতুনত্ব।

নাজমুল মণ্ডল জানান, মার্কেটে যে কাঠের খাট পাওয়া যায়, তা কিছুদিন পরে ধীরে ধীরে নড়বড়ে হতে শুরু করে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই খাটের সেটা হওয়ার সম্ভাবনা কম। এছাড়াও যে বাজারদর ছিল, তার থেকে অনেক কম দামে মজবুত খাট নিজের হাতে বানানো যায়। সেই কারণেই এই ভাবনা। এমন অভিনব ভাবনা সত্যিই প্রশংসনীয়।