অবতক খবর : আবারও অর্জুন সিং প্রসঙ্গে মুখ খুললেন সুবোধ অধিকারী এবং সোমনাথ শ্যাম। ব্যারাকপুর সাংসদ অর্জুন সিং উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলা সাধারণ সম্পাদক সুবোধ অধিকারীকে লোহা চোর বলেছেন। আর এরই উত্তর দিতে গিয়ে সুবোধ অধিকারী বলেন,”আমি যদি লোহা চোর হয়ে থাকি তবে অর্জুন সিং নিজে কি? দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে আমি অর্জুনকে চিনি। ওই অঞ্চলের মানুষ সকলেই জানেন ও কবাড়ি ব্যবসা করত।

সুবোধ বলেন শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি অর্জুন সমস্ত বেআইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এটি সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসন পর্যন্ত জানে। ব্যারাকপুরের মানুষের দুর্ভাগ্য যে এরকম চোরচোট্টা ব্যক্তিকে সাংসদ হিসেবে পেয়েছেন। এরকম একটি ক্রিমিনালের কাছ থেকে আর কি আশা করা যেতে পারে! তিনি তো রাজনৈতিক কোন কথা বলতে পারেন না, তাই ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন। তিনি একজন সাংসদ, কিন্তু মানুষদের তার পাশে নেই। তিনি বেআইনি কার্যকলাপের পাশাপাশি মানুষকে শোষণ করছেন। তিনি বিভিন্ন বেআইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত, যেগুলোর মধ্যে অসংখ্য কার্যকলাপ ইতি মধ্যে সামনে এসেছে।  ধীরে ধীরে আরও সামনে আসবে।

সুবোধ দাবি করেন যে অর্জুন একজন তোলাবাজ সাংসদ সেটা সবাই জানে। কিন্তু এই তোলাবাজি আর বেশিদিন চলবে না। ভাটপাড়ায় যে সন্ত্রাস চালানো হয়েছে, মানুষকে যেভাবে শোষণ করা হয়েছে তার রিপোর্ট কেন্দ্র সরকারের কাছে আছে। অর্জুন এখন ভাটপাড়ার ভাট হয়ে গেছে।” অর্জুন প্রসঙ্গে বারংবার প্রশ্ন করাতে সুবোধ অধিকারী বিরক্ত হয়ে যান এবং উত্তর দিতে অস্বস্তি প্রকাশ করেন।

এরপর আমরা কথা বলি ভাটপাড়ার তৃণমূলের সক্রিয় নেতা সোমনাথ শ্যামের সাথে। সাংসদ অর্জুন সিং প্রসঙ্গে তিনি বলতে গিয়ে বলেন,”অর্জুন এখন না পেরে ব্যক্তিগত আক্রমণে নেমেছেন। এটা মানুষ তখনই করে যখন সে রাজনৈতিক ভাবে দেওলিয়া হয়ে যায়। তিনি আরো বলেন ব্যক্তিগত আক্রমণ মানুষ তখনই করে যখন সে নিজের চারপাশে অন্ধকার দেখতে পায়। কারণ তার কাছে তো এখন রাজনৈতিক কোনো পরিকল্পনা নেই। সেই কারণে তিনি এখন ব্যক্তিগত আক্রমণে নেমেছেন। তিনি যাকে লোহাচোর বলছেন, সুবোধ অধিকারী যদি সত্যিই তাই করে করে থাকেন তবে তিনি নিশ্চয়ই ৬৫ লক্ষ টাকা ইনকাম ট্যাক্স দেবেন না। তাই নয় কি? লোহা তো অনেক দামি জিনিস। অর্জুন সিং-এর পূর্ব ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে,তিনি প্লাস্টিক কুড়িয়ে এনে সেই ব্যবসা করতেন। এরপর তিনি লাড্ডুর ব্যবসা করতেন। লাড্ডুর বানাতেন তিনি। ভাটপাড়ার প্রচুর প্রতিষ্ঠিত মাড়োয়ারি যাদের থেকে লাড্ডু ব্যবসা করার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকার কাঁচামাল তিনি কিনেছিলেন। কিন্তু তিনি সেই টাকা দেননি তাদের। অর্জুন সিং বরাবরই এইরকম, লোকের থেকে টাকা নেবে আর সেই টাকা ফেরত দেবে না। তাই যে যেরকম সে সেইরকমই কথা বলবে।

শ্রী শ্যাম এর দাবি ভাটপাড়া পৌরসভায় চাকরি দেবেন বলে মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছেন তিনি। এমনকি পুলিশ এবং স্কুল টিচারের চাকরি দেওয়ার জন্যেও তিনি টাকা নিয়েছেন। প্রায় সবক্ষেত্রেই চাকরি দেওয়ার নাম করে তিনি মানুষের টাকা খেয়েছেন। তার মত নোংরা লোক আর নেই। কেউ নেই তার সাথে, ভাটপাড়ার মানুষও তার সাথে নেই। তার সাথে আছে কেবল দুষ্কৃতী, সন্ত্রাসবাদীরা। ভাটপাড়ায় মোট ১০৮ টা চোলাই আড্ডা আছে,তার থেকেও অর্জুন পয়সা নেয়। শুধু তাই নয়, ভাটপাড়ায় যত সাট্টা, হেরোইন, গাঁজার ব্যবসা আছে সবকিছু থেকে পয়সা নেন অর্জুন। অর্জুনের ইতিহাস ঘাটলে আরও অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে। রাত বারোটার পর তড়িৎ তোপদারের বাড়ি গিয়ে তার পায়ের কাছে পড়ে থাকত অর্জুন। আজকে বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ চডছে অর্জুন। কোথায় পাচ্ছে এত টাকা?

সোমনাথ জানান, ভাটপাড়া কো-অপারেটিভে বহু কোটি টাকার কেলেঙ্কারি রয়েছে। যখন তিনি ভাটপাড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন তখনই বহু কোটি টাকা তিনি তছরুপ করেছেন। তিনি আজ ব্যক্তিগত আক্রমন করে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে চোর বলছেন। আমি বলি, তার থেকে বড় চোর কোথাও নেই। যেদিন তদন্ত হবে সেদিন মানুষ জানতে পারবে অর্জুনের থেকে বড় চিটিংবাজ আর কেউ নেই। আমি বলব, তিনি মূত্র ত্যাগ করতে গেলেও তিনি মানুষের থেকে পয়সা নেবেন, এমন মানুষ তিনি।”