বিশ্ব কবিতা দিবস, বিশ্ব কবিতা দিবস! অরণ্য না থাকলে কী কবিতা হয়?
আজ বিশ্ব অরণ্য দিবসও।

অরণ্য সংবাদ
তমাল সাহা

অমাবস্যার আঁধারে গাছ হয়ে ওঠে অশরীরী।
তমিস্রা লেগে থাকে তার গায়ে। আমি গাছেদের কাছে যাই, ছুঁয়ে দেখি তাকে।
গাছ দাঁড়িয়ে থাকে আমার জন্য নিঃশব্দ পায়ে।

জ্যোৎস্নার রমণে মেতে ওঠে কি অরণ্য? গাছের ফাঁকে দেখা যায় চাঁদ তখন তোমার অসুখ খুব, ছুঁতে চাও আমার হাত।

হেমন্তের অরণ্যে ঝরে পড়ে পাতা। মর্মর ধ্বনি শুকনো পাতায়। আদরের গন্ধ লেগে থাকে ঠোঁটের উপত্যকায়।

আমি অরণ্যকে অরণ্য বলিনা, বলি অরণ্যা! বনানী!
অরণ্যের সন্ধি বিচ্ছেদ বড়ই কঠিন ঋ + অন্য= অরণ্য। অরণ্যের আঁধারে যে প্রেমিকাকে চুম্বন করেনি সে অরণ্যের কিছুই বোঝেনি।

বিস্তীর্ণ মালভূমি গিয়েছে ভেসে রক্তিম আভাসে। অশোক পলাশ দাঁড়িয়েছে কৃষ্ণচূঁড়া রাধাচূঁড়ার পাশে। তুমি এসে মুখের দিকে চোখ রাখো অনন্য আবেশে।

এইসব আরণ্যক বৃক্ষসমূহের দিকে তাকাও। দেখো নারীর মতো তারা দীর্ঘ ছড়িয়েছে বাহুলতা। কোনো কাণ্ডে তুমি খুঁজে পাবে নারীর সুডোল স্তন। কোথাও বা ফুলেল পাঁপড়ি প্রিয়তমার নরম ওষ্ঠের মতোন।
কি করে শরীরে তাহার করাত কুঠার চালাও? দুহাতে রক্ত মাখো, রক্ত ঝরাও!

এইসব দীর্ঘায়ত গাছ, গাছেদের পাতায় সূর্যের অমল রোদ, বৃক্ষদের ধারাস্নান, গাছের মাথায় সূর্যাস্তের রঙিন খেলা, জীবন জুড়ে দৃশ্যমান সারাবেলা।

প্রকৃতির সব জানে প্রিয়তমা বনানী।
জীবন যুদ্ধে জ্বালানি খুঁজে বেড়ায় কাঠকুড়োনি।
প্রণিপাত অরণ্যের পায়ের পাতায়, আমি আজন্ম ঋণী।

ছবিঃ প্রকৃতির খেয়ালে অরণ্য যখন অরণ্যা-নারী!