অবতক খবর,সংবাদদাতা :: ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসতো সংগ্রাম। ভালোবাসতো সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখতে। সেই স্বপ্ন দেখতে দেখতে কখন তার নিজের জীবনটাই থমকে দাঁড়াবে কখনো ভাবতে পারেনি তার পরিবার। বছর বত্রিশের সংগ্রাম ভট্টাচার্য। পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ। তাই এই করোনা অবহেও নিজের পেশাগত কারণে বেরোতে হয় তাকে। তার বাড়ি ভাটপাড়াতে। গত ১৪ই আগষ্ট শুক্রবার বাড়ি ফেরার সময় কল্যানীতে বাইক দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয় সে। তার চিকিৎসার জন্য তাকে ভর্তি করা হয় অ্যাপোলো হাসপাতালে। সেখানেই গতকাল তার মৃত্যু হয়। তার শেষ ইচ্ছা ছিল তার মৃত্যুর পরেও যেন সে অন্য কারোর মধ্যে দিয়ে বাঁচে।

সেই ইচ্ছে কে সম্মান জানিয়ে তার পরিবার তার অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করলো। সে চেয়েছিল তার অদেখা জীবন পূর্ণতা পাক অন্যজনের মাধ্যমে। তাই সংগ্রামের হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হবে হাওড়ার নারায়ণা হাসপাতালে। সেখানে ভর্তি ১৭ বছরের কিশোরীর শরীরে। সে হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছে। তার একটি কিডনি ও ত্বক যাবে এসএসকেএম হাসপাতালে। অপর একটি কিডনি ও যকৃৎ প্রতিস্থাপন করা হবে অ্যাপোলো হাসপাতালেই। কর্নিয়া যাবে দিশা চক্ষু হাসপাতালে। তার অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য তৈরি করা হবে দুটি গ্রিন করিডর। সেই পথ ধরেই তার অঙ্গ গুলো পৌঁছে যাবে অন্য হাসপাতালে যেখানে অপেক্ষায় আছে কয়েকজন রোগী। তার অঙ্গদানের মাধ্যমে তাদের শারীরিক সমস্যা মিটবে।

অবশেষে পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী হাওড়া নারায়ণ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পৌছালো বছর বত্রিশের সংগ্রাম ভট্টাচার্যর হৃদযন্ত্র। এখানেই বছর ১৭ র এক নাবালিকার শরীরে প্রথম প্রতিস্থাপিত হবে হৃদযন্ত্র। এদিন সন্ধ্যা প্রায় ৬ টা নাগাদ গ্রীন করিডোরে হাসপাতালে এসে পৌঁছায় সংগ্রামের হৃদযন্ত্র। নিজের মৃত শরীরের অঙ্গদানের মাধ্যমে সে বেঁচে থাকবে অনেকজনের মধ্যে। তাদের জীবন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে। এভাবেই নিজের সংগ্রাম নামটি সার্থক করে গেলো সে নিজেই।