অবতক খবর,৭ ফেব্রুয়ারি : ২৪ ঘণ্টায় তিন তিনটে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্ক। সিরিয়াতেও পড়েছে ভূ-কম্পনের প্রভাব। সোমবার ভোররাত ৪ টে ১৭ মিনিট নাগাদ প্রথম কেঁপে ওঠে দক্ষিণ তুরস্কের বিস্তির্ণ এলাকা। রিখটার স্কেলে তার মাত্রা ছিল ৭.৮। আর এই ভূমিকম্পের ১১ মিনিটের মধ্যেই ফের কম্পন। আফটারশকের তীব্রতা ছিল ৬.৭। গত কয়েক দশকে এরকম ভূমিকম্প তুরস্ক-সিরিয়া দেখেনি বলে দাবি করছেন অনেকেই। ভূমিকম্পের জেরে ভেঙে পড়েছে একের পর এক বহুতল। আর ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে ছিল কিছু তরতাজা প্রাণ। হু হু করে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বর্তমানে এই ভূমিকম্পের জেরে দুই দেশ মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ হাজারের কাছাকাছি। জানা যাচ্ছে ৩,৮০০ র বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে এখনও পর্যন্ত।

সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মোট তিনবার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মধ্য প্রাচ্যের দুই দেশ তুরস্ক ও সিরিয়া। তৃতীয়বার ভূমিকম্পে গ্রিনল্যান্ডেও কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরোদগান জানিয়েছেন, ১৯৩৯ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিপর্যয় এই ভূমিকম্প। স্থানীয় সংবাদ সংস্থা অনুযায়ী, গতকাল সন্ধেয় তৃতীয়বারের জন্য কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও সিরিয়া সীমান্ত। এই কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.৮। এই ভূমিকম্পে সিরিয়ায় কমপক্ষে ৮১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া তুরস্কে প্রায় ১৫০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিকে তুরস্কের বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থা জানিয়েছে, সোমবার বিকেলে আরও এক জোরালো একটি ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মধ্য তুরস্কের কাহরামানমারস প্রদেশ। দ্বিতীয় এই ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৭.৫ থেকে ৭.৬ এর কাছাকাছি। সিরিয়ার সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, নতুন করে জোরালো কম্পন অনুভূত হয়েছে দামাস্কাস, লাতাকিয়া-সহ সিরিয়ার বেশ কয়েকটি প্রদেশেও।

সকালে প্রথম ভূমিকম্পে কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক ও উত্তর সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ। এই কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.৮। তারপর একাধিক আফটার শক অনুভূত হয়েছে। এতে দুই দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের রীতিমত কাঠামো পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। এদিকে দুই দেশের এই বিপর্যয়ের পরিস্থিতিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে একাধিক দেশ। একটি সরকারি অনুষ্ঠান থেকে তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পে দুঃখ প্রকাশ করে সাহায্যের কথা জনিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারত থেকে উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য ১০০ সদস্যের NDRF টিম পাঠানো সহ একাধিক সাহায্য পাঠানো হচ্ছে। তীব্র ঠান্ডাতেও ছাদহীন হয়ে রাস্তাতেই কোনও রকমে রাত কাটালেন তুরস্ক-সিরিয়ার একাধিক নাগরিক। সিরিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আলেপ্পো, লাটাকিয়া, হামা ও টারটাসের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এদিকে তুরস্ক ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোকের ঘোষণা করেছে।