খিস্তির কারণ, দ্বিতীয় কিস্তি

হে শ্লীল ভদ্রমহোদয়
তমাল সাহা

যে লোকটি তোমার যুক্তিতে অশ্রাব্য কুশ্রাব্য খিস্তিখেউড় করে, সে কিন্তু তোমার মতো অতো পণ্ডিত না হলেও অশিক্ষিত নয়।
তোমার বক্তব্য, লোকটি খিস্তি দেয় কেন?
খিস্তিতে তোমার আপত্তি ভয়ঙ্কর।
সহজ কথা শোনো হে সুধী প্রবর!
সে খিস্তি দেয় সজ্ঞানে বোধ থেকে।
তোমার বিন্দুমাত্র ঘৃণাবোধ নেই
সহ্য করে যাওয়াই যে তোমার স্বভাব
তার সঙ্গে তোমার এখানেই তফাৎ।

সে তোমার সঙ্গে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে
সামাজিক মেলামেশায়
এসব শব্দবন্ধ ব্যবহার করে না,
ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাগে উত্তেজনায়
এবং শ্রেণিঘৃণায়। কাকে বলে শ্রেণিঘৃণা,বোঝো?
তার এই উচ্চারণ ব্যক্তিবিশেষের প্রতি নয়,
রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, সিস্টেমের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে।

তুমি ভোট দিয়ে রাষ্ট্রকে ক্ষমতায় বসালে
রাষ্ট্রের আঙুল ফুলে কলাগাছ অথচ তোমাকে দিচ্ছে না ভাত।
তোমার হাতে অস্ত্র নেই, তুমি নিরস্ত্র
তখন তোমার হাতে শব্দই ব্রহ্ম-শব্দই অস্ত্র শব্দাস্ত্র।
তুমি বলবে না, ভাত দে হারামজাদা!

তুমি যে বর্ণ দিয়ে ভালোবাসার ইন্টু মিন্টু সেন্টু পেন্টু শব্দগুলি তৈরি করো
সেই বর্ণগুলি দিয়েই তোমার কর্ণবিদীর্ণ শব্দগুলি নির্মাণ হয়, কখন কি শব্দের ব্যবহার জানতে হয়!

ইহার পর রণবিশারদ শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে মহাবিশ্বরূপ প্রদর্শন করাইলেন। কহিলেন,হে সখা! ধনুতে শব্দবাণ সংযোজন করো, যুদ্ধং পরমং ধর্মম!