অবতক খবর,২৯ ডিসেম্বর : বাগনানে রাঁচির ইউটিউবার খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হল তাঁর স্বামী পেশায় পরিচালক বলে দাবি করা প্রকাশকুমার ঝাঁকে। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিনেত্রী ইশা আলিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে বাগনান থানায় এটা লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল প্রকাশ কুমারের বিরুদ্ধে। তার ভিত্তিতেই গ্রেফতারি। এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেনসিক টিম। গাড়ির ভিতর থেকেও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। গাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছে কার্তুজের খোল, তাতেই সন্দেহ বাড়ে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, গাড়ির ভিতর ঢুকে গুলি চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সে সময় গাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন অভিনেত্রী। স্বামীর হাতে বন্দুক ছিল কিনা, সেটাও পরীক্ষা করে দেখছেন তদন্তকারীরা। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকেই যে গুলি চালানো হয়েছিল, তার প্রমাণ ইতিমধ্যেই হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। যদিও গাড়ির ভিতর রক্তের কোনও দাগ মেলেনি বলেই জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি না করা হলে, এভাবে কানের পিছন থেকে বুলেট ফুঁড়ে যেতে পারে না। প্রথম থেকেই অভিনেত্রীর স্বামীর বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি পাচ্ছিল পুলিশ। তাঁকে বুধবার থেকেই টানা জেরা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার ভোরে বাগনানে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কে মহিষরেখা ব্রিজের কাছে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন রাঁচির ইউটিউবার ইশা আলিয়া। আড়াই বছরের মেয়ের সামনেই গুলি করা হয় তাঁকে। তাঁর স্বামীর বক্তব্য ছিল, তাঁরা ঝাড়খণ্ড থেকে কলকাতায় আসছিল। বাগনানের ওই এলাকায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে প্রাতঃকৃত করতে গিয়েছিলেন প্রকাশ কুমার। তখনই নাকি দুই দুষ্কৃতী এসে গাড়ি ঘিরে ধরে। তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। বাধা পেয়ে গুলি চালায়। প্রকাশকুমার আসা পর্যন্ত দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। এরপর গাড়ির ডিকিতে স্ত্রীকে তুলে আড়াই কিলোমিটার এগিয়ে যান তিনি। সেখানে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সহযোগিতায় উলুবেড়িয়া হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁর স্ত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই গোটাটাই পুলিশকে জানিয়েছে প্রকাশ কুমার ঝাঁ। তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী, গাড়িতে কোনও রক্তের দাগ ছিল না। ছিনতাই হলে যেভাবে ধস্তাধস্তি হয়, তারও প্রমাণ মেলেনি। ফলে প্রকাশকুমারের কথাতে অসঙ্গতি রয়েছে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।