অবতক খবর,৭ জুন: শুরু এবং শেষ জানা ছিল আগেই। কিন্তু শুক্রবার দুপুরে এনডিএ-র নেতা হিসাবে নরেন্দ্র মোদীর পুনর্নির্বাচন পর্বের বাকি অংশে ‘চমক’। বক্তাদের তালিকায়, শরিকি ঐক্যের ছবি তুলে ধরায়, এমনকি ব্যক্তি মোদীর পরিবর্তে এনডিএ-র ‘মাহাত্ম্য’ প্রচারেও। যা দেখে বিরোধীদের একাংশ প্রধানমন্ত্রীর এক দশক আগেকার স্লোগানে ঈষৎ মোচড় দিয়ে বলছেন, এ হল ‘সব কা সাথ, মোদী কা বিকাশ’। অর্থাৎ, নিজেকে তুলে ধরার জন্য সকলের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে মোদীকে।

বাস্তবে হলও তা-ই। এনডিএ-র একের পর এক শরিক দলের নেতা মোদীর প্রশস্তি গাইলেন। এনডিএ তো বটেই, বিজেপির অন্দরেও যে নেতার সঙ্গে মোদীর সম্পর্ক ‘মসৃণ’ নয় বলেই শাসক শিবিরের সকলে জানেন, তাঁকেও বক্তৃতা দেওয়ানো হল। মোদীর ‘সার্বিক গ্রহণযোগ্যতা’ তুলে ধরতেই পুরনো সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলের ওই বৈঠকে বিজেপি এবং সহযোগী দলগুলির লোকসভা সাংসদদের পাশাপাশি ‘আমন্ত্রিত’ তালিকায় ছিলেন রাজ্যসভা সাংসদেরাও। আমন্ত্রিত ছিলেন বিজেপি এবং এনডিএ শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। একেবারে সামনের সারিতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

শুক্রবারের যে বৈঠকে বার বার এনডিএ-র ঐক্যের ছবি তুলে ধরার চেষ্টা হল, ঘটনাচক্রে মোদীর দ্বিতীয় দফার প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রথম চার বছরে সেই জোটের কোনও বৈঠকই হয়নি! গত বছরের ১৮ জুলাই বেঙ্গালুরুতে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র আনুষ্ঠানিক আবির্ভাবের দিনে দিল্লিতে এনডিএ-র শরিকদের নিয়ে প্রথম বৈঠক করেছিলেন মোদী, অমিত শাহ, জেপি নড্ডারা। গত পাঁচ বছরে এনডিএ-র সেটিই প্রথম এবং সেটিই শেষ বৈঠক!

তাঁর নেতৃত্বে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা না-পেলেও মোদীর প্রতি ‘বিশ্বাস’ যে সকলের অটুট, তা তুলে ধরতে ওই বৈঠক সরাসরি (লাইভ) সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল খবরের চ্যানেলে। যা হয়ে থাকে সংসদের অধিবেশন চলার সময় বা সংসদ শুরুর আগে যৌথ অধিবেশনের ক্ষেত্রে। এনডিএ বা অন্য কোনও জোটের বৈঠক এ ভাবে সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা স্মরণকালের মধ্যে হয়েছে বলে তথ্যাভিজ্ঞেরা মনে করতে পারছেন না।

সূত্রের খবর,১৬ জন লোকসভা সাংসদের দল টিডিপির প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডু এবং ১২ লোকসভা সাংসদের দল জেডিইউ-এর সভাপতি নীতীশ কুমারকে পিছনে ফেলে এনডিএ-র অ-বিজেপি নেতাদের মধ্যে প্রথম বক্তা হিসাবে শুক্রের বৈঠকে দেখা গেল জেডিএসের এইচডি কুমারস্বামীকেও। নায়ডু এবং নীতীশের পরে শিবসেনার একনাথ শিন্ডে, এনসিপির অজিত পওয়ার, এলজেপি (রামবিলাস)-এর চিরাগ পাসোয়ান, হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চা (হাম) সভাপতি জিতনরাম মাঝিঁ, আপনা দল (এস) নেত্রা অনুপ্রিয়া পটেল, জনসেনা পার্টির পবন কল্যাণের মতো সহযোগী নেতারাও বক্তার তালিকায় ছিলেন।

এর মধ্যে সবচেয়ে উচ্ছ্বসিত শুনিয়েছে রামবিলাস পাসোয়ানের পুত্র চিরাগকে। মোদীর স্তুতি হয়ে যাওয়ার পরে সটান গিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন। বুকে জড়িয়েও ধরেন মোদীকে।