শ- বর্ণের শব্দগুলি জেগে উঠলো
তমাল সাহা

হঠাৎ দেখি শ-বর্ণটি গভীর শ্বাসাঘাত নিয়ে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
শরৎ শব্দে এত গভীর আয়োজন লুকিয়ে ছিল কোনদিনও তেমন করে ভাবিনি।
উঠে দেখি শিউলিতলায় শিউলি ফুলগুলি শিশির মেখে শুয়ে আছে।
আকাশ শ- বর্ণটিকে প্রাধান্য দিয়ে শাদা মেঘ নিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে। মাটিতে তাকিয়ে দেখি সবুজ শষ্পে ভরে গেছে মাঠ। শাদা কাশগুলি শির উঁচিয়ে, তাদের শরীরেও শারদ বাতাসের শিরশিরানি।
সরোবরের বুক জুড়ে ফুটে আছে সাদা শাপলা ফুল, বিস্তীর্ণ এক শামিয়ানা।

একটু শুনশান নির্জনতায় হাঁটতে হাঁটতে দেখি দাঁড়িয়ে আছে শাল শিরীষ শমীবৃক্ষগুলি।
মাথায় তাদের সবুজ পাতার শিরস্ত্রাণ।
প্রকৃতির শরীরে একটা বিশাল শোরগোল।
কেউ কি আসবে?

শৈল শহর থেকে কয়েক ফোঁটা শিশিরের জল পড়ল মর্তভূমে। বোধ করি শৈলেশ্বর শিব কয়েকদিন একা হয়ে যাবে, তার কারণে শোকের শান্ত অশ্রু ঝরে পড়ে।
একাকীত্ব কাকে বলে এর থেকেই তো শেখা যায়!

আমাদের শরণ্যা শৈলজা আসবে। আরে শাঁখ তো বেজে গেছে! শঙ্খধ্বনিতে শব্দায়মান শস্যভূমি। শাস্ত্র মতে উচ্চারিত হচ্ছে শ্লোক। এতো শ্লথ কেন গতি?
শঙ্করী বলে, তুমি আর কি বুঝবে হে নীলকন্ঠ শিবশঙ্কর! আমার বিষাদের ভাষা কি তুমি শুনতে চেয়েছ কোনদিনও? স্পর্শ ছাড়া কেউ কি বাঁচে, না কাউকে বাঁচাতে পারে?
ছাড়ো! ছাড়ো! তোমার দুহাতের চাপে যে ধরাশায়ী হয়ে যাবো!
দেরি করো কেন, তোমাকে তো যেতে হবে কতটা পথ! সশস্ত্র হতে হবে দশটি হাতে। তুমি তো আবার দশভুজা! তোমার সব অস্ত্রে শান দেওয়া হয়েছে তো? শত্রুদলনী তুমি!

এদিকে এসো, শুদ্ধ শাড়িতে আর শোলার সাজে সাজিয়ে দিই আমি।
শাসক শব্দটি খারাপ নয়। শিক্ষকও তো শিক্ষার্থীকে শাসন করে। রাষ্ট্রীয় শাসক ওখানে শোষক হয়ে গিয়েছে। এবার গেলে শোষণের চেহারা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করতে পারবে।
অনুশাসন ও শাস্তি প্রদানের দায়িত্ব তো তোমাকেই নিতে হবে।
শোনো,মানবভূমি যেন আর শয়তানসংকুল না থাকে। সেখানে যেন শান্তি বজায় থাকে। শোক ও শবের কাহিনী সব মুছে দিয়ে এবার ফিরে এসো কিন্তু!