অবতক খবর,১৩ ফেব্রুয়ারি,নববারাকপুর :রবিবার বিশ্বমাতা মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হল ২১তম শ্রীসমীরেশ্বর উদ্‌ঘাটন সাংস্কৃতিক উৎসব ৷ আসাম, ত্রিপুরা, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক সহ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের এবং বিদেশের শ্রীলঙ্কা থেকে উপস্থিত হয়েছিলেন ধ্রুপদী সংগীত এবং নৃত্যের শিল্পীরা ৷ কলকাতা বিমানবন্দরের পাশে নব ব্যারাকপুরে বিশ্ব সেবাশ্রম সঙ্ঘের আয়োজন প্রতি বছরই ধ্রুপদী সাংস্কৃতিক অনুূষ্ঠান আয়োজিত হয় ৷

বিকালের অস্তমিত সূর্যশোভায় সংগীত শুরু হল কর্ণাটকের কৃষদ্ধ মুখেদকরের কণ্ঠে৷ শিল্পী প্রথমেই রাগশ্রীতে মধ্যলয়ে ঝাপতালে বন্দিশ ধরলেন—‘হরি কী চরণ কমল নিশদিন সুমার রে’৷ এরপর ছোট খেয়াল ‘চরণ রি মাই রামসিয়া দর্শন কো’৷ রাগ ভাটিয়ারে গুরু পণ্ডিত নরিসিংহালু ভাদাভাটিজীর লেখা একতালে আরেকটি খেয়াল —মাতা মহাকালী ছিল কৃষদ্ধর কণ্ঠে অনবদ্য৷ শিল্পী শেষ করলেন দাদরায় নিজের গুরুমা পদ্মবিভূষণ গিরিজাদেবীর লেখা—‘দিওয়ানা কিয়া শ্যাম’ গেয়ে৷ প্রথমেই শ্রোতৃবৃন্দের মন জয় করে নিলেন তরুণ কৃষদ্ধ মুখেদকর৷ এরপর মঞ্চে উঠলেন গিরিজাদেবী আরেক কৃতি ছাত্রী ত্রিপুরার শক্তি চক্রবর্তী৷ শক্তিদেবী শুরু করলেন মিশ্র খাম্বাজের ঠুম্‌রি দিয়ে৷ পরে দাদরা৷ শেষ করলেন বাংলা ভক্তিগীতি দিয়ে৷ শ্রোতৃবৃন্দের মনজয় করলেন তিনিও৷ অনুষ্ঠানে ছিল কবিতা পাঠও৷ অভিনেত্রী হিসাবেই পরিচিত দোলন রায় অনবদ্য বাচিক ভঙ্গিমায় সাত মিনিটের দীর্ঘ কবিতা ‘সাধারণ মেয়ে’ পরিবেশন করলেন সাবলীলভাবে৷৷

না দেখে এতবড় দীর্ঘ কবিতা কণ্ঠস্থ অভিনেত্রীর৷ নিময়িত চর্চাব্যতিত এ সম্ভব নয়৷ নব ব্যারাকপুরের থানার ওসি সুমিত বৈদ্যও চাকুরীর অতিব্যস্ততায় কবিতা চর্চা করেন জানা ছিলনা৷ সুমিতবাবু নিজের লেখা একটি কবিতা পাঠ করলেন৷ একই মুন্সিয়ানার পরিচয় দিলেন কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায়বিচার এবং ক্ষমতা উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ড. রামদাস আটায়ালেও৷ এদিন অনুষ্ঠানে মঞ্চে মন্ত্রীর হাতে ‘লোককল্যান অ্যাওয়ার্ড’ তুলে দিলেন বিশ্ব সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীসমীরেশ্বর ব্রহ্মচারী মহারাজ৷ সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ চ্যাপ্ঢারের সামাজিক ন্যায়বিচার সমন্বয়কারী সত্যজিৎ দাসের একটি তৈলচিত্রও নিজের হাতে এঁকে উপহার দেন শ্রীসমীরেশ্বর মহারাজ৷ শিল্পকলায় গুণী এই আধ্যাত্মিক ব্যক্তির টানেই দেশ বিদেশের শিল্পীর ছুটে আসেন বিশ্বমাতা মন্দির প্রাঙ্গণে৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাসজীও তাঁর স্বভাবরসিক ভঙ্গিমায় কবিতার আকারেই বক্তব্য রেখে সবার মন জয় করে নেন৷ মুম্বাইয়ের ওডিশি নৃত্যশিল্পী স্বপ্ণকলা দাশগুপ্ত পরিবেশন করলেন ‘কালী’, আসামের সক্ষিত্র শিল্পী ঊষারাণী বৈশ্য পরিবেশন করলেন ‘রাম’৷ মুম্বাইয়ের শমিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায় পরিবেশন করলেন ওডিশি নৃত্য৷ শ্রীলঙ্কা থেকে নৃত্যে ছিলেন তরঙ্গা দেশনায়কা৷ স্বপ্নকলাএবং শর্মিষ্ঠা, ঊষারাণী এবং তার ছাত্রীর যৌথ পরিবেশন ছিল অনবদ্য৷ এবছর সুধা দত্ত ডান্স অ্যাওয়ার্ড পেলেন ঊষারাণী বৈশ্য৷ ধ্রুপদী অনুষ্ঠানে এত জনসমাগম এখন খুবই বিরল৷ যা দেখা গেল এখানে৷ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্লাব, সামাজিক সংগঠন এবং ব্যক্তিকেও উদ্‌ঘাটন সম্মান প্রদান করা হয়।

বিশ্ব সেবাশ্রম সঙ্ঘের ‘শ্রীসমীরেশ্বর উদ্‌ঘাটন সাংস্কৃতিক উৎসবে’ কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় বিচার এবং ক্ষমতা উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ড. রামদাস আটয়ালে-কে ‘লোককল্যান সম্মান’ প্রদান করছেন শ্রীসমীরেশ্বর ব্রহ্মচারী ৷ ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ চ্যাপ্ঢারের সামাজিক ন্যায়বিচার সমন্বয়কারী সত্যজিৎ দাস৷