অবতক খবর,১৩ ডিসেম্বর:শরিকী জমি জবরদখলের অভিযোগ। জেসিপি দিয়ে পুকুর ভরাট, গাছ কাটা হল। পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধেই মদতের অভিযোগ।
প্রায় ভরাট হয়ে গিয়েছে দশ কাঠারও বেশি একটা জলাশয় । সঙ্গে রাস্তার পাশে থাকা নয়ানজুলি । কেটে সাফ হয়ে গিয়েছে গাছপালা, বাগান । অভিযোগ অন্যান্য শরিকদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে এই কাজ করেছেন নদীয়া জেলার পলাশী মীরা বাজারের বাসিন্দা রাজকুমার আগরওয়াল ওরফে রাজু বাবু । আরও মারাত্মক অভিযোগ, এই কাজে তাকে সহায়তা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ ঘোষ ।

যিনি আবার মুর্শিদাবাদ জেলার একজন পুলিশ কর্মী । এলাকায় প্রভাবশালী বলে নাম ডাক আছে তাঁর । পলাশী স্টেশন সংলগ্ন রেলগেটের কাছে একটি হোটেল এবং রেস্টুরেন্টও রয়েছে তাঁর । আগরওয়াল পরিবারের তরফে অন্যান্য শরীকরা এই নিয়ে পুলিশ এবং প্রশাসনের কাছে জানানোর পাশাপাশি আদালতের দারস্থ হয়েছেন । আদালত ইনজাংশন জারি করার পরেও থামে নি কাজ । অবশেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে কাজ বন্ধ হয়েছে । কিন্তু ভরাট হওয়া জলাশয়ের পাশে এখনও দাঁড়িয়ে আছে জে সি বি । বৃহস্পতিবার সকালে কালিগঞ্জ থানার অন্তর্গত মীরা বাজার আর ও পি -র আধিকারিকের কাছে আদালতের নির্দেশের কপি সহ লিখিত অভিযোগ করেন আগরওয়াল পরিবারের অন্যান্য শরীকরা । এরপর নিজের বাড়িতে গিয়ে বাধা পান ঢুকতে । প্রায় কুড়ি -বাইশ বছর ধরে নিরাপত্তারক্ষীর দায়িত্ব থাকা হালিম শেখ গেটের তালা খুলতে অস্বীকার করেন ।

বাড়ির মালিকদের ঢুকতে দিতে বারণ করার বিষয়টি ভালো লাগে নি হালিম শেখেরও । কিন্তু রাজকুমার আগরওয়ালের নির্দেশ মেনে এই কাজ করতে হয়েছে বলেও ক্যামেরার সামনে দাবি করেছেন তিনি ।

শেষ নয় এখানেই । বসতবাড়ি, বাগান, জলাশয় মিলিয়ে প্রায় সাত বিঘে জমির দশ শরিকের একজন রাজকুমার আগরওয়াল কাউকে না জানিয়ে একটি কোম্পানিকে ভাড়া দিয়েছেন বাড়ির একাংশ । সেখানে শাখা অফিস ছাড়াও আছে দোতলায় দূর -দূরান্ত থেকে আসা কর্মীদের সাময়িক থাকার ব্যবস্থা । এই সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী কৌশিক দে জানিয়েছেন, তারা চলতি বছর এই বাড়িতে অফিস এবং থাকার জায়গা ভাড়া নেন । এর বাইরে তাঁর আর কিছুই জানা নেই ।

এই সম্পত্তির শরিক বলরাম আগরওয়াল এবং প্রমোদ আগরওয়ালের অভিযোগ, ডিসেম্বরের শুরুতে সবাইকে অন্ধকারে রেখে গাছ কাটা, পুকুর ভরাট, নয়ানজুলি ভরাটের কাজ শুরু হয় । লোক মারফত খবর পেয়ে ফোন করায় রাজকুমার আগরওয়াল তো বটেই পুলিশ কর্মী ইন্দ্রজিৎ ঘোষ ফোনে রীতিমতো হুমকি দেন তাঁদের । আদালত ইনজাংশন দেওয়ার পর পুলিশ কাজ বন্ধ করেছে, তবে ততদিনে গাছগাছালি কেটে নয়াণজুলি ভরাট করে পুকুর বোজানোর কাজ প্রায় শেষ ।

স্থানীয় বাসিন্দা শিবনাথ মন্ডলও জানিয়েছেন, পুকুর ভরাট হয়েছে । গাছ কেটে সাফ হয়ে গিয়েছে । পুকুর ভরাটের জন্য ব্যবহৃত জে সি বি এখনও দাঁড় করানো রয়েছে জমির একপাশে । জে সি বি -র চাকার দাগ এখনও স্পষ্ট জমির সর্বত্র ।