১৯৩৬ সালে এই মহান বিপ্লবী মানুষটি কাঁচরাপাড়ায় এসেছিলেন সিটি বাজার অঞ্চলে অগ্রদূত ক্লাবে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন এবং কমিউনিস্ট সংগঠনের প্রচার বিষয়ে আলোচনা করতে। সেই আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন অমূল্য উকিল, সকুনা আহমদ, সত্যব্রত দত্ত, সমর ব্যানার্জি, বনমালী দাস, পশুপতি বিশ্বাস, নিশীথ ঘোষ।
তিনি হলেন বিবেক সন্ন্যাসী বিবেকানন্দ নরেন্দ্রনাথের কনিষ্ঠ ভ্রাতা ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত। ৪ সেপ্টেম্বর তাঁর জন্মদিন।

লেনিনের সঙ্গে যে ছেলেটি আলোচনায় বসেছিল
তমাল সাহা

যে ছেলেটি পরিবারে ছিল একটু অন্য ধাঁচের, ডানপিটে তার স্বভাব
তার তো দুনিয়া জুড়ে বিশাল কাণ্ডকারখানা তার নাম আমারও নয় খুব জানা!

যে ছেলেটিকে নিবেদিতা স্নেহের জাতক বলে ভাবতো, আদরে ডাকতো ‘ভূ’ নামে– আর তার দাপুটে ছেলে জেলখানা থেকে বেরিয়ে আসতেই যার হাতে তুলে দিয়েছিল উপহার দুটি বই–পিটার ক্রপ্টোকিনের ‘মেমোয়ার্স অফ আ রিভলিউশনারিস্ট’ ও ‘ইন রাশিয়ান এন্ড ফ্রেঞ্চ পিজনস’ এবং মাৎসিনির রচনাগুচ্ছ তার কথা মনে রাখে কে?

যে ছেলেটি বিপ্লবী দলের পর বিপ্লবী দলের সঙ্গে সংযোগ রেখেছে—
ব্যারিস্টার পি মিত্রের নিখিল বঙ্গ বৈপ্লবিক সমিতিতে যোগ দিয়েছে, যুগান্তর-অনুশীলন দলের কাছে এসেছে, মিশেছে বিদেশে গদার পার্টির সঙ্গে তাকে কে না ভালোবাসে?

যে ছেলেটির হাতে বিপ্লবী অরবিন্দরা তুলে দিয়েছিল যুগান্তর পত্রিকার দায়ভার
যে ছেলেটি ছদ্মবেশ ধারণে ওস্তাদ
একের পর এক পেরিয়ে যায় বাধা
কখনো আমেরিকা কখনো বার্লিন
তার আগেই ছেলেটি সোনার বাংলা বিপ্লবী ইশতেহার বিলি করে গ্রেফতার
তাকে কি আমাদের মনে রাখা দরকার?

ছেলেটি হয়ে গিয়েছিল বার্লিন কমিটির প্রেসিডেন্ট তখন সে সমাজতন্ত্রের চিন্তাভাবনায় মশগুল
ভারতে ফিরেই শ্রমিক কৃষক আন্দোলনের কর্মসূচি–ট্রাম-জুট- প্রেস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের নেতা হয়ে গিয়েছিল
তার কথা কার মনে আছে,
সে কি আছে আমাদের মণিকোঠায়!

গবেষণালব্ধ মন তার, সাম্যের চিন্তা চেতনায় ঋদ্ধ, সাহিত্য নৃতত্ত্ববিদ্যা সেসব কত আয়োজন করেছিল সে জীবনে
তার কতটুকু আমরা জানি?

ছেলেটি মসকোতে কমিন্টার্ণের বৈঠকে লেনিনের সামনে দাখিল করলো গবেষণা দলিল,মাতলো আলোচনায়
উপস্থিত প্রাজ্ঞ কমিউনিস্ট এম এন রায়
ছেলেটিকে আমরা বিস্মরণে যেতে পারি
প্রয়োজন হলে খুলে দেখে নিও তাকে একবার মুক্তিযুদ্ধের পাতায়।