অবতক খবর,১৬ মার্চ: উত্তপ্ত রয়েছে বীজপুর। কারণ কংগ্রেস গোষ্ঠীর ERMC (Estern Railway Men’s Congress)-এর কাঁচরাপাড়া ওয়ার্কশপে আজ নির্বাচন ছিল কিন্তু এই নির্বাচনে তৃণমূল সম্পূর্ন ব্রাঞ্চ দখল করতে সরাসরি মাঠে নেমে পড়ে। তাই অফিসিয়াল গোষ্ঠীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তারাও পাল্টা কমিটির প্যানেল তৈরি করে জমা দেয় । তারা অফিসিয়াল গোষ্ঠীকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দিতে চেষ্টা চালায়, আর তাতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কাঁচরাপাড়া রেল ওয়ার্কশপ চত্বর।

জানা গেছে, ব্রাঞ্চ কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এতদিন যে পুরনো কমিটি ছিল তা নারায়ণ সিং,এর গোষ্ঠীই গঠন করেছিল। তিনি কাঁচরাপাড়া ওয়ার্কশপ ERMC-র কাঁচরপাডা ব্রাঞ্চ থেকে নির্বাচিত হয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিতে তিনি সহ সভাপতি রয়েছেন। তিনিও শাসক গোষ্ঠী তৃণমূল কে সঙ্গে রেখেই কাজ করে গেছেন কিন্তু এবার তৃণমূল সরাসরি ক্ষমতা নিজে দখল করতে উদ্যোগী হয়।

নতুন প্যানেল এবার দিয়েছেন সন্দীপ রায়। তার পক্ষে রয়েছেন শাসক দলের মেজো ভাই । অন্য দিকে নারায়ণ সিং কে সাপোর্ট করছেন বীজপুরের শাসক দলের এক ছোট ভাই। রেলের ইউনিয়ন দখল নিয়ে দুই ভাইয়ের গোষ্ঠী কোন্দল এখন চরমে। তবে এদিন এই ভোটকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। ৩ বছর অন্তর নতুন কমিটি গঠিত হয়।

শনিবার ভোটের সময় ছিল দুপুর 1:30 নাগাদ কিন্তু সকাল থেকেই শুরু হয়ে যায় গন্ডগোল। দফায় দফায় দুই গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়ায়।কারখানা চারপাশ ঘিরে ফেলেন মেজো ভাইয়ের সমর্থকরা । নারায়ণ গোষ্ঠীকে ভারী দেখে হই চই শুরু করে দেন সন্দীপ ও তার সমর্থকরা। অবস্থা বেগতিক দেখে বীজপুরের এক বড় লিডার শেষমেশ সমর্থন করে ফেলেন পুরনো কমিটিকে। তিনি পুলিশ কে রেলের নির্বাচনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে বারণ করে দেন।আর তাঁর এই সমর্থনের পরেই গন্ডগোল আর বেশি বেঁধে যায়।

জানা গেছে, কয়েকদিন আগে এই ভোটকে কেন্দ্র করে সন্দীপ রায় যিনি এবার নতুন প্যানেল দিয়েছেন তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছিল,এমনকি মারধরও করা হয়েছিল। কিন্তু এই খবর পাওয়ার পর যখন সন্দীপ বাবুকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি এই বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।

এরই মধ্যে বিরোধী ইউনিয়নের সদস্যরা বলছেন, ERMC তে এত গন্ডগোল আগে ছিল না। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস ইউনিয়ন দখল করতেই এই সমস্যা শুরু হয়ে যায়।এখন রেলে এখন অনেক বড়-বড় কাজ আউটসোর্সিং এ হচ্ছে । এই কাজের দখল কে নেবে এই নিয়ে গন্ডগোল। আর এই দখলদারিতে ঢুকে গেছে তৃণমূল। ERMC কংগ্রেসের ইউনিয়ন। যতদিন আবুদা বেঁচে ছিলেন ততদিন তৃণমূল রেলে নাক গলাতে পারেনি কিন্তু তার মৃত্যুর পর ERMC তে তৃণমূল ঢুকে পড়ে। রেলে তৃণমূলের কোন অফিসিয়াল ইউনিয়ন নেই। কিন্তু এই ইউনিয়নে তৃণমূল নেতারা ঢুকে এই গন্ডগোল শুরু করে দিয়েছেন। তবে শাসকদলের মেজো ভাই অনেক রকমভাবে চেষ্টা চালাচ্ছেন কিভাবে সন্দীপ রায়ের প্যানেলকে জেতানো যায়। কিন্তু ছোট ভাইও কম নয়, তিনিও নিজের সমর্থিত প্যানেলকে জেতানোর সবরকম চেষ্টা করেছেন।

তবে শেষমেশ দেখা গেল,এই ভোটকে কেন্দ্র করে হাতাহাতিতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাদেরকে তড়িঘড়ি রেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

বিরোধী গোষ্ঠী বলছে, তৃণমূল নেতারা সমস্ত ইউনিয়ন দখলের চেষ্টা করে এই গন্ডগোল করছে। পরবর্তীতে আরপিএফ এই গন্ডগোলের খবর বীজপুর থানায় জানান। ঘটনাস্থলে আসে বীজপুর পুলিশ। পুলিশ জানায়,ব্যালটের মাধ্যমে আপনারা নির্বাচন করুন। হাত তুলে নির্বাচন করা ঠিক নয়।

সময় হয়ে গেলেও গন্ডগোলের জন্য নির্বাচন শুরু করা যায়নি অবশেষে আজকের এই নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। কেন্দ্রীয় কমিটির পাঠানো দুজন অবজার্ভর দুই পক্ষের প্যানেল জমা নেন ও সমস্ত খবর সংগ্রহ করে জমা দেবেন বলে জানান। তিনি আরো জানান কিছু যুবক হই হট্টগোল করে ইউনিয়ন দখল করতে চান ।

বিরোধীরা বলছেন, সমস্ত গন্ডগোল কামাইয়ের জন্য। শেষমেষ নেতা-নেতা এক হবে,ভাই-ভাই মিল হবে,মার খাবে শুধু কর্মীরা।