অবতক খবর,২১ নভেম্বর,মালদা:সানু ইসলাম: চাঁচলের বিধায়ক নীহার রঞ্জন ঘোষের তত্ত্বাবধানে ঢালাই রাস্তার শিল্যানাস অনুষ্ঠান নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক।কার তত্ত্বাবধানে হচ্ছে এই রাস্তার কাজ? কৃতিত্ব কার?এই নিয়ে শুরু হয়েছে জলঘোলা।জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতির দাবি রাজ্য সরকারের গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের তহবিলের বরাদ্দকৃত অর্থে রাস্তার কাজের শিল্যানাস অনুষ্ঠান হয় জেলাপরিষদের তত্ত্বাবধানে।কারণ এই রাস্তার কাজের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে।কিন্তু কাউকে না জানিয়েই শিল্যানাস অনুষ্ঠান হচ্ছে বিধায়কের তত্ত্বাবধানে। এই অভিযোগে তুলেই ক্ষোভ প্রকাশ জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি এবং স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্যার।শিল্যানাস অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেন না জেলা পরিষদের কোন প্রতিনিধি। এমনকি অনুষ্ঠান নিয়ে অবগত নন সভাধিপতিও। কোনরকম বোর্ড ছাড়ায় শুধু মাত্র ব্যানার দিয়ে হল শিল্যানাস অনুষ্ঠান।সমগ্র অনুষ্ঠান নিয়ে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।যা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।

চাঁচল ১ নং ব্লকের মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মেহেরালি মোড় থেকে আনোয়ার হোসেনের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ১.২ কিলোমিটার রাস্তা ঢালাইয়ের কাজের জন্য প্রায় এক কোটি তিন লক্ষ টাকা অর্থ বরাদ্দ হয়েছে রাজ্য সরকারের গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের তহবিল থেকে। সেই রাস্তারই শিলান্যাস করেন চাঁচলের বিধায়ক নিহার রঞ্জন ঘোষ।বিধায়ক ছাড়াও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্লক এবং অঞ্চল তৃণমূলের বেশ কিছু নেতৃত্ব। কিন্তু উপস্থিত ছিলেন না জেলা পরিষদের কোন প্রতিনিধি।আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।মালদা জেলা পরিষদ সূত্রের খবর ২০১৯ সালে এই রাস্তা ঢালাই করার প্রস্তাব দেন তৎকালীন স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য সামিউল ইসলাম।জেলার আরো বেশ কয়েকটি রাস্তার সঙ্গে এই রাস্তা ঢালাই করার কাজেরও প্রস্তাব আরডিএফ করে রাজ্য সরকারের গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরে পাঠান তৎকালীন সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন।

সেই প্রস্তাব অনুযায়ী জেলার মোট ১৮ টি রাস্তা (৬০ কিমি) রাজ্য সরকারের গ্রাম উন্নয়ন দপ্তর তহবিলের মোট ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দকৃত অর্থে ঢালাই এর কাজ শুরু হচ্ছে। তারই মধ্যে এই রাস্তা।এই রাস্তাগুলির শিল্যানাস অনুষ্ঠান হচ্ছে জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে। এক কোটি টাকার বেশি অর্থের কাজ হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি সংস্থা জেলাপরিষদ কে জানিয়ে শিল্যানাস অনুষ্ঠান করেন।কিন্তু এক্ষেত্রে বিধায়ক কিছু ব্লক এবং অঞ্চল নেতৃত্ব কে নিয়ে অনুষ্ঠান করে নিলেন।যার এক্তিয়ার নেই বিধায়কের।

পাল্টা বিধায়কের দাবি চলতি বছরের জুন মাসে আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রীকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম।এই নিয়েই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন এবং জেলা পরিষদ সদস্যা সাইরা বানু।যা নিয়েই চাঁচলে ক্রমশ চওড়া হচ্ছে শাসকের অভ্যন্তরীণ ফাটল।

জেলা পরিষদের সহকারী সভাপতি এটিএম রফিকুল হোসেন এই প্রসঙ্গে বলেন,” এই শিল্যানাস অনুষ্ঠান করবে জেলা পরিষদ। সেখানে বিধায়ককে ডাকা হবে অবশ্যই। কিন্তু এখানে বিধায়ক নিজে করে নিলেন। এই রাস্তার কাজ হওয়ার জন্য অবশ্যই আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। কিন্তু বিধায়ক যেটা করলেন এটা কাম্য নয়।এইভাবে শিল্যানাস অনুষ্ঠান হয় না।”

স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্যা সাইরা বানুর স্বামী তথা প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য বলে,” এই শিল্যানাস অনুষ্ঠান বিধায়ক করতে পারেন না। আমি রাস্তার প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন।আমরা ভেবেছিলাম সভাধিপতি, সহকারি সভাধিপতি এবং সাথে বিধায়ক কে ডেকে এই অনুষ্ঠান করব।” এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হলো।কে বা কারা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করলো জানিনা। এই কাজটা জেলা পরিষদ থেকে ধরা হয়েছে।”

যদিও বিধায়ক নিহার রঞ্জন ঘোষের দাবি,” যারা অভিযোগ করছেন তাদের প্রমাণ করতে বলেন প্রস্তাব কে দিয়েছিল। হয়তো জেলা পরিষদের সদস্যরা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত আছেন।আমি তো বিধায়ক হয়ে এসছি।সবার অভিভাবকের মতো।মূল কথা এখানে জনগণের কাজ হচ্ছে।”