অবতক খবর,২৬ ডিসেম্বর: একবছরের বেশি সময় ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত। মহিলার চিকিৎসা খরচ বহন করতে পরিবারের ‘ঘটিবাটি’ পর্যন্ত কার্যত বিক্রি করতে হয়েছে। এরপর টাকার অভাবে দুটি মাস চিকিৎসা বন্ধ ছিল। পরে রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী রিলিফ ফান্ডের প্রায় ৮৭ হাজার টাকা পেয়ে ফের চিকিৎসা শুরু হলো মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুর ১ ব্লকের করন্দি গ্রামের নুরজাহান বিবির। ফলে স্বস্তি নেমে এসেছে পরিবারে।

গ্রামের নামুপাড়ার বাসিন্দা বছর ৩৪ এর নুরজাহান বিবি। স্বামী আবুল খায়ের রাজমিস্ত্রির যোগানদারের কাজ করেন। পরিবারে স্ত্রী ছাড়াও মা ও দুই সন্তান রয়েছে। তাঁর সামান্য রোজগারে সংসার খরচ চালিয়ে গত একবছর ধরে স্ত্রীর চিকিৎসা খরচও যোগাড় করতে হচ্ছে। যা সম্ভব নয় বলে মনে করেছেন পরিবারের অন্যান্যরা। তাই মহিলার চিকিৎসা শুরু হতেই সংসারের যাবতীয় সোনা দানা থেকে কাঁসার বাসনপত্রও বিক্রি করতে হয়েছে।

নুরজাহানের শাশুড়ি আনসারা বিবি রলেন, বৌমার একবছরের উপর হল ক্যান্সার ধরা পড়েছে। ওঁর ব্রেস্ট ক্যান্সার ছাড়াও তিনটি টিউমারও ছিল। প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে ও পরে মুম্বাইয়ের টাটা ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসা করতে হয়েছে। আর এই চিকিৎসা করতে গিয়ে বাড়ির সমস্ত কিছুই বিক্রি করতে হয়েছে। সোনাদানা এমনকি কাঁসার থালাও বাড়িতে আর একটিও নেই। বিক্রি করার মত বাড়িতে কিছুই নেই। তাই টাকার অভাবে প্রায় দুইমাস ধরে কোন ওষুধ পর্যন্ত কিনতে পারিনি। ওই পরিবার খড়ের চালার দুই কামড়া মাটির বাড়িতে বসবাস করেন। বারান্দায় রয়েছে একটি কাঠের চৌকি।

সেখানেই দিনরাত বসে ও শুয়ে কাটান নুরজাহান। নুরজাহান বলেন, প্রায় দুইমাস আগে আমার স্বামী ও স্থানীয় বাসিন্দারা ভরতপুর বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের কাছে গিয়েছিলেন। সেখানে আমাদের পরিবারের অসহায়তার কথা বলেন। এরপর বিধায়কের তৎপরতায় সম্প্রতি চিকিৎসার জন্য ৮৭ হাজার টাকা পেয়েছি। পরে ফের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। এরজন্য একদিকে বিধায়ক ও অন্যদিকে মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছে পরিবারের সকলে। মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আমি ফের বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি।

এই ঘটনায় ভরতপুর বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, শুধু ওই মহিলার ক্ষেত্রে আমি তৎপরতা দেখিয়েছি তা নয়। গত তিনবছরে বিভিন্ন এলাকার এমন প্রায় ২০ থেকে ২৫টি পরিবারকে মূখ্যমন্ত্রীর রিলিফ ফান্ড থেকে আর্থিক সাহায্য পাওয়ার জন্য ব্যবস্থা করেছি। এর জন্য আমাকে নয়। ধন্যবাদ পাওয়ার একমাত্র দাবিদার হতে পারেন মূখ্যমন্ত্রী। বিধায়কের সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি নবান্ন থেকে ওই মহিলার নামে ৮৭ হাজার টাকা চিকিৎসা খরচ হিসেবে দেওয়া হয়েছে। যেটা পৌঁছেছে কলকাতার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস ক্যান্সার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। এরপর বর্তমানে সেখানেই মহিলার চিকিৎসা চলছে।