অবতক খবর,১৭ ডিসেম্বর,অভিষেক দাস,মালদা:-মালদা মানেই আমের জেলা মালদার আম জগত বিখ্যাত। মালদার আমের সাথে সাথে এবার পাল্লা দিচ্ছে সীমান্ত এলাকার মনোহারা মিষ্টি।মনোহারা মিষ্টি নাম শুনলে জিভে জল চলে আসে। ক্ষীর, নারকেল , চিনি এবং এলাইচির সংমিশ্রণে তৈরি এই মনোহরা মিষ্টি কে না খেতে ভালোবাসে। শুধু এপার বাংলায় নয়, ওপারেও মনোহারা মিষ্টির চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। মালদার ইংরেজবাজার ব্লকের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মহাদিপুর গ্রামেই এই মনোহারা মিষ্টি এখন অনেক ভোজনরসিক মানুষের আকর্ষণ বাড়িয়েছে। তবে বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির জন্য ওপারে মালদার মনোহরা মিষ্টি নিয়ে যেতে পারছেন না এপার বাংলার নাগরিকেরা।

তাঁদের বক্তব্য, কয়েক মাস আগেও বাংলাদেশ আত্মীয়দের জন্য মনোহারা মিষ্টি নিয়ে গিয়েছিলাম। সকলে খেয়ে প্রশংসা করেছে। কিন্তু অশান্ত বাংলাদেশে এখন মহদিপুর সীমান্তে যাতায়াত বন্ধ। ফলে ওপার বাংলার অনেকের সঙ্গে যখন ফোন করে কথা হয়, শেষে অবশ্যই মনোহারা মিষ্টি মিস করার কথাও আক্ষেপ করে জানায়।
উল্লেখ্য, মালদা জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মহদীপুর এলাকায় হাতে গোনা কয়েকটি মিষ্টির দোকান রয়েছে। যেখানে মনোহারা তৈরি হয়। সন্দেশের ছোট আকৃতির এই মনোহারা মিষ্টির এক পিসের দাম ৭ টাকা। সাইজে একটু বড় হলে তার দাম ১০ টাকা। নারকেল , ক্ষীর , চিনি এবং এলাইচি সংমিশ্রণ দিয়েই মূলত এই মিষ্টি তৈরি হয়ে থাকে ।

মহদিপুর এলাকার এক মিষ্টি বিক্রেতা ভাসানু শেখ বলেন, আমার বয়স ৫৫ -এর কাছাকাছি। বাবা, ঠাকুরদাদার হাত ধরে এই মিষ্টি তৈরি শিখেছিলাম। কেউ বলে মোগল আমলের থেকে শুরু এই মিষ্টি। আবার কেউ বলেন মহদীপুরের এক সময় গৌর রাজ্য ছিল। সেই রাজ রাজাদের হাত দিয়েই শুরু মনোহারা মিষ্টি । আসলে এই মিষ্টি খেয়ে মানুষের মন ভরে যায় বলে একে মনোহারা নামে সবাই জেনে থাকে।

তবে মালদা জেলার মধ্যে মহদিপুরেই এই মিষ্টি তৈরির প্রচলন রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে এই সীমান্ত পথ দিয়ে বহু মানুষ যাতায়াত করতেন। তারা ওপারের আত্মীয়দের জন্য মনোহারা কিনে নিয়ে যেতেন। এখন সীমান্ত বন্ধ । ওপারে আর যাচ্ছে না এই মিষ্টি। তবে গৌড়ের নিদর্শন কেন্দ্রগুলি যখন পর্যটকেরা ঘুরে দেখতে আসছেন, তখন তাঁরা এই মিষ্টির স্বাদ গ্রহণ করছেন।
ওয়েস্ট বেঙ্গল এক্সপোটার অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, মনোহারা মিষ্টি মালদার বিখ্যাত । মহদিপুরের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমান্ত দিয়ে আমদানি রপ্তানি কারকেরা একবার হলেও পরিবার ও আত্মীয়দের জন্য এই মিষ্টি কিনে নিয়ে যান।