অবতক খবর,২০ নভেম্বর,মালদা— অভাবের তাড়নায় ১৮ দিনের সদ্যোজাতকে স্থানীয় ব্যবসায়ী দম্পতির কাছে দেড় লক্ষ টাকায় বিক্রির অভিযোগ পরিযায়ী শ্রমিকের স্ত্রীর বিরুদ্ধে, স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা সেই সদ্যোজাতকে আবার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিলেও, সেই দেড় লক্ষ টাকা জোরপূর্বক নেওয়ার অভিযোগ ওই নেতার বিরুদ্ধে, সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল, খোঁচা বিজেপির, সাফাই তৃণমূলের,,স্বামী ভিন রাজ্যে কাজ করে।
সংসারে অর্থাভাব। ঠিকভাবে জোটে না খাবার। রয়েছে এক বছরের শিশু সন্তান। চলতি মাসের ১ তারিখ আবার একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় মা। কিন্তু এতটাই খিদের তাড়না ১৮ দিনের খুদেকে এক ব্যবসায়ী দম্পতির কাছে দেড় লক্ষ টাকায় বিক্রি করার অভিযোগ মায়ের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগ নিজের মুখে স্বীকার করে নিয়েছেন মা। যদিও এই বিক্রি করার খবর জানাজানি হতেই স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা ক্ষুদেকে ওই ব্যবসায়ী দম্পতির কাছ থেকে এনে মায়ের কোলে তুলে দেয় বলে জানা গেছে। কিন্তু ওই দেড় লক্ষ টাকা স্থানীয় সেই তৃণমূল নেতা অভাবী মায়ের কাছ থেকে কেড়ে নেয় বলে অভিযোগ। পরবর্তীতে গ্রামের সালিশি তে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা ফেরত দিলেও ত্রিশ হাজার টাকা এখনো ফেরত দেননি।
অন্যদিকে ওই ব্যবসায়ী দম্পতি সন্তান কেনার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর তৃণমূল নেতার দাবি তিনি শুধু এই বাচ্চা বিক্রি আটকেছেন। কোনরকম টাকা নেননি। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। রাজ্য কর্মসংস্থান নেই। এতটাই অভাব যে শিশুকে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে মা। এই ভাষাতেই সুর চড়িয়েছে বিজেপি। পাল্টা সাফাই তৃণমূলের। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ঘটনা। স্বামী ভিন রাজ্যে কর্মরত। ঠিক ভাবে টাকা পাঠাতে পারে না। বাড়িতে রয়েছে এক বছরের পুত্র সন্তান। নভেম্বর মাসের ১ তারিখ হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে আরেকটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় গৃহবধূ। কিন্তু বাড়িতে এতটাই টাকার অভাব। সদ্যোজাতের প্রয়োজনীয় কোন খাবার বা সামগ্রি কেনার ক্ষমতা নেই গৃহবধূর। সাথে খিদের জ্বালা।
স্থানীয় বিনোদ আগরওয়ালা নামে এক ব্যবসায়ীর কন্যা সন্তান রয়েছে। কিন্তু কোন পুত্র সন্তান নেই। গৃহবধূ সদ্যোজাত পুত্র সন্তানকে টাকার বিনিময়ে কিনে নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি।অভাবি গৃহবধূ দেড় লক্ষ টাকার বিনিময় তার সদ্যজাতকে তুলে দেন বিনোদ আগরওয়ালার কাছে। কিন্তু সেই খবর জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়।স্থানীয় দ্রোণাচার্য ব্যানার্জি (বিট্টু) নামে এক তৃণমূল নেতা সদ্যোজাত কে বিনোদ বাবুর কাছ থেকে নিয়ে আবার গৃহবধূর হাতে তুলে দেন। কিন্তু অভিযোগ ওই দেড় লক্ষ টাকা দ্রোণাচার্য ব্যানার্জি (বিট্টু) জোরপূর্বক নিয়ে নেন গৃহবধূর কাছ থেকে।
পরবর্তীতে গ্রামে এই নিয়ে সালিশি সভা হলে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা ফেরত দেন। কিন্তু বাকি ৩০ হাজার দেননি। যদিও দ্রোণাচার্য ব্যানার্জির (বিট্টু) দাবি তিনি শুধু শিশু বিক্রি আটকেছেন। কোনরকম টাকার বিষয় তিনি জানেন না। অন্যদিকে গৃহবধূ নিজের মুখে স্বীকার করে নিয়েছেন সদ্যজাতকে বিক্রির কথা। গৃহবধূ জানিয়েছেন সংসারে অত্যন্ত অভাব। ঠিক ভাবে খাবার জোটে না। স্বামিকে টাকা পাঠাতে বললে স্বামীও পাঠায় না। তাই সে বাধ্য হয়েছিল। যদিও বিনোদ আগরওয়ালা সমগ্র ঘটনা অস্বীকার করেছেন। সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গেছে। তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছে এই টাকা নেওয়ার অভিযোগ বিরোধীদের চক্রান্ত। পাল্টা বিজেপির দাবি রাজ্যের কর্মসংস্থানের বেহাল দশা এই ঘটনায় প্রমাণ হচ্ছে। এতটাই অভাব মানুষের যে মানুষ শিশুকে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। আর সেখান থেকেও কাট মানি নিয়ে নিচ্ছে তৃণমূল।