অবতক খবর,১৯ জানুয়ারি: আজ বীজপুর জুড়ে পালিত হয়েছে জননেতা মৃণাল সিংহ রায়ের মৃত্যুবার্ষিকী। কোথাও বড় করে মঞ্চ বেঁধে মাইক লাগিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হচ্ছে এই দিনটি,আবার কোথাও দেখা যাচ্ছে যেখানে বড় করে পালন করা হতো সেখানে একেবারেই ছোট করে পালিত হচ্ছে। এই সকল কর্মসূচিতে একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য ভাবে নজরে পড়ছে সেটি হল যে,শুধু আবুদার নামটাই রয়ে গেছে, বাদবাকি এই কর্মসূচি পুরোপুরি রাজনৈতিক। অর্থাৎ একপক্ষের। তিনি যে সমাজকর্মী ছিলেন,তিনি যে সকলকে নিয়ে চলতেন, সমাজের শিক্ষিত মানুষদের সাথে তাঁর সুসম্পর্ক ছিল, সেই ব্যক্তিদের আর দেখা যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের। তাদের সংবর্ধনা,তাদেরকে উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া, আর আবুদার সম্পর্কে দুই লাইন বক্তব্য,ব্যাস! হয়ে গেল কর্মসূচি শেষ। কিন্তু আসলে যারা সেই সময়ে আবুদার সাথে ছিলেন,আবুদাকে নিয়ে বিভিন্ন লেখা লিখেছেন, তাঁর যে সামাজিক আন্দোলন ছিল সেই আন্দোলনে তাঁর সাথী যারা ছিলেন তাদের কাউকেই দেখা যায় না। এইসবের মধ্যে আরো একটি বিষয় উঠে এসেছে। হালিশহর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। কিছুদিন আগেই আমাদের সংবাদে প্রকাশ পেয়েছিল যে আবুদা এবং চয়ন বোসের ছবি দেওয়া ব্যানার কোথায় পড়ে আছে এবং তাঁদের কিভাবে অসম্মান করা হয়েছে!

এই প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই হালিশহর পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান অংশুমান রায় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছেন। যেখানে তিনি লিখেছেন,”দলীয় শৃঙ্খলার বাইরে গিয়ে নিজের চরম অসময়েও প্রকাশ্যে কোনোরকম সমালোচনা করিনি। কিন্তু আজ এই প্রতিবাদটুকু না করলে অপরাধ করা হতো।
এই দুইজন প্রিয় নেতার হাত ধরে আমার রাজনীতিতে আসা এবং পথ চলা শুরু। একজন বীজপুরের লড়াই -সংগ্রাম এর প্রতীক, হাজারো বেকার যুবকের আশা-ভরসা মৃণাল সিংহ রায় আর একজন আবুদার পাশে শেষদিন পর্যন্ত থেকে মৃত্যুবরণ করা, এই পার্টি অফিস এর প্রাণপুরুষ চয়ন বোস। কিন্তু আজ তাদের রক্ত, জল, ঘাম দিয়ে তৈরি করা পার্টি অফিস এ তাদের এই হাল। কিছুদিন আগে শুনেছিলাম, ফাংশনে চয়ন বোস এর ছবি রাখতেও নাকি আপত্তি প্রকাশ করেছিল কিছু অর্বাচীন। আর কত অপমানিত হবেন এঁরা?যারা এখনো পার্টি অফিস এ যান, তাদের কাছে একান্ত অনুরোধ, এই মানুষগুলোর ছবি দয়া করে তাদের পরিবারের হাতে ফেরত দিয়ে দিন। আর “চয়ন স্মৃতি ভবন ” নামটি পাল্টে, বর্তমানে সবাই খুশি হবে এরকম একটি নাম দিন। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, পুরনো কর্মীদের সন্মান জানাতে। তাহলে অন্তত অসন্মানিত যাতে না হন সেটুকু চেষ্টা করুন।”

অর্থাৎ পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে অংশুমান রায় উক্ত পার্টি অফিসে যারা বসেন তাদের উদ্দেশ্য করে এই কথাগুলি লিখেছেন।

অন্যদিকে বীজপুরের যুবনেতা সুজিত দাস বলেছেন,”তাদের বোধ বুদ্ধি হয়তো কিছু নেই।মানসিক ভারসাম্য ঠিক নেই তাদের, সেই কারণেই তারা এই ছবিগুলিকে নিয়ে অসম্মান করেছে। কিছু বলার ভাষা নেই।”

এই তো অবস্থা বীজপুরের। একদিকে মাইক বক্স লাগিয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে জানানো হচ্ছে যে,’আমরা আবু প্রেমী। আমরা আবুদার আদর্শে অনুপ্রাণিত। আবুদা আমাদের নেতা।’ অন্যদিকে তাঁদের এই যে অসম্মান সেই দিকে নজর নেই কারোর।