২ সেপ্টেম্বর’জনকবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে স্মরণ ও শ্রদ্ধাঃ

ভাত হ্যাংলা কবিকে দেখা
তমাল সাহা

তমুর প্রিয় প্রণম্য কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর জন্ম শতবর্ষ পূর্তি হচ্ছে ২ সেপ্টেম্বর ‘২০, এই করোনার মহাকালবেলায়। তিনি একশো এক বছরে পদার্পণ করছেন সেদিন।
বীরেনদার সঙ্গে তমুর সাক্ষাৎ হয়েছে জীবনে তিনবার। একবার বইমেলার সূচনালগ্নে, বইমেলা তখনও ময়দানে এমনভাবে জমে ওঠেনি। ধুতি পাঞ্জাবি পরিহিত দীর্ঘদেহী একজন মানুষ। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। কাঁধে সাইডব্যাগ। তমু তাঁকে দেখেছে বই ফেরি করতে, নব প্রজন্মদের লেখা কবিতার বই তিনি ফেরি করতেন। তিনি ছিলেন কবিতার ফেরিওয়ালা।
তিনি ‘উঠে আসা’ কবি এবং কবিতার প্রতি দায়বদ্ধ এটা তিনি জানিয়েছিলেন। তাঁর হাত থেকে তমু কিনেছিল একটি কবিতার বই।
দুবার তাঁর বাড়িতে গিয়েছিল তমু। একবার সেই যে কবি যিনি “গান্ধীনগরের রাত্রি”র কবি নামে পরিচিতি পেয়ে গিয়েছিলেন সেই মণিভূষণ ভট্টাচার্যের সঙ্গে। সন্ত্রাসপর্ব কালে মণিদা তমুকে বলেছিলেন, তেমন পরিস্থিতি হলে চলে যাবো বীরেনদা অথবা বিষ্ণু দে-র আশ্রয়ে। তখন মণিদা নৈহাটির আমবাগানে থাকতেন। এ সবই সত্তর দশকের কথা।
দ্বিতীয় বার গিয়েছিল অগ্রজ কবি দাদা কাম বন্ধু, নিত্য সহচর তমুর, যিনি ছিলেন এই অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য পত্রিকা “অধুনা সাহিত্য”- র অন্যতম পরিচালক হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়, তাঁর সঙ্গে।হৃষীদা তমুর পারিবারিক বন্ধু ছিলেন। খুব একাকিত্বে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় তিনি চলে গিয়েছেন। তিনি *সুধাঙ্কুর সাহিত্য পুরস্কার” পেয়েছিলেন।
কথা প্রসঙ্গে এক আলোচনায় বীরেনদার ঋজু দার্ঢ্য মানসিকতার পরিচয় পেয়েছিল তমু। কথা প্রসঙ্গে এক প্রতিবেশী ব্যক্তি যার প্রকাশনা রয়েছে, তার লেখা বিভিন্ন বইও রয়েছে এবং রয়েছে কাব্যগ্রন্থ। তিনি অহং ভরে বলেছিলেন, “ও বীরেনবাবু! উনি তো আমার পাশের বাড়ি থাকেন।” বীরেনদা এর জবাবে বলেছিলেন স্পর্ধার সঙ্গে, “ওকে বলে দেবেন, বীরেনদা নয়, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পাশের বাড়িতে ও থাকে”। বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মণিভূষণ ভট্টাচার্যের একটি কাব্য পুস্তিকা বীরেনদা তমুকে উপহার দিয়েছিলেন।

এই প্রাকৃতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক মহাকাল বেলায় তমুর মাথায় ঘুরপাক খায়, “কবি ও দালাল” শব্দ দুটি কতদূর যেতে পারে যায়!
কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বিরুদ্ধ পতাকা ওড়ায়…
আমাদের পথ দেখায়।