আজ সেই বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মন্দ্রকণ্ঠে ইয়া দেবি সর্বভূতেষু…নমস্তস্যৈ নমোহ নমঃ উচ্চারণের নস্টালজিক দিন

অবতকের বিশেষ প্রতিবেদন

স্বাধীনতা প্রাপ্তির সময়ে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে শুনিনি মধ্যরাত্রি মহাজাগরণের মহামন্দ্রিত ধ্বনি। অনেক পরে তাঁর কন্ঠে এই পরাধীনতার অন্ধকার দূরীভূত মহামন্ত্র শুনেছি।
এই মানুষটি প্রভাতীস্নানের পর কৌষিকী শুদ্ধবস্ত্রে মহালয়ার অনুষ্ঠানে কণ্ঠ দিতেন।
তিনি ছিলেন সেই ১৯৩০ সালে আকাশবাণীর সম্প্রচারক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও পঙ্কজ মল্লিকের সমসাময়িক। তাঁরা ছিলেন আকাশবাণী পরিচালনার নেতৃত্বে। ‌

বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বর উল্লেখযোগ্য মহাকন্ঠ হয়ে বেজে উঠেছিল ১৯৩০ সালের মহালয়ার ভোরে এবং ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা প্রাপ্তির মহাঅনুষ্ঠানে।

তিনি জন্মেছিলেন ৪ আগস্ট, ১৯০৫। কন্ঠ রেখে চলে গিয়েছেন ৩ নভেম্বর, ১৯৯১

ভদ্রেষু
তমাল সাহা

জবাকুসুমসঙ্কাশ ভোরে
ভয়ার্ত অন্ধ তিমির ধীরে ধীরে পলায়নের পথ খোঁজে।
বরিষণের বেলা বুঝি শেষ হয়ে যায়!
রাজকীয় নীলের ঐশ্বর্য নিয়ে আকাশে ভেসে যায়
কাপাস তুলোর মতো সিত মেঘমালা…
শিউলিতলায় শিশিরাক্ত ফুলগুলি
ঝরে পড়ে স্তব্ধ হয়ে থাকে–
বিনত প্রণাম জানায় কাকে!
ভুবনডাঙার মাঠে কাশফুলগুলি মাথা উঁচু করে সাদা পালক নাড়াতে থাকে–
তুমি আসবে বলে।
মথুরাবিলে লাল শাপলা আর পদ্মকলি আশ্চর্য রঙিন সমাবেশে স্থির জলে দাঁড়িয়ে বিনম্র প্রণতি জানায়– এসো হে!

সেই সময়ে মন্দ্রকন্ঠে কার স্বর উঠে আসে স্তব হয়ে–
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা নমস্তস্যৈ নমোহ নমঃ…..
তোমার জন্ম- মৃতূদিন বিস্মৃত হবে সাধ্য কার?
মহালয়ার বালার্ক-ভোরে
তুমি নবজন্ম নিয়ে উঠে আসো
ভৈরবী রাগে হৃদয়ের অলিন্দ নিলয়ে।