ব্লেড
তমাল সাহা

কবিতাদের শরীর খুব নরম হলে কি হবে
আমি কবিতাদের ভয়ানক ভয় পাই

কবিতারা বারবার বলে, কাছে এসো
কবিতাদের কাছে যাওয়া কি এতই সহজ?

ব্লেডও ঠিক কবিতাদের মতো
পাতলা নরম ছোট্ট একটি ধাতব পাত
যেখানে সেখানে লুকিয়ে রাখা যায়
এমন আশ্চর্য অস্ত্র আমি দেখিনি যার দুদিকই ধারালো

আমার হাত কবিতা লিখতে জানে না
কবিতা কবিতার মতো হলে তো কবিতার কাছে যাওয়া যায়
অথচ কবিতা বারবার বলে, কাছে এসো

এই দেখো আমার হাতে ব্লেড—
কাছে এসো, না হলে হাতের শিরা কেটে আমি মরে যাবো
আমি বলি তুমি অন্যভাবেও তো আত্মহত্যা করতে পারো
তোমার মৃত্যুর সঙ্গে আমাকে জড়াও কেন
আমি পুলিশের চেয়েও বেশি ভয় পাই তোমাকে

ফাঁসিতে ঝুলে, রেললাইনে গলা দিয়ে ,আগুনে পুড়ে, জলে ডুবে, বিষ খেয়ে আত্মহত্যা অনেক ঝামেলা!
ব্লেড দিয়ে মৃত্যুতে নিজের রক্ত নিজে দেখা যায়
তোমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে মরা যায়
আমি চিৎকার করে উঠি, কবিতা!

কবিতা বলে,তবে কাছে এসো
এখন ঘন অন্ধকার। কিছুক্ষণ আগে বৃষ্টি হয়ে গেছে।চারদিক শুনশান
আমি কবিতা লিখতে বসে যাই

কবিতার হাতে ধারালো চকচকে ব্লেড
আমার কাঁধের কাছে কার শ্বাসপতন হলো
আমি কি কবিতার হাতে মরে যাবো?
দম আটকে আসে, মনসৃজা! বলে চিৎকার করে উঠি

রক্তাক্ত এই সময়
কবিতার জানালা দরজা সব খুলে দিয়েছি
আমি পাশে আছি
লেখার সমস্ত উপকরণ যোগাড় করে দেব
তুমি লিখে চলো

এই দেখো ব্লেড!
না লিখলে এই হাতের শিরা কেটে নিজের রক্তক্ষরণ দেখতে দেখতে আমি রেখে মরে যাবো
তোমাকে জবাবদিহি করতে হবে

আমি চিৎকার করে উঠি, মনসৃজা কবিতা!