অবতক খবর,২০ এপ্রিল,নববারাকপুর : শনিবার ঘড়ির কাটা রাত ১২ : ৩০ মিনিট।হঠাৎ রাতের বেলায় নিউ বারাকপুর থানাতে এসে কান্নাকাটি শুরু করেছিলেন সাজিরহাট শহীদ বন্ধু নগরের গৃহবধূ সীমা রায়। কান্নাকাটি শুনে কর্তব্যরত ডিউটি অফিসার জিজ্ঞাসা করলেন তার কান্নার কারন কি? মহিলা জানাল তার ১৫ বছরের নাবালিকা কন্যাকে নিয়ে তার স্বামী বিয়ে দেবেন বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছেন।

খবরের গুরুত্ব বুঝে ডিউটি অফিসার এসআই সুদীপ্ত বিশ্বাস সঙ্গে সঙ্গে বড়ো বাবু সুমিত কুমার বৈদ্য কে বিষয় টি অবগত করেন। এই খবর পাওয়ার সাথে সাথে থানা থেকে নাবালিকা ও তার বাবার মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্রাক করা হয়। লোকেশনটি দেখা যায় দমদমের একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে। সাথে সাথে দমদম থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেঐ এলাকায় চিরুনি তল্লাশি করা হয়। কিছু পরে লোকেশন দেখা যায় হাওড়ার জগদীশপুর এলাকায়। সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার থানার সাথেও যোগাযোগ করা হয়।

কিন্তু নাবালিকা ও তার বাবা কিছুতেই ফোন রিসিভ করছিলেন না। পরে নাবালিকার মা কে জিজ্ঞাসাবাদ করে ২৮ বছরের ছেলেটির বাড়ির ফোন নম্বর পাওয়া যায়। ছেলে টি পেশায় এলআইসি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। সেখানে থানার বড়ো বাবু সুমিত কুমার বৈদ্য নিজে ফোন করেন এবং ছেলে টির দাদাকে বলেন নাবালিকার সঙ্গে বিয়ে করলে সকলেই আইনী জটিলতায় পড়বেন।তখন ছেলেটির দাদা ও পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ে বন্ধের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এবং মেয়েটিকে নিয়ে পরেরদিন রবিবার সকালে থানায় হাজির করানো হয়। মেয়ে টির মা পরিচারিকার কাজ করেন।

থানায় আসার পরে মেয়েটিকে ও পরিবারের লোকজন দের বড়ো বাবু নিজে বাল্যবিবাহ ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বোঝান এবং মেয়ে টিকে ভালো ভাবে পড়াশোনা করার পরামর্শ দেন। মেয়ে টি নিউ বারাকপুর মাসুন্দা গার্লস হাইস্কুলে দশম শ্রেণীর ছাত্রী। এবং মেয়েটিকে বলেন পড়াশোনার ব্যাপারে কোন রকম সাহায্য লাগলে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে সবরকম সাহায্য করবেন।

মেয়েটির বাবা ঝন্টু রায় নিজের ভুল বুঝতে পেরে দু চোখে অশ্রুধরা জলে বলেন মেয়ে সাবালিকা না হওয়া পর্যন্ত মেয়ে কে কোনরকম ভাবে বিবাহ দেবেন না বলে থানায় লিখিত ভাবে জানান। যদিও মেয়ে টির মা জেলা সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অফিসার কেও বিষয় টি জানিয়েছিলেন।কিন্তু তাদের তরফ থেকে কোনরুপ প্রত্যুত্তর পাওয়া যায়নি।পুলিশ তৎপরতার জন্য এ যাত্রায় নাবালিকার বিবাহ বন্ধ করা গেল।আজ বিকেলে থানা থেকে নাবালিকা কে তার বাবা মা নিজ বাড়িতে নিয়ে যান।