অবতক খবর,মালদা;সানু ইসলাম;১০অক্টোবর: বাড়ি থেকে পান খেতে বেরিয়ে নিখোঁজ কাপড়ের ব্যবসায়ী।৩৬ ঘন্টা অতিক্রান্ত হলেও মেলেনি সন্ধান। পুলিশের দারস্থ ব্যবসায়ীর বৃদ্ধ বাবা।দুশ্চিন্তায় পরিবারের লোকেরা।ক্রমশ দানা বাঁধছে অপহরণের রহস্য।এই ভাবে দিনের আলোয় ব্যবসায়ী নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় আতঙ্কে এলাকার অন্যান্য ব্যবসায়ীরা। এই ঘটনা উস্কে দিচ্ছে তিন বছর আগে পার্শ্ববর্তী এলাকার এক ব্যবসায়ীর নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর মৃতদেহ উদ্ধারের ভয়াবহ স্মৃতি। অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্তে নেমে পড়েছে পুলিশ।মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত কোরিয়ালির ভালুকা বাজারের বাসিন্দা সঞ্জয় কুমার আগরওয়ালা (৪৮)। এলাকায় তার একটি কাপড়ের দোকান রয়েছে। বিশিষ্ট এবং প্রভাবশালী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় রয়েছে এলাকায়।রবিবার বিকেলে সঞ্জয়বাবু বাড়ি থেকে পান খাওয়ার কথা বলে বাইরে বেরোন। বাড়ির পাশেই পানের দোকানে যাবেন বলে বাড়ি থেকে মোবাইল নিয়েও বেরিয়ে ছিলেন না।তারপর থেকেই আর বাড়ি ফেরেননি। বাড়ির লোকেরা অনেক খোঁজাখুঁজি করলেও খোঁজ মেলেনি।যে পানের দোকানে তিনি পান খেতেন সেটি ভালুকা রোড স্টেশনে ২ নম্বর প্লাটফর্মের উপর রয়েছে। সেই পানের দোকানদার জানান তিনি পান খেতে এসেছিলেন। কিন্তু তারপর কোথায় চলে গেলেন কেউ বুঝতে পারছে না। পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে কোন পারিবারিক ঝামেলা বা মানসিক অবসাদ ছিল না। ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন সারাদিন।সামনে দুর্গা পুজো তাই এই মুহূর্তে ব্যস্ততা আরও বেশি ছিল।সোমবার বিকেলে সঞ্জয় বাবুর পরিবারের পক্ষ থেকে ভালুকা ফাঁড়ি তে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

স্বাভাবিক ভাবেই ছত্রিশ ঘন্টা পড়েও খোঁজ না মেলায় দানা বাঁধছে অপহরণের রহস্য। তবে কি মোটা অর্থের লোভে কেউ বা কারা অপহরণ করলেন এই ব্যবসায়ীকে। না কি পেছনে ব্যবসায়িক শত্রুতা। প্রসঙ্গত তিন বছর আগে পার্শ্ববর্তী এলাকার এক ইটভাটার মালিকও একই ভাবে নিখোঁজ হয়ে গেছিলেন।পরবর্তীতে বিহারের কাটিহারের বলরামপুর থানা এলাকা থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। যদিও সঞ্জয় বাবুর পরিবারের দাবি তার সঙ্গে কারোর কোন শত্রুতা ছিল না।কোন হুমকি বা মুক্তিপণ সংক্রান্ত ফোন এখনো পরিবারের কাছে আসেনি।অন্যদিকে অভিযোগ পেতেই নড়েচড়ে বসেছে ভালুকা ফাঁড়ির পুলিশ। ভালুকা ফাঁড়ির ইনচার্জ শ্যাম সুন্দর সাহা জানিয়েছে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আমরা তদন্তে নেমে পড়েছি। প্রত্যেকটা দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সঞ্জয় বাবুর বাবা ওম প্রকাশ আগরওয়াল জানান, বাড়ি থেকে পান খেতে বেরিয়েছিল। তারপর থেকেই আর বাড়ি ফেরেনি। ও একজন কাপড়ের ব্যবসায়ী। রীতিমতো ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত। নিজে কেন কোথাও চলে যাবে। কেউ অপহরণ করেছে কিনা সেটাও বুঝতে পারছি না। পুলিশে অভিযোগ জানালাম দেখা যাক।

সঞ্জয় বাবুর স্ত্রী রেনু আগরওয়াল জানান, বাড়ি থেকে ফোন নিয়ে বেরিয়ে ছিল না।ভালুকা স্টেশনে যে পানের দোকানে পান খেতে যায় সেখানেও গেছিল। তারপর যে কোথায় চলে গেল বুঝতে পারছি না।কি অবস্থায় আছে সেটাও বোঝা যাচ্ছে না। পুলিশ আমাদের ছেলেকে খুঁজে দিক।

প্রসঙ্গত পাশেই রয়েছে বিহার। ইটভাটার মালিকের দেহ উদ্ধার হয়েছিল বিহার থেকেই। একজন ব্যবসায়ী যার কোন পারিবারিক বা মানসিক অশান্তি ছিল না। পুজোর মরশুমে রীতিমত ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত। সেতো নিজে থেকে নিরুদ্দেশশ হতে পারে না। তাই ক্রমশ অপহরণের সম্ভাবনাই জোড়ালো হচ্ছে।