বিনয় ভরদ্বাজ, অবতক খবর, ২রা মার্চ : আর মাত্র ১ সপ্তাহ। এর মধ্যেই নির্বাচনের নির্ঘন্ট বেজে উঠবে। রাজ্যের সরকারি দল তৃণমূলকে ধূলিসাৎ করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে বিজেপি। তৃণমূল সরকারের একের পর এক দুর্নীতি ও সন্ত্রাসে রাজ্যের মানুষ ত্রাহি ত্রাহি মং। সারদা নারোদা কয়লা গরু চাকরি থেকে জমি জায়গা লুট, যেভাবে একের পর এক তৃণমূল নেতা মন্ত্রীদের নাম জড়িয়েছে তাতে এমনিতেই তৃণমূল ব্যাগ ফুটে। তার উপরে সন্দেশখালি কান্ড সরকারের রয়েসয়ে যাওয়া ভাবমূর্তি ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছে এবং সরকারের নগ্ন রূপ সামনে এনে দিয়েছে।

এইসবকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি এখন বাংলায় কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছে। ইতিমধ্যেই বিজেপি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই রাজ্য থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা পাঠিয়েছে । এই নিয়ে জেপি নাড্ডা এবং অমিত শাহ প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। কিছু নাম ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত করে ফেলেছেন তাঁরা, এমনই খবর বিজেপি সূত্রে।

অন্যদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূল তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করা শুরু করেছে। জেলা সভাপতিদের কাছ থেকে প্রার্থীদের নামের তালিকা চেয়ে পাঠানো হয়েছে এবং তা সুব্রত বক্সীর কাছে জমা পড়েছে। বিধায়কদের কাছ থেকেও পছন্দের প্রার্থীদের নাম চেয়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও আইপ্যাক মারফতেও জেলা জেলা থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম জমা পড়েছে। এই তিন তরফা নাম নিয়ে আলোচনায় বসে নাম চূড়ান্ত করবেন নেত্রী।

তৃণমূল সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী তৃণমূল বিজেপির আগে তাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করবে না। তারা চায় যে আগে বিজেপি তাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করুক। এতে এলাকায় প্রার্থীর নাম নিয়ে যে জনরোষ তৈরি হবে তাকেও কিছুটা হলেও যদি কাজে লাগানো যায় । তাছাড়া তৃণমূলেও বেশ কয়েকজন রয়েছেন যারা আগে থেকে তৃণমূলে থাকলেও বিজেপির দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছেন। এদের কেউ চিহ্নিত করে নিতে চাইছে দল।

তৃণমূলের কিছু বিতর্কিত নেতাদের চোখের ঘুম পায় উড়ে গেছে ,এই আগে পরের তালিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়ে। আবার কিছু নেতা এমনও রয়েছেন যারা বিজেপির সঙ্গে সক্ষতা রেখে তারা ভাবছেন যে তৃণমূল যদি তাদের নাম ঘোষণা না করে তাহলে তারা বিজেপির টিকিটের নির্বাচনে লড়তে রাস্তা তৈরি করতে পারবেন। এই সুযোগ আর তৃণমূল দিতে চাইছে না তাদের।

যেমন এবার তৃণমূল থেকে নতুন প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন বেশ কয়েকজন বড় নেতা। যাদের মধ্যে রয়েছেন কুণাল ঘোষ,তাপস রায়,পার্থ ভৌমিক,রাজ চক্রবর্তী, সুজাতা খাঁ। এবং নদীয়া থেকে তাপস মন্ডল- এর মত বেশ কয়েকজন।

এছাড়াও তৃণমূল এবার তাদের সিটিং এমপিদের থেকেও বেশ কয়েকজনকে বাদ দিতে চলেছে। এই তালিকায় রয়েছেন যেমন প্রসূন ব্যানার্জী, সৌগত রায়, শিশির অধিকারী, রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জী, নুসরত জাহান, দিব্যেন্দু অধিকারী, চৌধুরী মোহন জাতুয়া, সুনীল কুমার মন্ডল এবং আরো দুই এক জন। তাছাড়া ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন মিমি চক্রবর্তী।

এখন দেখার বিষয় এটাই যে যতদিন প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত হচ্ছে না দুই দলের মধ্যে নেতাদের এখন উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা থাকবেই।