বাবা! চলো বাজারে যাই। তোমাকে নতুন অভিজ্ঞতা শেখাই। কি আর করি! টুকুনকে নিয়ে বেরোই।

ফুলমাসি
তমাল সাহা

টুকুন বলে,
বাবা, চলো সকাল সকাল একটু ঘুরে আসি।
নিশ্চই এতক্ষণে এসে গেছে ফুলমাসি!

কেন? ফুল মাসিকে কি দরকার?

ওরা তো ফুটপাত জুড়ে বসা হকার।
ফুল বিক্রি করে দিন আনে দিন খায়।
গ্রাম থেকে আসে,
ওদের থেকে অনেক কিছুই জানা যায়।

ও মাসি! কতরকম ফুল গো!
কিন্তু দেখছি না তো একটা ফুল?
বুঝেছি! বুঝেছি! আমার গেল তিন কুল।
আমিও এখনো দেখিনি সেই তে-পাতা ঘাসফুল!

আচ্ছা মাসি! ও ফুল কি পুজোয় লাগে?
চুপ!চুপ! কেউ শুনলে জ্বলে উঠবে রাগে।

এই টুকুন! কী হচ্ছে!
ওর ব্যবসার যে হচ্ছে ক্ষতি!
এ জন্য তোমায় নিয়ে বেরোতে চাই না,
হাজারো প্রশ্ন! মেয়ে তো একরত্তি!

আচ্ছা মাসি!
ওই ফুলটাও তো দেখছি না তোমার আশে পাশে।
ওই যে রঙটা আকাশ রাঙায় গো!
ঐ রঙ হর হর মহাদেব ও রামচন্দ্র ভালোবাসে।
নীল কন্ঠ পাওয়া যায়। কিন্তু
নীলপদ্ম! সে কি আর এখন তেমন মেলে?
খুব দাম! বাজারেও খুব কি চলে!

তাহলে ঐ যে গেরুয়া ঝান্ডা!
লালপদ্ম-র তো এখন খুব নাম, তা কোথায়?
ও নাম মুখে এনো না! বাজ পড়বে মাথায়।

বুঝে যাই আমি, যদিও বাবার কাছে অপমানিত একরত্তি টুকুন।
মাসি, আমার গেঁয়ো অশিক্ষিত নয়, পরিস্থিতি বোঝে দারুণ!

শোনো মা ! এখন ভোটের সময়।
কী করে আনি সেই ফুল!
এক পার্টির কাছে ভালো তো
অন্য পার্টির চক্ষুশূল!

মাসি বুঝে গেছে কতদূর গেছে দ্বন্দ্ব!
হায় ফুল!
তোর গায়েও লেগে গেছে ভোটের গন্ধ?

ব্যানারে, ফ্লেক্সে এখন তো ফুল আর ফুল!
ওরা মনে করে
আমরা হাবাগোবা হাঁদাভোঁদা বিলকুল।

মাসি! তুমি ভোট দেবেনা?

কী যে বলো!
গতবারের মতো করি কি আর ভুল?
বুথে গিয়ে দেখি দাঁড়িয়ে মস্তানের দল—
ভাগ্ হিয়াসে!হাতে মহাশূল!
নারী সম্মান! দূর অস্ত…
ফুল আর কোথায় তখন
আমার চোখদুটোই তো সর্ষে ফুল!