বুড়িয়া শৌচাগার বানাতে চায়। পুলিশ বানাতে দেবে না।ঐ জমি কিনতে চায় জমি মাফিয়ারা। জন্মভিটে বিপন্ন বুড়িয়ার।পুলিশ প্রোমোটার পেশীশক্তি একাকার।

পুলিশ ও শৌচাগার
তমাল সাহা

বুড়িয়াকে চেনেন?
সোজাসাপটা আগেই জানাই,
বুড়িয়া একটি মেয়ে—
বয়স পঁচিশ, শিক্ষিতা।
দিদি শবনম,মা অনিতা।
রাত নেমে আসার অপেক্ষা করে,
যতক্ষণ না হয় অন্ধকার।
কারণ নগ্ন হয়ে পৌর নর্দমায় শৌচকর্ম করবে তার পরিবার।

শৌচাগার বানাও প্রকল্প,স্বচ্ছ অভিযান—
বুড়িয়ারা চাইলেও রাষ্ট্র রুখে দিয়েছে
বুড়িয়াদের শৌচাগার নির্মাণ।

পৌরপ্রধান বলে, শৌচাগার বানাও।
পুলিশ বলে, রোখো!নির্মাণ হঠাও।
কেন এতো কড়া পুলিশি নিদান?
সেই কবে থেকে জমির বিবাদ—
তাতে ঢুকে গেছে নেতা ও মস্তান।
পাঁচ লাখ টাকার বখরা ভাগাভাগি—
হঠাও বুড়িয়াকে,দিচ্ছে আইনি বাধা।
অসহ্য এই মেয়ে!যুবতী নয় তো, মাগি!

নেতা প্রমোটার মস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে পুলিশ প্রশাসন—জনৈক লস্কর।
নিরাপত্তা দেবে রাষ্ট্রীয় পুলিশ!
সে যে তস্করের চেয়েও বড় তস্কর।

ওয়ার্ড পৌর পার্ষদ এক মহিলা নেত্রী।
তিনি বলেন, কি করে দাঁড়াই বুড়িয়ার পক্ষে,আমার তো হাত-পা বাঁধা।
প্রতিবাদ করবো, পিস্তল দেখেছেন?
আমি তো তাহলে মরণযাত্রী!

প্রমোটার, প্রধান,পেশী পুলিশ, পায়খানা,পয়সা—
দেখুন প-য়ে প-য়ে কত মিল।
কার ইয়া বুকের পাটা, বিয়াল্লিশ ইঞ্চি!
মৌচাকে ছুড়বে ঢিল?

এতো নারী অধিকার কমিশন, মহিলা সংগঠন,বিশ্ব নারী দিবস—
মহিলা মুখ্যমন্ত্রী ভারতের প্রদেশে প্রদেশে।
অন্ধকার নেমে আসে—
বুড়িয়া এদিক ওদিক তাকায়,
নগ্ন হয় নর্দমার পাশে।
ভয় হয় যদি সূর্য উঠে যায় পুবের আকাশে।

এই দেশ এই কাল—
বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও,কন‍্যাশ্রী,রূপশ্রী কত প্রকল্প—ব‍্যান্ড বাজায়!
নারীমর্যাদা!
উলঙ্গ বুড়িয়ার শৌচকার্য নর্দমায়।
দেশতো স্বাধীন।
জয় হিন্দ!বন্দে মাতরম!
লাল কেল্লার মাথায়
জাতীয় পতাকা উড্ডীন…