সেই কিংবদন্তি নাট্য-চলচ্চিত্র শিল্পী অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আজ জন্মদিন
অজিত থেকে হয়ে উঠেছো অজিতেশ—
তুমি অনিঃশেষ।
অজিত আর অজিতেশের পার্থক্য কি, আমি কি জানি?
তোমাকে সবাই ভালোবাসে নির্বিশেষ।
নাট্যকার অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়—
সেটা ১৯৬৫ সালের কথা। ‘অভিযাত্রী’ বার্ষিক উৎসবে
তাঁকে এনেছিল কাঁচরাপাড়ায়, হাইটমার্স রঙ্গমঞ্চে।
আজ এই জনপদ তাঁকে শ্রদ্ধা জানায়।
নাট্যকারের সন্ধানে
তমাল সাহা
কে না জানে
রজনী চাটুজ্যে ইজ রজনী চাটুজ্যে
মরা হাতি সোয়া লাখ।
এসব জানতে জানতেই
সেতুবন্ধন করে তুমি উঠে পড়েছ
সওদাগরের নৌকোয় পাপপুণ্য বিচারে।
তিন পয়সার পালা-র মহিমবাবু
তোমাকে চিনি উনিশশো পঁয়ষট্টি সাল থেকে।
চরিত্রের খোঁজ করতে গিয়ে
ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছি আমরা
নান্দীকারের গ্রিনরুমে।
আর তুমি নাট্যকারের সন্ধানে ছটি চরিত্র নিয়ে আমাদের সঙ্গে হাত মেলালে
চলে এলে হাইন্ডমার্স রঙ্গমঞ্চে।
পরিচয় ও মেলামেশায় তুমি এক অনন্য দিলদার!
‘নাটক ভালোবাসো!তোমরা তো আমার।’
কে না তোমাকে চেনে
একদিন তোমার সেই কী ভয়ঙ্কর কাপালিক হাঁক–
কুণ্ডলে!
আর হাটেবাজারে সেই লছমনলালের ডায়ালগ–
সব শালাই সতীরে! বলে অট্টহাসিতে লাগিয়ে দিয়েছিলে তাক
প্রেক্ষাগৃহের দর্শক তো হতবাক!
ধর্মঘট, সাঁওতাল বিদ্রোহের পক্ষে তুমি
কখনো যাত্রায় সাজো রাবণ।
তোমার অভিনয় সহজ স্বাভাবিক সাধারণ
হয়ে ওঠে অসাধারণ।
অত্যাচারী জমিদার কোনোদিনই ছিলে না তুমি
এমন নিপুণ অত্যাচার শিখলে কোথায়?
দর্শক ক্রোধে প্রতিশোধ নিতে চায়
কী বাস্তব অভিনয় দেখালে গণদেবতায়!
কি করে ভুলি তোমার ব্যতিক্রমী উচ্চারণ!
কত চরিত্রের বিস্তৃত আয়োজন।
হে সময়, উত্তাল সময়ের অভিনেতা
সেই অরণ্যে অভিনয়ের শেষে
জনারণ্যে মিশে গেলে তুমি।
এখনো তোমার সশব্দ বিচরণে সংলাপে
কাঁপে মঞ্চভূমি!