২৭ মার্চ ছিল বিশ্বনাট‍্য দিবস।২৯ মার্চ ছিল কিংবদন্তি নাট‍্যকার উৎপল দত্ত-র জন্মদিন।এখন নাটকে সার্বজনীন সমস্যা, রাষ্ট্রীয়
নিপীড়ন-শোষণ-সন্ত্রাস প্রদর্শন দুর্লভ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দেশ জুড়ে রাজনীতি চলছে,অথচ নাটক হচ্ছে অরাজনৈতিক,হায়! স্মরণ ও শ্রদ্ধা

নাটকটার নাম কী
তমাল সাহা

নাটকটার নাম কী হবে
তা প্রথিতযশা নাট্যকারও বলতে পারবে না।
নাটকটার নাম হতে পারে ধর্ষণ সিরিজ।
কে, কবে, কখন ধর্ষিতা হবে তা না জানলেও
কোথায় কান্ডটি ঘটবে তা বলে দেওয়া যায়।
তবে বলাৎকার কত সংখ্যকে পৌঁছলে ধর্ষণ পর্ব থামবে তা বলা যাবে না। আর কত সংখ্যক ধর্ষণ সম্পন্ন না হলে নাটকটির নাম ‘ধর্ষণ উপত্যকা’দেওয়া যাবে না তাও বলা যাবে না।

আবার এই নাটকটির নাম হতে পারে উদ্বোধন বা শিলান্যাস।
আঠাশ বা আশিটি প্রকল্পের উদ্বোধন হতে পারে,পঞ্চাশ থেকে একশটি প্রকল্পের শিলান্যাসও হতে পারে। তার মধ্যে অবশ্যই তুলসি থান,চন্ডীমন্ডপ,হাটচালা, শৌচাগার উদ্বোধন থাকবে।

নাটকটির নাম হতে পারে–
পুলিশি ধোলাই’, ‘খিস্তি খেউড়’ অথবা ‘চড়’
বা ‘ফাইল মাথায় পুলিশ এবং টেবিলের তলা’।এই নামটি দীর্ঘ হয়ে গেলে রাখা যেতে পারে ‘পুলিশ ফাইল’।
এই নাটকের হিরো বা হিরোইন অবশ্যই হবেন শাসক নেতা-নেত্রী বা তাদের আত্মীয়স্বজন। এই কারণে নাটকটির নাম হতে পারে ‘স্বজনপোষণ’।

এই নাটকের নাম হতে পারে ‘প্রতিশ্রুতি পর্ব।’
পাঁচ কোটি নিরানব্বই লক্ষ মানুষকে
দুটাকা কিলো দরে চাল দিলেও
চা বাগানে- কুলি লাইনে না খেতে পেয়ে মানুষ মরছে কেন তা বলা যাবে না। তাই–
নাটকটির নাম হতে পারে ‘হারামি খিদে’।

তোলাবাজি, ধান্দাবাজি অনুসরণ করে
নাটকটির নাম হতে পারে ‘শিল্পবাজি’।
কোটি-কোটি টাকা বিনিয়োগের গল্প বলেও
তা হয়ে গেল হাওয়া। সুতরাং নাটকটির
নাম হতে পারে “হাওয়াই বাজি”।

ধুর শালো!
নাট্যকারই যখন এতো চেষ্টা করেও নাটকের নাম দিতে পারছে না,
তখন শালা! কবির কি দায় পড়েছে—
নাটকের নাম খোঁজার?

যদি থাকতেন এই সংকটকালে
উৎপল দত্ত
মুহূর্তে হয়ে যেতো সমাধান
নামকরণের এই সমস‍্যার!