করোনায় মৃত্যুসংক্রান্ত বিষয়ে এবার তদন্তে মাঠে নামলেন মৃত্যু চেতনার কবি জীবনানন্দ দাশ স্বয়ং।
ধাপার মাঠে জীবনানন্দ
তমাল সাহা
কবিদের চোখ মুখ কান নাক থাকে,
সাধারণ মানুষের চেয়ে আলাদা।
এই অঙ্গগুলি সময় বিশেষে কাজ করে,
সবসময় কাজ করে না।
কেন করে না?
কারণ তারা অসাধারণ।
তারা অবশ্য সাধারণ মানুষের
জীবন ও ভালোবাসার কথা নিয়ে
ধ্রূপদী পংক্তি লেখে।
কবিরা তো মানুষকে ভালোবাসে,
তারা তো তাদের
জীবন ও ভালোবাসা নিয়েই লিখবে।
তাই তারা মৃত্যুর কথা নিয়ে লেখে না।
রাষ্ট্র মৃত্যু সংখ্যার হিসেব ভুল দ্যায়
বা মৃত্যুর কারণে ধোঁয়াশা থেকে যায়—
তারা তার প্রতিবাদ করে না।
কারণ তারা জীবন ও ভালোবাসার শিল্পী।
তারা মৃত্যুর কারবার নিয়ে কোনো কথা
বলে না।
মৃত্যু একটা বিষয় হলো!
এটা একটা নাস্ত্যর্থক বিষয়।
এই কবিরাই
কঠিন কঠোর লকডাউন পালন করে।
জীবনানন্দের মতো
মৃত্যু চেতনার ঘোর নিয়ে
পথে প্রান্তরে ঘোরে না,
ঘোরে না হিজল জারুলের বনে
হেমন্তের ঝরা পাতা বা শিশিরের ভিতর
নক্ষত্র পতনের দৃশ্য দেখে না।
করোনার সংক্রমণে নিহত
মৃণালিনী ঘোষের শব জ্বলিতেছে গোপনে
রাত্রির নীরব অন্ধকারে
তাহারা তা দেখিতে পায় না।
জীবনানন্দ দাঁড়িয়ে দূরে
মৃত্যুর শংসাপত্র হাতে,দেখে বারবার
লেখা আছে কারণ মরিবার —
মৃত্যু মৃণালিনীর কার্ডিয়াক ফেইলইওরে!
জীবনানন্দ ধাপার মাঠে বসিয়া পড়ে,
কপালে রাখে হাত।
হায়! এতো সকলেই জানে
সব মৃতেরই তো হৃদয়ের কথা নীরব হয়ে যায়
মরণ বেলায়,
অমোঘ মৃত্যু নেমে আসে দুচোখের পাতায়!
এই পৃথিবীতে বাড়িতেছে রাষ্ট্রের পাপ।
অপমানিত মৃত্যু শুয়ে আছে মিথ্যার বারান্দায়।
ওই দূরে করোনা হেঁটে গেল মুক্ত হাওয়ায়…









