অবতক খবর,১৮ মার্চ শান্তনু পান, পশ্চিম মেদিনীপুর:- ইতিমধ্যেই লোকসভা ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। রাজনৈতিকভাবে প্রচারেও নেমে গেছে দুই দল। কোনদিন দেব, তো আবার কোনদিন হিরন! জনসংযোগ থেকে রোড শো, সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলা থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার। কোনভাবেই কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয় ঘাটালে।

২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছে দু-বারের ঘাটালের সাংসদ তথা অভিনেতা দীপক অধিকারী ওরফে দেব। তার প্রধান প্রতিপক্ষ ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী খড়গপুরের কাউন্সিলর ও বিধায়ক তথা অভিনেতা হিরনময় চট্টোপাধ্যায় ওরফে হিরন! নির্বাচন ঘোষণার অনেক আগেই হিরনের নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি, নাম ঘোষনার পর থেকেই মাঠে নেমে পড়েছে হিরন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সঙ্গে নিয়ে ঘাটালে রোড শোও করেন। তারপর দেবের নাম ঘোষণা করে শাসক দল। দেবও রোড শো করে ঘাটালে।

তবে এবার ঘাটালবাসী কি চাইছে, কোন অভিনেতাকে বেছে নেবে ঘাটালবাসী! ঘাটালের বাসিন্দা জয়ন্ত মন্ডল জানান, উনিতো ব্যস্ত মানুষ! সাধারণ মানুষের কাজ করতেই পাচ্ছেন না। তাই ঘাটালে এবার পরিবর্তন দরকার! ঘাটালের সাধারণ মানুষের হয়ে যে কাজ করবে, সেই রকম সাংসদ চাইছে ঘাটালবাসী। পাশাপাশি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ এর কথাও জানান তিনি। পাশাপশি বেকার যুবক-যুবতীদের হাতে কাজ এনে দেবে এমন সরকার হওয়া দরকার বলেও জানান তিনি। ঘাটালের আরেক বাসিন্দা অলক পাল বলেন, মানুষ দেব কে পছন্দ করে, হিরনে এসে বিরাট প্রভাব ফেলতে পারবে না। উন্নয়ন বলতে বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদ থেকে কিছুটা কাজ হয়েছে। এক কথায় বোঝা যাচ্ছে দেব কে পছন্দ করলেও তার কাজ হয়তো ঘাটালের মানুষ পায়নি।

তবে ঘাটালের সিপিএম নেতৃত্ব উত্তম মন্ডল জানান, বামফ্রন্টের ঘাটালের সাংসদ এর থেকে শিখতে হবে কিভাবে এলাকার কাজ আদায় করেতে হয়। সাধারণ মানুষ এবার তাদের কাজের মানুষ খুঁজে নেবে, দেব কে পরাজিত করে সঠিক মানুষকে নির্বাচিত করবে। কিছুই উন্নয়ন হয়নি, এমনই অভিযোগ বাম নেতৃত্বর। অপরদিকে কংগ্রেস নেতৃত্ব জগন্নাথ গোস্বামী বলেন, কোথায় কাজ হয়েছে, দেখতেই পাচ্ছি না। ঘাটালের মূল সমস্যা তো বন্যা! তার তো কোন এখনো সূরাহ হলো না। তবে ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট তীব্র কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে শাসক দলের প্রার্থী দীপক অধিকারীর দিকে। তিনি বলেন মুখ্যমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে শুধু “খিঁচ মেরি ফটো” করলেই ঘাটালের মাস্টার প্ল্যান রূপায়িত হয় না। কোন উন্নয়নই হয়নি ঘাটালে, ঘাটালের প্রধান ইস্যু বন্যা থেকে মানুষকে রক্ষা করা। মাস্টার প্ল্যান রূপায়ন করতে গেলে তার বাস্তব প্ল্যানিং থাকা উচিত।

সেই সঙ্গে শীতলকপাট আরও বলেন, ঘাটাল লোকসভা এলাকায় দাসপুরের বেশিরভাগ মানুষ স্বর্ণকার। তাই এখানে কুটির শিল্প গড়ে তোলা যেতে পারে। আগামী দিনে বিজেপি সরকার হলে আমরা তা করে দেখাবো। সেই সঙ্গে কৃষি প্রধান এলাকা হওয়ায় চাষীদের জন্য কোলেস্টোরেজ এর ব্যবস্থা করার কোথাও বলেন। সেই সঙ্গে ঘাটালে রেলপথ গড়ে তোলা হবে। ঘটালে রেলপথ করার জন্য কেন্দ্রকে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিদর্শন করে তা বাস্তবে রূপায়ণের কথা ভেবেছেন বলেও জানান শীতল কপাট। তবে এসবকে একেবারেই পাত্তা দিতে নারাজ ঘাটালের তৃণমূলের যুব সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী।

তিনি বলেন সারাবছর ধরে যেইভাবে আমরা মানুষের পাশে থেকে এসেছি, মানবিক সরকারের উন্নয়ন প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি, তাতে করে আমরা নিশ্চিত সাধারণ মানুষ উন্নয়নের নিরিখেই ভোট দেবেন। তিনি আরও বলেন সাংসদ তহবিল থেকে বেশ কিছু স্কুলে পানীয় জলের ব্যবস্থা ও রাস্তায় লাইট লাগানো হয়েছে। ঘাটালের যুবনেতা বলেন, গণতন্ত্রের মানুষ শেষ কথা বলে, আমরা সাধারণ মানুষের উপর বিশ্বাস রাখি, তাই ঘাটালে বিপুল ভোটে মানুষ আমাদের জয়লাভ করাবে। কে দ্বিতীয় – তৃতীয় হবে সেটা বিরোধীরা ঠিক করুক!