অবতক খবর,৪ এপ্রিল: লোকসভা ভোটের প্রায় দু মাস আগে বৃহস্পতিবার দমদম লোকসভা কেন্দ্রের অধীন দক্ষিণ দমদম পৌর এলাকার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে অকাল ভোট হল। গত মঙ্গলবার বাড়ি বাড়ি ব্যলট পেপার বিলি করা হয়। এখন চলছে এক অন্য রকম ভোটের আয়োজন।
তাতে নেই এলাহি প্রচার, নেই বিরোধী দলের কটাক্ষ, নেই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে পুলিশি নজরদারি। তবে এই ভোট রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক বড় ব্যতিক্রমী উদাহরণ হয়ে উঠতে চলেছে। কারণ রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা ভোট পর্ব মিটলেই ভুলে যান ভোটারদের। সাম্প্রতিক ইতিহাসে দলবদলের ঘটনাও ঘটছে অহরহ। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে দক্ষিণ দমদম ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী হিসেবে পৌর নির্বাচনে ৯৬ শতাংশ এলাকার মানুষের ভোটে জয়ী হওয়া জনপ্রতিনিধি দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়র এক সিদ্ধান্তের জন্যই এই ভোটের আয়োজন বলে জানা গিয়েছে।
ভোটে অংশ গ্রহণ করবে ওয়ার্ডের প্রায় পাঁচ হাজার ভোটার। ইতিমধ্যেই ব্যালট পেপার বিলি করার পর্ব চলছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে। এরপরে ওয়ার্ডের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রাখা ব্যালট বক্সে তাঁদের মতামত প্রদান করতে পারবেন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।
প্রসঙ্গত, কাউন্সিলর দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে দমদমের রবীন্দ্র ভবনে দলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয় রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে। কিন্তু তিনি মঞ্চে দাঁড়িয়ে জানিয়ে দেন, এলাকাবাসীর মতামত ছাড়া তিনি দলে যোগদান করতে পারবেন না। সেই মতামত গ্রহণের জন্যই এই ভোটের আয়োজন পনের নম্বর ওয়ার্ডে। যে ব্যালট পেপারে ভোট দেবেন এলাকাবাসীরা তাতে কাউন্সিলরের কী করা উচিৎ, বা কেন তা করা উচিত যুক্তি সহকারে তুলে ধরতে পারবেন ওই এলাকার ভোটাররা। তিনি কি আদেও কোন রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন, নাকি নির্দল প্রার্থী হিসেবেই থেকে যাবেন এ প্রশ্নেরও উত্তর জানাতে পারবেন সকলে। এরপরে ওই ব্যালট পেপার ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে রাখা বক্সে ফেলার জন্য এলাকাবাসীকে অনুরোধ করে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। আগামী ১০ এপ্রিল ওই ব্যালট বাক্স খুলে এলাকাবাসীদের মতামত প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হবে বলেই জানা গিয়েছে। আর তারপরেই ভবিষ্যতে কি রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেবেন তিনি সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন নির্দলে জয়ী এই ব্যতিক্রমী জনপ্রতিনিধি দেবাশীষ বন্দোপাধ্যায়। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে ভোট পরবর্তী পর্যায়ে, দলবদলের সিদ্ধান্তে এলাকার ভোটারদের এতটা গুরুত্ব দেওয়া নতুন নজির সৃষ্টি করল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।